প্রকাশিত: Thu, Jun 15, 2023 10:18 PM
আপডেট: Sun, Jun 29, 2025 1:50 PM

আগস্টে মূল ব্রিকসের সদস্য হচ্ছে বাংলাদেশ

বিশ্বজিৎ দত্ত: ব্রিকস ব্যাংক বা নিউ ডেভলপমেন্ট ব্যাংকের সদস্য পদ বাংলাদেশ পেয়েছে ২০২১সালেই। এবার আঞ্চলিক অর্থনৈতিক জোট ব্রিকসের মূল সদস্যপদ আগামী আগস্ট মাসে বাংলাদেশ পেতে পারে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে মোমেন। 

তিনি জানান, জেনেভায়  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ব্রিকসের বর্তমান প্রেসিডেন্ট ও দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট মাতমেলা সিরিল রামাপোশার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হয়েছে। সেখানে ব্রিকসের প্রেসিডেন্ট বলেছেন,বাংলাদেশকে আগষ্টে ব্রিকসের সদস্য করা হবে।  

উল্লেখ্য, ২০০৯ সালের ১৬ জুলাই আনুষ্ঠানিকভাবে আঞ্চলিক অর্থনৈতিক সহযোগিতা জোট ব্রিকস তাদের কার্যক্রম শুরু করে। এই জোটের সদস্যরা হলো, ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকা। ২০১৪ সালে এই জোটের প্রথম ব্যাংক স্থাপন করা হয়। ব্যাংটির নাম হয় নিউ ডেভলপমেন্ট ব্যাংক যা প্রচলিত হয় ব্রিকস ব্যাংক নামে। এই ব্যাংকটি ৫০ বিলিয়ন ডলার পুঁজি নিয়ে তার যাত্রা শুরু করে। পরে ২০২১ সালে এই ব্যাংকের নতুন সদস্য করা হয়, বাংলাদেশ আরব আমিরাত ও মিশরকে। আর এই ব্যাংকের সদস্য পদ পাওয়ার পর্যবেক্ষণে রয়েছে উরুগুয়ে। এর বাইরে সংবাদ মাধ্যম ফাইনান্সিয়াল টাইমসের রিপোর্ট অনুযায়ি চলতি বছরের ৩০ মে  ব্রিকস ব্যাংকের সদস্য হওয়ার জন্য আবেদন করেছে, সৌদি আরব, ইরান ও ইন্দোনেশিয়া। 

ব্রিকস ব্যাংকের বর্তমান প্রেসিডেন্ট, ব্রাজিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডিলমা রোসেফ। এর সদর দফতর  চীনের সংহাইয়ে। ব্রিকস ব্যাংকের ৪০ তম বৈঠকে ঘোষণা করা হয়েছে ব্যাংকটি ১.২ বিলিয়ন ডলারের গ্রীন বন্ড ইস্যু করবে।  ব্যাংকটি তার সদস্য দেশসমূহে অবকাঠামো, যোগাযোগ, স্যানিটেশন খাতে ৩৩ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে। এই ব্যাংকটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য তারা বিনিয়োগের ২২ শতাংশ সেই দেশের নিজস্ব মূদ্রায় করে। এটি আগামীতে ৩০ শতাংশ করা হবে বলে ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করেছেন। 

ব্রিকস ব্যাংক সম্পর্কে, আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা দাবি করছেন, এই ব্যাংক আরো কার্যকর হলে আন্তর্জাতিক মূদ্রাভান্ডার বা বিশ্বব্যাংকের প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠবে। বর্তমানে রাশিয়া, চীন ও ভারত তার নিজস্ব মূদ্রায় বাণিজ্য শুরুর প্রস্তুতি নিচ্ছে। রাশিয়ার উপর যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের নিষেধাজ্ঞা থাকায়  রাশিয়া থেকে ইউরোপের দেশগুলো জ্বালানি ক্রয় করছে রাশিয়ার মূদ্রা রুবলে। চীন রাশিয়া ছাড়াও ফ্রান্সের সঙ্গেও তার নিজস্ব মূদ্রায় বাণিজ্য শুরু করেছে। ভারত ১৮টি দেশের সঙ্গে রুপিতে বাণিজ্য করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। 

 এ বিষয়ে অর্থনীতিবিদ, ড. তৌফিক আহমেদ বলেন, বিশ্বের প্রধান মূদ্রা ডলার। এই ডলার দিয়েই যুক্তরাষ্ট্র তার প্রভাব বজায় রাখে। এখন ব্রিকসের নেতৃবৃন্দ চেষ্টা করছেন, ডলারের আধিপত্য কমাতে। এরজন্য তারা অনেক দ্রুত অর্থনৈতিক বর্ধনশীল দেশকে তাদের সঙ্গে যুক্ত করতে চাচ্ছে। বাংলাদেশ একটি অর্থনৈতিক বর্ধনশীল দেশ। আগষ্টে যদি বাংলাদেশ ব্রিকসের সদস্য হয় এটি হবে একটি অর্জন। তখন বৈদেশিক মূদ্রার আরো একটি উৎস্য আমাদের হাতে থাকবে। এখন যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে আইএমএফ বা বিশ্বব্যাংক। তখন আমরা তাদের ছাড়াও আরো ব্রিকস ব্যাংককে পাবো। আর রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের পরে হয়তো একটি নতুন বিশ্বব্যাবস্থাও বিশ্বে স্থাপন হতে পারে। সেক্ষেত্রে ব্রিকস রাষ্ট্রগুলোই হবে নতুন ব্যবস্থার নিয়ন্ত্রক। বাংলাদেশ সেখানে থাকলে লাভবান হবে। সম্পাদনা : শামসুল হক বসুনিয়া