প্রকাশিত: Sun, Mar 5, 2023 4:26 PM
আপডেট: Wed, Jun 25, 2025 7:59 PM

পোল্ট্রি খাদ্য উপাদান সংকটে কমেছে ডিম উৎপাদন

জেরিন আহমেদ : দেশে বর্তমানে দৈনিক ২ কোটি ৩৩ লাখ ডিম উৎপাদন কমেছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশন। রোববার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানায় সংগঠনটি।

সংগঠনটির তথ্যানুযায়ি, দেশে বর্তমানে ১ লাখ ৫৮ হাজার ১৭৯টি খামার থাকলেও চালু আছে ৯৫ হাজার ৫২৩টি। ১ লাখ ৫৮ হাজার ১৭৯টি খামারের উৎপাদন সক্ষমতা (মুরগির মাংস) ৫ হাজার ২৭৩ মে. টন হলেও বর্তমানে উৎপাদন হচ্ছে ৪ হাজার ২১৯ মে. টন। যা উৎপাদন সক্ষমতা থেকে ২৫ দশমিক ৭১ শতাংশ কম। একইভাবে ডিম উৎপাদনের সক্ষমতা দৈনিক যেখানে ৬ কোটি ৬৪ লাখ ৮২ হাজার ১৮৩টি। অথচ সেখানে দৈনিক উৎপাদন হচ্ছে ৪ কোটি ৩২ লাখ ১৩ হাজার ৪১৮টি ডিম। যা উৎপাদন সক্ষমতা থেকে ২৫ ভাগ কম।

সংগঠনটি বলছে, বর্তমানে বাংলাদেশসহ সারাবিশ্বে করোনা পরিস্থিতি এবং পরবর্তীতে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের ফলশ্রুতিতে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, জনসাধরণের অন্যতম নিত্যপণ্যের মধ্যে ডিম ও মুরগির মাংসের খুচরা দাম নিয়ে অসন্তুষ্টি বাড়ছে। পক্ষান্তরে খামারিরা তাদের উৎপাদন মূল্য না পাওয়ায় প্রায় প্রতিদিনই বন্ধ হচ্ছে কোনো না কোনো পোল্ট্রি খামার।

সংগঠনটির মহাসচিব খোন্দকার মো. মহসিন বলেন, করোনার সময় থেকে এখন পর্যন্ত এ সেক্টর থেকে কাজ হারিয়ে বেকার হয়েছেন লাখ লাখ কর্মজীবী মানুষ। দেশে পোল্ট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশনের নিবন্ধনের ৩১ বছরের ইতিহাসে পোল্ট্রি সেক্টরে এমন নাজুক অবস্থা কখনো আসেনি।

তিনি জানান, সময়ে সময়ে বাচ্চা বিক্রি করতে না পেরে বাচ্চা উৎপাদকারী প্রতিষ্ঠানগুলি ১ দিনের লাখ লাখ মুরগির বাচ্চা মেরে ফেলতে বাধ্য হচ্ছেন। পোল্ট্রির ডিম ও মাংস উৎপাদনে ৬৮ থেকে ৭০ ভাগ খরচ হয় খাদ্যে। আর এ খাদ্যের বেশিরভাগ উপাদান বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। আমদানির জন্য ৮৪ টাকার ডলার ১১০ টাকা দিয়েও সহজলভ্য হচ্ছে না।

জাহাজ ভাড়া বৃদ্ধি, ডিজেল, বিদ্যুৎ, পরিবহনসহ সবকিছুর দাম বাড়ায় বেড়েছে উৎপাদন খরচ। ২০২০ সালে প্রতি কেজি ভূট্টার দাম ছিল ১৭.৩০ টাকা। যা বর্তমানে ৩৮ টাকার ওপরে। পোল্ট্রি খাদ্যে ভূট্টার ব্যবহার হয় ৫৭/৫৮ ভাগ আর সয়াবিন খৈলের ব্যবহার শতকরা ২০ থেকে ২৫ ভাগ। এই সয়াবিন খৈল ২০২০ সালে প্রতি কেজির দাম ছিল ৩৫/৩৬ টাকা, যা বর্তমানে ৮৪ টাকার ওপরে।

পোল্ট্রি খাদ্যে ব্যবহৃত হয় এমন সবকয়টি খাদ্য উপাদানের দাম বেড়েছে। এর মধ্যে কয়েকটি দুষ্প্রাপ্য হয়ে যাচ্ছে। আর তাই বর্তমানে পোল্ট্রি খাদ্য উপাদান সংকট চরমে। প্রয়োজনীয় খাদ্য উপাদান আমদানির জন্য চাহিদা মতো এলসি ওপেন করতে না পারলে একে একে বন্ধ হবে ছোট-বড় আরো খামারসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য প্রতিষ্ঠান। সম্পাদনা : এল আর বাদল