প্রকাশিত: Mon, Dec 19, 2022 4:21 PM
আপডেট: Sat, May 10, 2025 12:44 AM

চীনের আগ্রাসী ভূমিকা নিয়ে সংসদে আলোচনা করতে রাজি নয় ভারত সরকার

মিহিমা আফরোজ: চীনের আগ্রাসী ভূমিকা নিয়ে সংসদে কোনো আলোচনায় ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার আগ্রহী নয়। চীনের প্রবল দাবি থাকা সত্ত্বেও ভারত সরকার তার সিদ্ধান্তে অটল। সোমবার আরও একবার বিরোধীরা সংসদের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভা থেকে ওয়াকআউট করলেন।  টাইমস অব ইন্ডিয়া

তাইওয়াংয়ে চীনা আগ্রাসন নিয়ে সংসদের উভয় কক্ষেই আলোচনার দাবি জানায় কংগ্রেসসহ বিভিন্ন বিরোধী দল। সোমবার রাজ্যসভায় এ বিষয়ে বিরোধীদের মোট নয়টি নোটিশ জমা পড়ে। কিন্তু চেয়ারম্যান জগদীপ ধনখড় ‘নিয়মমাফিক’ নয় বলে সব নোটিশ অগ্রাহ্য করেন। বিরোধী নেতা মল্লিকার্জুন খাড়গে চেয়ারম্যানের উদ্দেশ্যে বলেন, চীন আমাদের ভূখণ্ডে জাঁকিয়ে বসছে। এ নিয়ে আলোচনা না করলে কী নিয়ে কথা বলব আমরা? চেয়ারম্যান মুলতুবি প্রস্তাব অগ্রাহ্য করলে বিরোধীরা সভাকক্ষ থেকে ওয়াকআউট করেন। লোকসভাতেও অগ্রাহ্য হয় বিরোধীদের দাবি। 

২০২০ সালে পূর্ব লাদাখের গলওয়ানে ভারত ও চীনের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পরও বিরোধীদের দাবি মেনে সংসদে আলোচনা হয়নি। এমনকি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্যদেরও অকুস্থলে যাওয়ার দাবি সরকার মেনে নেয়নি। তাইওয়াং সংঘর্ষ গালওয়ানকাণ্ডেরই পুনরাবৃত্তি হয়েছে বলে বিবেচনা করা হচ্ছে।

সংসদে আলোচনার দাবি মানতে সরকার রাজি হবে না জেনেও কংগ্রেস তার প্রচার জোরালো করে তুলেছে। দলের মুখপাত্র জয়রাম রমেশ বলেছেন, সরকার সবকিছু লুকিয়ে রাখতে চায়। অথচ অতীতে সব সময় সরকার অকুস্থলে সাংবাদিক ও সংসদ সদস্যদের যেতে দিয়েছে। ১৯৬৫ ও ১৯৭১ তো অবশ্যই, ১৯৯৯ সালেও কার্গিল যুদ্ধের পর সরকার সংসদ সদস্যদের অকুস্থলে নিয়ে গেছে। ডোকলাম–কাণ্ড নিয়েও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী কমিটিতে আলোচনা হয়েছিল। এখন সরকার আলোচনা এড়ানোর মধ্য দিয়ে নিশ্চিতভাবেই কোনো তথ্য ও সত্য আড়াল করতে চাইছে।

কংগ্রেস সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে প্রশ্ন করেন, চীনা প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আপনি বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়েছিলেন। সে জন্যই কি চীন আগ্রাসী? তাহলে কি ধরে নিতে হবে, ২০১৩ সালে আপনার বলা কথা “সমস্যা সীমান্তে নয়, সমস্যা দিল্লিতে” সত্যি?’

বিজেপি বিরোধিতার ক্ষেত্রে আম আদমি পার্টি কখনো কংগ্রেসের সঙ্গ দেয়নি। কোনো বিষয়ে প্রকাশ্যে সহমতও প্রকাশ করেনি। অরুণাচল প্রদেশের তাইওয়াং সংঘর্ষের পর আম আদমি পার্টিও সরকারের সমালোচনায় মুখর। সরকারের বিরুদ্ধে তাদের অভিযোগ, একের পর এক চীনা আগ্রাসন ঘটছে অথচ সরকার তাদের পুরস্কৃত করছে। গত রোববার এক বৈঠকে সেই পুরস্কারের ব্যাখ্যায় দলনেতা অরবিন্দ কেজরিওয়াল বলেন, চীন যত আগ্রাসী হচ্ছে, ভারতের সঙ্গে তাদের বাণিজ্য বৃদ্ধি তত ঘটছে। ২০২০-২১ সালে চীন থেকে ভারত সাড়ে ৬ হাজার কোটি ডলারের পণ্য আমদানি করেছিল, এক বছর পর তা বেড়ে হয়েছে সাড়ে ৯ হাজার কোটি ডলার। সম্পাদনা: খালিদ আহমেদ