মাসুদ আলম: রাজধানীর সিদ্দিক বাজারে বিস্ফোরণ হওয়া ভবনটিতে উদ্ধার কাজ স্থগিত করেছে ফায়ার সার্ভিস। তবে ঘটনাস্থলে রাজধানীর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) প্রোপিংয়ের কাজে করছে।

ভবনের ক্ষতিগ্রস্ত কলামে স্টিলের পাইপ দিয়ে অস্থায়ী সাপোর্ট (দাঁড় করিয়ে রাখার ব্যবস্থা) দেওয়া হয়েছে। ভবনটির সামনের অংশের ক্ষতিগ্রস্ত কলামগুলোর পাশে ওই পাইপগুলো স্থাপন করা হয়েছে। তিতাসের পরিত্যক্ত লাইনের ছিদ্র থেকে বের হওয়া গ্যাস জমে ভবনের বেজমেন্টে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এদিকে বিস্ফোরণে দগ্ধ মো. ইয়াসিন মিয়া (২৫) শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। বৃহস্পতিবার রাতে তার মৃত্যু হয়। এ নিয়ে প্রাণহানির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ২২ জনে। এছাড়া বিস্ফোরণের ঘটনার পর থেকে আবদুল মালেক মিয়া নামের এক কিশোরকে পাওয়া যাচ্ছে না বলে দাবি স্বজনের।

শুক্রবার  সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, ভবনটিতে রাজউকের প্রোপিংয়ের কাজ যেন নির্বিঘ্ন হয় সেজন্য ভবনটির সামনের রাস্তা দুই দিক দিয়ে বন্ধ করে রেখেছে পুলিশ। ঘটনাস্থলে রাজউকের পাশাপাশি ফায়ার সার্ভিস ও র‌্যাবের টিমও সতর্ক অবস্থায় রয়েছে।  ভবনের বেইজম্যান্টের কোন জায়গা থেকে  বিস্ফোরণের সূত্রপাত সেই জায়গার সন্ধানে নেমেছে সিআইডি ক্রাইম সিন ইউনিট। কিন্তু তদন্তে এখনও বিস্ফোরণের সূত্রপাত স্থল খুঁজে পাওয়া যায়নি।  এরজন্য ভবনের বাইরে ও ভেতরে পরিদর্শন করে বেশ কিছু আলামত সংগ্রহ করেছে ক্রাইম সিন ইউনিট। 

ভবনটির সর্বশেষ অবস্থা নিয়ে রাজউক গঠিত কারিগরি কমিটির সদস্য রংগন মন্ডল বলেন, আমরা মূলত এখন ভবনটিতে প্রোপিং অর্থাৎ ভবনটিকে সাময়িক স্থিতিশীল করার চেষ্টা করছি। 

ভবনের সামনের রাস্তা খুলে দেওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, আমরা প্রোপিংয়ের পর দেখব ভবনটি কতটুকু স্টেবল হয়েছে। এছাড়া আরও দেখব ভবনটি কতটুকু কম্পন সহ্য করতে পারছে। এসব বিষয়ে খতিয়ে দেখে আমরা এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব।

ফায়ার সার্ভিসের ঢাকা বিভাগীয় উপপরিচালক দিনমনি শর্মা বলেন, আমাদের কোনো উদ্ধার কাজ চলছে না। তবে আমরা ঘটনাস্থলে আছি, যেকোনো জরুরি প্রয়োজনে রেসপন্স করব। এছাড়া নিখোঁজ কেউ আছেন বলেও আমাদের কাছে কেউ এসে দাবি করেনি।

নিখোঁজ মালেকের বড় ভাই আবদুল খালেক মিয়া বলেন, বিস্ফোরণের ঘটনার সময় তার ভাই সিদ্দিকবাজার এলাকা দিয়ে যাচ্ছিল বলে ধারণা করছেন। বিস্ফোরণের পর থেকে তারা তাকে পাচ্ছেন না। 

সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিটের এএসপি মো. মিজানুর রহমান বলেন, দেখা গেছে ভবনের গ্রিল ধরে নাড়ালে সেটি নড়ে যাচ্ছে। সেই সঙ্গে দেয়ালও নড়তে দেখা গেছে। ঘটনাস্থলে এখনও কোনো বিস্ফোরক দ্রব্য বা মিথেন গ্যাস রয়েছে কি না, তা জানতেও আলামত নেওয়া হয়েছে।  

ডিএমপি লালবাগ বিভাগের ডিসি মো. জাফর হোসেন বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে পুলিশ বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে বংশাল থানায় মামলা করে। অবহেলার অভিযোগে ৩০৪ (ক) ধারায় মামলা হয়েছে। এ বিস্ফোরণে ভবনের মালিক, গ্যাস, নকশাসহ সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের কার দায় রয়েছে, সেটা তদন্তে ওঠে আসবে। সম্পাদনা: সালেহ্ বিপ্লব