প্রকাশিত: Sat, Jan 21, 2023 5:41 PM
আপডেট: Mon, Jun 23, 2025 6:58 PM

তেলের পরিবহন খরচ কমবে, বাড়বে জ¦ালানি নিরাপত্তা

মহেশখালীতে ডাবল পাইপলাইনের সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং জুনে চালু হবে

সালেহ্ বিপ্লব: আমদানি করা জ্বালানি তেল জাহাজ থেকে দ্রুত ও কম খরচে খালাস করার জন্য গভীর সমুদ্রে ডাবল পাইপলাইনের সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং (এসপিএম) নির্মাণ করছে সরকার। সাড়ে ৬ হাজার কোটি টাকার এ প্রকল্পের কাজ শেষ হবে আগামী জুনে। এসপিএম চালু হলে তেল খালাসের সময় ও খরচ অবিশ^াস্যরকম কমে আসবে। 

সরকারের জ¦ালানি বিভাগ জানায়, ১১ দিনে মাদার ভেসেল থেকে যে পরিমাণ জ্বালানি তেল খালাস করা যায়, এসপিএম চালু হলে সেই পরিমাণ তেল খালাস করা যাবে ২ দিনে। পাইপলাইনে তেল পরিবহন হবে, লাইটার জাহাজের প্রয়োজন হবে না; পরিবহন খরচ বছরে প্রায় ৮০০ কোটি টাকা কমবে। কমবে সিস্টেম লস। 

এপিএম প্রকল্পের মূল লক্ষ্য জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। আমদানীকৃত ক্রুড অয়েল ও ফিনিশড প্রডাক্ট স্বল্প সময়, স্বল্প খরচ এবং নিরাপদে খালাস করার জন্যই প্রকল্পটি হাতে নেওয়া হয়। চীন সরকারের সহায়তায় বাংলাদেশ সরকার প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। বাস্তবায়নকারী সংস্থা বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) অধীনস্থ ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেড। সাড়ে ৬ হাজার কোটি টাকার এ প্রকল্পে চীনের এক্সিম ব্যাংক ঋণ দিচ্ছে সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা।

সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং বয়াটি মহেশখালী দ্বীপের পশ্চিম পাশে স্থাপন করা হচ্ছে। মাদার ভেসেল থেকে থেকে ক্রুড অয়েল ও ফিনিশড প্রডাক্ট সরাসরি মুরিং পয়েন্টে আনা হবে। সেখান থেকে পাম্প করে পাইপলাইনের মাধ্যমে প্রথমে তেল নেওয়া হবে মহেশখালীর কালারমারছড়ার স্টোরেজ ট্যাংকে। সেখান থেকে আবার পাম্প করে পাইপলাইনে পাঠানো হবে চট্টগ্রামের ইস্টার্ন রিফাইনারিতে। 

এ ব্যাপারে বিদ্যুৎ ও জ¦ালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, বাংলাদেশের জ্বালানি খাতে যুগান্তকারী মেগা প্রকল্প এসপিএম বা সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিংয়ের নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ। এ বছরের মাঝামাঝি থেকে বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু হবে। 

তিনি বলেন, প্রকল্পের আওতায় ২২০ কিলোমিটার পাইপলাইনের পাশাপাশি তৈরি করা হয়েছে ৬টি বিশালাকার স্টোরেজ ট্যাঙ্ক, যা বাংলাদেশের তেল মজুদ সক্ষমতাকে নিয়ে যাবে নতুন উচ্চতায়।

৯০ একর জায়গায় নির্মিত ট্যাংকগুলোর মধ্যে তিনটি পরিশোধিত তেলের জন্য ও তিনটি অপরিশোধিত তেলের জন্য। প্রতিটি পরিশোধিত স্টোরেজ ট্যাংকারের ধারণক্ষমতা ৫০ হাজার ঘনমিটার। অপরিশোধিত স্টোরেজ ট্যাংকারের ধারণক্ষমতা ৩০ হাজার ঘনমিটার। 

প্রতিমন্ত্রী জানান, এসপিএম প্রকল্পটি ২০১৫ সালের নভেম্বরে  গ্রহণ করা হয়। শেষ হবে আগামী জুনে। 

বর্তমানে দেশের একমাত্র রাষ্ট্রায়ত্ত তেল শোধনাগার ইস্টার্ন রিফাইনারি বছরে ১৫ লাখ টন অপরিশোধিত জ্বালানি তেল পরিশোধন করতে পারে। এর দ্বিতীয় ইউনিট চালু হলে পরিশোধন ক্ষমতা ৩০ লাখ বেড়ে ৪৫ লাখ টনে উন্নীত হবে। জ¦ালানি মন্ত্রণালয় বলছে, এসপিএম প্রকল্পটি ইস্টার্ন রিফাইনারির পরিশোধন ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করবে। ফলে জ্বালানির তেলের মজুদ ও সংরক্ষণ ক্ষমতা এবং জোগানের নিরাপত্তা বাড়বে। সম্পাদনা: খালিদ আহমেদ