প্রকাশিত: Fri, Apr 14, 2023 8:46 AM
আপডেট: Fri, Jun 27, 2025 1:58 PM

অবৈধ ও ঝুঁকিপূর্ণ রেলক্রসিং বন্ধ করে দিবে বাংলাদেশ রেলওয়ে

আনিস তপন: ইতোমধ্যে পূর্বাঞ্চলে ৩৭টি এবং পশ্চিমাঞ্চলের প্রায় ৫০টি রেল ক্রসিংয়ের দুই পাশে লোহার পাত পুঁতে সড়কগুলোতে যান চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ।

সারাদেশে ২ হাজার ৯৫৯ কিলোমিটার রেলপথ রয়েছে। পশ্চিমাঞ্চল রেলেওয়েতে রেল ক্রসিং রয়েছে ১ হাজার ২৫২টি। এরমধ্যে ৮০১টি গেটে কোন গেটম্যান নেই। এ অঞ্চলের রেলপথে অবৈধ গেট রয়েছে ৩৬৪টি।

পূর্বাঞ্চল রেলওয়েতে মোট রেলক্রসিং ১ হাজার ৮১৪টি। এরমধ্যে অবৈধ গেট রয়েছে ৯৮৩টি। এই অঞ্চলে ১ হাজার ৩৩৩টি গেটম্যানের পদ থাকলেও কর্মরত আছেন ৯৩৬ জন।

দেশে অবৈধ রেলক্রসিংগুলোর মধ্যে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) ৫১৬টি। সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের (সওজ) ১১টি, ইউনিয়ন পরিষদের ৩৬৩টি, পৌরসভার ৭৯টি, সিটি করপোরেশনের ৩৪টি, জেলা পরিষদের ১৩টি, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের ৩টি, বেনাপোল স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের ১টি, জয়পুরহাট চিনিকল কর্তৃপক্ষের ১টি, ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের ৩টি এবং অন্যান্যরা ৯২টি রেলক্রসিং নির্মাণ করেছে। রেল সূত্র জানায়, সারাদেশে রেলপথে বা রেলক্রসিং গুলোতে দুর্ঘটনায় যত মৃত্যু হয় তার নির্দিষ্ট পরিসংখ্যান নেই। তবে কর্তৃপক্ষের দাবি এসব দুর্ঘটনার ৮৫ শতাংশ হয় রেলক্রসিংগুলোতে। সাধারণত মুখোমুখি সংঘর্ষ, লাইনচ্যুতি, এক ট্রেনকে অন্য ট্রেনের ধাক্কা, রেলক্রসিংয়ের উপর ট্রেনের গাড়ি চাপা দেয়াকে রেল দুর্ঘটনা হিসেবে বিবেচনা করে রেলওয়ে।

অবৈধ রেলক্রসিং ব্যবস্থাপনায় কি ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে জানতে চাইলে পূর্বাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, আমরা অপ্রয়োজনীয় লেভেল ক্রসিংগুলো বন্ধ করে দেব। ইতোমধ্যে কিছু বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বাকি গুলোও পর্যায় ক্রমে বন্ধ করে দেওয়া হবে।

একই প্রশ্নে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের প্রধান প্রকৌশলী আসাদুল হক জানান, অবৈধ রেলক্রসিংগুলো সবই স্থানীয় সরকার বিভাগের অধীন স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের (এলজিইডি) সৃষ্টি করা। এসব গেট বন্ধ করে দিলে স্থানীয় পর্যায়ের অনেক পথেই আর যানবাহন চলাচল করতে পারবে না। এতে স্থানীয় পর্যায়ে এলজিইডি’র লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য ব্যাহত হবে। তাই রেলপথ মন্ত্রণালয় ও স্থানীয় সরকার বিভাগের মধ্যে অনুষ্ঠিত আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে, রেলওয়ের অনুমতিবিহীন যেসব রেলক্রসিং রয়েছে তাতে এলজিইডি জনবল নিয়োগ দিয়ে তাদের বেতন-ভাতা পরিশোধ করবে। এলজিইডি এসব জনবল নিয়োগ দিলেও এসব রেলক্রসিং এর ব্যবস্থাপনা করবে রেলওয়ে। এজন্য সরকারি উদ্যোগে স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয় ৩৬২টি গেট ব্যবস্থাপনায় একটি প্রকল্প গ্রহণ করেছে। 

রেলওয়ের নথিপত্র অনুসারে, ২০১৫ সাল থেকে রেলক্রসিংকে নিরাপদ করতে ২শ কোটির বেশি টাকা খরচ করেছে রেলওয়ে। দুটি প্রকল্পের আওতায় রেলের পূর্বাঞ্চল ও পশ্চিমাঞ্চলে ৭০২টি রেলক্রসিং উন্নয়ন করা হয়েছে। এর আওতায় গেটম্যান নিয়োগ দেওয়া হয়েছে ১ হাজার ৫৩২ জন। রেলক্রসিং উন্নয়নে প্রতিবন্ধক বসানো ও গেটম্যানদের জন্য রেলক্রসিংয়ের পাশে ঘর নির্মাণ করা হলেও অনিরাপদ রয়ে গেছে এসব ক্রসিং। ২০১৫ সাল থেকে দু’টি প্রকল্পের আওতায় থোক বরাদ্দের মাধ্যমে মাসে ১৪ হাজার টাকা ব্যয় করা হচ্ছে প্রতি গেটম্যানের জন্য। সম্পাদনা: সালেহ্ বিপ্লব