জয়া-বিজয়া : রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা একজন প্রথিতযশা রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী। তিনি তার ঘরানার সংগীতের একজন বহুমুখী প্রতিভা হিসাবে বাংলাদেশ এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গে ব্যাপকভাবে সমাদৃত। তিনি তার গুণানুরাগীদের কাছে শুধু ‘বন্যা’ নামেও পরিচিত। কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শিষ্যদের মধ্যে তাকেই সবচেয়ে জনপ্রিয় গণ্য করা হয়। সাহিত্য ও সংস্কৃতি ক্ষেত্রে কাজের অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে তিনি বাংলাদেশের জাতীয় এবং সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার ‘স্বাধীনতা পুরস্কার’ অর্জন করেছেন। রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যার জন্ম বাংলাদেশের রংপুরে। তার বাবা মাজহার উদ্দিন খান ও মাতা ইসমাত আরা খান। ইসমাত আরা খান এক সময় কাকলী উচ্চ বিদ্যালয়ের উপাধ্যক্ষ ছিলেন। তিনি প্রাথমিক অবস্থায় বাংলাদেশের ছায়ানট ও পরে ভারতের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন।তিনি সেখানে শিক্ষক হিসেবে পান শান্তিদেব ঘোষ, কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, নীলিমা সেন, এবং অশেষ চন্দ্র বন্দ্যোপাধায়ের মতো শিক্ষকদের। তিনি বাংলাদেশে ফিরে অর্থনীতি বিষয়ে পড়াশোনা করেন এবং বুলবুল ললিতকলা একাডেমীতে ভর্তি হন। কিন্তু ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়ে গেলে তিনি তার অধ্যয়ন সংক্ষিপ্ত করতে বাধ্য হন। তিনি রবীন্দ্রসংগীত ছাড়াও ধ্রæপদী, টপ্পা ও কীর্তন গানের ওপরও শিক্ষা লাভ করেছেন। তার গানের অ্যালবাম পশ্চিম বাংলা ও বাংলাদেশ থেকে প্রকাশিত হয়েছে। তিনি সুরের ধারা নামের একটি সংগীত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালু করেন। ২০০২ সালে তিনি আনন্দ সংগীত পুরস্কার লাভ করেন। রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা হারমোনিয়াম ও এস্রাজ বাজাতে পারেন। কর্মজীবনে তিনি বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা ও সংগীত বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও নৃত্যকলা বিভাগের চেয়ারপার্সন হিসেবে কর্মরত। ১৯৯২ সালে সংগীত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ‘সুরের ধারা’ চালু করেন তিনি। লেখালেখির সাথেও বন্যার যোগসূত্র আছে। রবীন্দ্রনাথ ও রবীন্দ্রসংগীত নিয়ে তার কয়েকটি বই আছে।