প্রকাশিত: Fri, Apr 28, 2023 11:05 AM
আপডেট: Fri, Jun 27, 2025 5:26 PM

বাইডেন প্রশাসন বাংলাদেশে অনুগত সরকার চায়

বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের ওপর জোর যুক্তরাষ্ট্রের

জাফর খান: সাউথ এশিয়া জার্নালের প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্লেষকরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের বিভিন্ন দেশের জন্য তাদের গণতান্ত্রিক নীতি অনুসরণের মধ্যদিয়ে উন্নত একটি তথাকথিত গণতান্ত্রিক পরিবেশ সৃষ্টিতে বেশ তৎপরতা চালিয়ে আসছে। আর এটির মধ্যদিয়ে মূলত দেশটি তাদের একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তারে মনোযোগী। অন্যদিকে চীন কূটনীতিক তৎপরতা চালিয়ে বিশ্বের ক্ষমতাধর রাষ্ট্রটিকে মোকাবেলার পাশাপাশি রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে কাজ করছে। অন্যদিকে ভারত তাদের নতুন অর্থনৈতিক নীতির মধ্য দিয়ে তাদের অর্থনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করছে। এদিকে বাংলাদেশ চীনা মুদ্রা ইউয়ানের বিনিময়ে রাশিয়ার রুপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের অর্থ পরিশোধের চিন্তা করছে। আর ডলার থেকে মুখ ফিরিয়ে নেওয়ার এসব পরিকল্পনায় যুক্তরাষ্ট্র খুব বেশি স্বস্তিতে নেই। পাশাপাশি বিশ্ব রাজনীতির নতুন সব মেরুকরণ দেশটিকে ক্রমেই উদ্বিগ্ন করে তুলছে। 

অর্থনৈতিক এই নতুন মাত্রার ক্ষমতার দ্বন্দ্বে অংশ নেওয়া দেশগুলোর মধ্যে রাজনৈতিক বিষয়টি বেশি প্রাধান্য পেয়ে আসছে আগে থেকেই। বাংলাদেশ এরইমধ্যে ইন্দো-প্যসিফিক অঞ্চলের একটি গুরুত্বপূর্ণ দেশ হিসেবে আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে। যদিওবা চীনের সঙ্গে দেশটির সম্পর্ককে ভাল চোখে দেখছে না যুক্তরাষ্ট্র। ২০০৯ সালে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার পর দিল্লী ও চীনের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নের উপর নজর দিয়ে আসছে বাংলাদেশ সরকার। 

এদিকে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক অব্যাহত রাখার জন্য একটি দ্রুত এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠিতের বিষয়ে জোর দিয়ে আসছে। তবে দেশটি চায় বাংলাদেশে হামিদ কারজাইয়ের মত একটি সরকার প্রতিষ্ঠিত হোক যারা যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থকে বেশি প্রাধান্য দিবে জাতীয় স্বার্থের চেয়ে। বাইডেন প্রশাসন এমন একটি সরকার বাংলাদেশে চায় যারা কিনা নিঃশর্তভাবে মার্কিন আনুগত্য মেনে নিবে। 

ওয়াশিংটনে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল মোমেন ও মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি জে. ব্লিঙ্কেনের মধ্যে গত ১০ এপ্রিল অনুষ্ঠিত বৈঠকের শুরুতে সংক্ষিপ্ত এক বক্তব্যে ব্লিঙ্কেন বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন এবং গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের ওপর জোর দেন। 

তিনি বলেন, বাংলাদেশে অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, মানব ও শ্রম অধিকার এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতার প্রচারে মার্কিন প্রশাসন খেয়াল রাখছে। বৈঠকটি স্টেট ডিপার্টমেন্টের ইউটিউব চ্যানেল সরাসরি সম্প্রচার করে। ব্লিনকেন বলেন, সারা বিশ্ব বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে রয়েছে। আমরা দেখতে চাই সরকার একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে।     

বৈঠকে মোমেন একটি অবাধ সুষ্ঠু, এবং বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে মার্কিন নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের স্বাগত জানিয়েছেন। 


প্রতিবেদনে বলা হয়, পর্যবেক্ষকদের ধারণা, সরকার ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনের পুনরাবৃত্তি ঘটাতে পারে। তবে অবস্থা যাই হোক না কেন, আরেকটি অস্পষ্ট নির্বাচন হলে তা কেবল বাংলাদেশেই নয়, এই অঞ্চল ও এর বাইরেও গুরুতর প্রভাব ফেলবে। সম্পাদনা: সালেহ্ বিপ্লব