প্রকাশিত: Thu, Aug 1, 2024 11:01 AM
আপডেট: Tue, Sep 17, 2024 10:10 PM

[১]তেহরানে বিমান হামলায় হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়া নিহত, প্রতিশোধ নেওয়ার অঙ্গীকার ইরানের

সাজ্জাদুল ইসলাম: [২] হামাস বলেছে, তেহরানে নিজ বাসভবনে বিশ্বাসঘাতক ইহুদীবাদীদের হামলায় তাদের রাজনৈতিক ব্যুরোর প্রধান ইসমাইল হানিয়া বুধবার ভোরে নিহত হয়েছেন। সূত্র : আলজাজিরা, বিবিসি

[৩] ইরানের স্থানীয় সময় রাত দু'টার দিকে বিমান হামলা চালিয়ে তাকে হত্যা করা হয় বলে জানা গেছে। ইরানের প্রেসিডেন্টের শপথ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে মঙ্গলবার তেহরান যান ইসমাইল হানিয়া।  

[৪] এই হামলার জন্য ইসরায়েলকে দায়ী করেছে হামাস, যদিও ইসরায়েলের তরফ থেকে এ বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি।

[৫] ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান এই কাপুরুষোচিত হামলার নিন্দা করে ইসরায়েলকে সমুচিত জবাব দেয়ার সংকল্প ঘোষণা করেছেন। 

[৬] ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আলী খামেনি বলেছেন, ইসমাইল হানিয়ার হত্যার প্রতিশোধ গ্রহণ তেহরানের দায়িত্ব। ইসরায়েল তাৎক্ষণিকভাবে হানিয়ার হত্যার ব্যাপারে কোন মন্তব্য করেনি। 

[৭] ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনী(আরজিসি) এক বিবৃতিতে হানিয়া হত্যাকান্ডের কঠোর ও বেদনাদায়ক প্রতিশোধ গ্রহণের শপথ ঘোষনা করেছে।

[৮] লেবাননে নিযুক্ত ্ইরানি রাষ্ট্রদূত আমানি বৈরুতে সাংবাদিকদের বলেছেন, তারা ইসমাইল হানিয়ার হত্যার ঘটনা খতিয়ে দেখছেন। কয়েক ঘন্টা ্আগে তিনি নিহত হন। আমাদেরকে অনেক কিছু মূল্যায়ন করতে হচ্ছে। আমরা এখনো কোন চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে আসতে পারিনি।

[৯] তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোগান হানিয়ার হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, আমার ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও ভাই হানিয়ার কাপুরুষোচিত ও বিশ্বাসঘাতকতাপূর্ণ এই হত্যাকাণ্ড ফিলিস্তিনিদের মনোবলকে ভাঙতে পারবে না। 

[১০] তিনি এক্সএ লেখা এক পোস্টে বলেন, ফিলিস্তিনিদের স্বাধীনতার সংগ্রামকে ব্যাহত করার হীন উদ্দেশ্যে হানিয়াকে হত্যা করা হয়েছে। ইহুদী বর্বরতা কোনভাবেই সফল হতে পারবে না। 

[১১] মালয়েশিয়া টার্গেট করে হত্যাসহ সব ধরণের  সহিংস হত্যাকান্ডের নিন্দা করে এই ধরণের কাজের নিন্দা জানাতে সব শান্তি প্রিয় দেশের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। দেশটির পররাষ্ট্রমন্থ্রণালয় এক বিবৃতিতে এই আহ্বান জানায়। 

[১২] ইসমাইল হানিয়ার ছেলে আব্দুল সালাম হানিয়া বলেছেন, তার পিতার হত্যায় ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনিদের প্রতিরোধ সংগ্রাম বন্ধ হবে না। স্বাধীনতা অর্জিত না হওয়া পর্যন্তু এ সংগ্রাম চলবে।

[১৩] তিনি বলেন, দেশপ্রেমের দীর্ঘযাত্রায় আমার বাবাকে চার বার হত্যার চেষ্টাকরা হয়েছে। এইবার আল্লাহ তার  শাহাদত কবুল করেছেন। 

[১৪] ইসমাইল আবদেল সালাম হানিয়ে, যার ডাক নাম আবু আল-আবদ, জন্মেছিলেন ফিলিস্তিনি শরণার্থী শিবিরে। তিনি হামাস আন্দোলনের রাজনৈতিক ব্যুরোর প্রধান এবং ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষ সরকারের দশম প্রধানমন্ত্রী ছিলেন।

[১৫] ইসরায়েল ১৯৮৯ সালে তাকে তিন বছর বন্দী করে রাখে। এরপর তাকে মারজ আল-জুহুর নামের ইসরায়েল এবং লেবাননের মধ্যকার একটি নো-ম্যানস-ল্যান্ডে নির্বাসিত করা হয়। সেখানে তিনি ১৯৯২ সালে বেশ কয়েকজন হামাস নেতার সাথে অনিশ্চিত পরিস্থিতিতে একটি পুরো বছর কাটিয়েছিলেন।

[১৬] নির্বাসনে থাকার পর তিনি গাজায় ফিরে আসেন এবং ১৯৯৭ সালে হামাস আন্দোলনের আধ্যাত্মিক নেতা শেখ আহমেদ ইয়াসিনের অফিসের প্রধান হিসেবে নিযুক্ত হন, যা তার অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করে।

[১৭] ২০০৬ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি হামাস তাকে ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষের প্রধানমন্ত্রী মনোনীত করে এবং একই মাসের ২০ তারিখ তাকে নিযুক্ত করা হয়।

[১৮] এক বছর পর ফিলিস্তিনের জাতীয় কর্তৃপক্ষের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস হানিয়াকে তার পদ থেকে বরখাস্ত করেন। কারণ, ইজ আল-দিন আল-কাসাম ব্রিগেডস গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণ নেয়ার এক সপ্তাহের মধ্যে আব্বাসের ফাতাহ আন্দোলনের প্রতিনিধিদের বহিষ্কার করে। সেই সহিংসতায় অনেকে মারা যান।

[১৯] ইসমাইল হানিয়া এর পর বেশ কয়েকবার ফাতাহ আন্দোলনের সাথে সমঝোতার আহ্বান জানিয়েছিলেন।

[২০] ১৭ সালের ৬ মে থেকে তিনি হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। সম্পাদনা: ইকবাল খান