প্রকাশিত: Wed, Feb 22, 2023 5:23 PM
আপডেট: Wed, Jun 25, 2025 1:24 PM

ধর্ষণ মামলায় কারাগারে সাবেক এমপি আরজু

মাজহারুল ইসলাম: নিজের নাম-পরিচয় পরিবর্তন করে তালাকপ্রাপ্তা এক নারীকে বিয়ে ও প্রতারণার ঘটনায় করা ধর্ষণ মামলায় পাবনা-২ আসনের আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য খন্দকার আজিজুল হক আরজু ওরফে ফারুকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।

বুধবার ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৫ এর বিচারক বেগম সামছুন্নাহারের আদালতে তিনি আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

জানা যায়, গত বছরের ২২ এপ্রিল আদালতে সাবেক এমপি আরজুর বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেন শিক্ষানবিশ এক আইনজীবী। মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২০০০ সালের ডিসেম্বরে বাদীর প্রথম স্বামীর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ হয়। তখন তিনি একটি ফার্মাসিটিক্যাল কোম্পানিতে চাকরি করছিলেন, প্রায় নিঃসঙ্গ জীবনযাপন করছিলেন। তখন তার আত্মীয়-স্বজনেরা তাকে পুনরায় বিয়ে দেওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। একপর্যায়ে ২০০১ সালের শেষের দিকে নিজ চাচার মাধ্যমে খন্দকার আজিজুল সঙ্গে বাদীর পরিচয় হয়। পরবর্তীতে বাদীর সঙ্গে যোগাযোগ রেখে আকৃষ্ট করার চেষ্টা করেন এবং একপর্যায়ে সফল হন খন্দকার আজিজুল। তিনি ওই নারীকে জানান, তার প্রথম পক্ষের স্ত্রী মারা গেছেন। পরে বিভিন্নভাবে বাদীকে তার প্রতি দুর্বল করে ফেলেন। 

সামাজিক নির্ভরতার জন্য ও একাকীত্বের অবসানসহ নতুন সংসার শুরু করার মাধ্যমে তিনি আসামিকে মনে প্রাণে ভালবেসে ফেলেন। পরে বিয়ের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে ২০০৩ সালের ১০ ডিসেম্বর খন্দকার আজিজুলের সঙ্গে বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হন। ২০০৮ সালের ১৬ জানুয়ারি তাদের একটি কন্যাসন্তান জন্মগ্রহণ করে। সন্তান গর্ভে আসার পর খন্দকার আজিজুল বিভিন্ন ছলছাতুরীর মাধ্যমে বাচ্চা নষ্ট করার চেষ্টা করেন।

কিন্তু বাদীর দৃঢ়তার কারণে বাচ্চা নষ্ট করতে পারেননি। শিশুটি ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর আসামির আচার-আচরণের পরিবর্তন লক্ষ্য করেন। এরপর থেকে তিনি বাদীর বাসায় যাতায়াত কমিয়ে দেন।

সেসময় বাদীর নামে ফ্ল্যাট কিনে দেওয়ার কথা বলে তার বাবার কাছ থেকে দশ লাখ টাকা, জমানো আট লাখ টাকা ও তার ১৫ ভরি স্বর্ণালংকার নেন খন্দকার আজিজুল। এরপরও তিনি বাদীকে কোনো ফ্ল্যাট কিনে দেননি ও টাকাও ফেরত দেননি। পরে বাদী খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন খন্দকার আজিজুলের প্রথম পক্ষের স্ত্রী জীবিত। সেই সংসারে খন্দকার আজিজুলের কন্যাসন্তান আছে ও স্ত্রী সঙ্গে সংসারও করেন।  বাদী আরো জানতে পারেন, খন্দকার আজিজুল এতদিন তার কাছে নিজের নাম ফারুক হোসেন ব্যবহার করেছেন তা আসলে মিথ্যা। মিথ্যা পরিচয়ে তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করতেই বাদীকে বিয়ের নামে প্রতারণা করেছেন। এরপর খন্দকার আজিজুল কয়েকবার নিজে ও ভাড়াটে সন্ত্রাসী দ্বারা বাদীকে হত্যার উদ্দেশ্যে আক্রমণ করেন। এক পর্যায়ে খন্দকার আজিজুল বাদীর সঙ্গে বিয়ে ও কন্যাসন্তানের পিতৃপরিচয়কেই সরাসরি অস্বীকার করন। মামলার তদন্তে উঠে এসেছে, বাদীর কন্যা সন্তানের ডিএনএ পরীক্ষা করানো হয়। সেখানে কন্যা সন্তানটি বাদীর গর্ভজাত সন্তান এবং আসামি আজিজুল হক তার বাবা বলে মতামত এসেছে। সম্পাদনা: সালেহ্ বিপ্লব