প্রকাশিত: Thu, Jan 25, 2024 11:54 AM
আপডেট: Fri, Jun 27, 2025 1:08 AM

চাল মজুদকারী সিন্ডিকেটের গোড়া থেকে শুদ্ধিকরণ করা হবে: ভোক্তা ডিজি

[১] খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অভিযানের পরও খুচরা বাজারে কমছে না চালের দাম

মাসুদ আলম: [২] বাজারে পর্যাপ্ত চাল মজুদ থাকার পরও জাতীয় নির্বাচনের পর  হঠাৎ করে সব ধরনের চাল কেজিতে ২ থেকে ৫ টাকা বাড়ে। তবে সবচেয়ে বেশি দাম  বেড়েছে মিনিকেটের। এরপর খাদ্য মন্ত্রীর সঙ্গে আড়তদার, মিল মালিক ও ব্যবসায়ীদের বৈঠকের পর চার দিনের মধ্যে দাম কমানোর আশ্বাস পাওয়া যায়। কিন্তুদাম কমছে না। এ অস্থিরতা কমাতে নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছে খাদ্য মন্ত্রণালয়। ব্যবসায়ীদের কেনা দাম থেকে ২ টাকা লাভ করতে বললেও কোনো কাজে আসছে না। তবে ব্যবসায়ীদের আপাতত জরিমানা না করে সচেতন ও সতর্ক করা হচ্ছে। 

[৩] বুধবার দুপরে নিউমার্কেট এলাকায় চালের বাজারে তদারকি কার্যক্রম পরিচালনা করেন খাদ্য মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব মো. কামরুজ্জামান। এসময় কর্মকর্তারা বিভিন্ন দোকানে ঘুরে চালের ক্রয়মূল্যের সঙ্গে বিক্রয়মূল্য মিলিয়ে দেখেন। পরীক্ষা করেন চাল বিক্রির লাইসেন্সও। সতর্ক করেন অতিরিক্ত মজুতের ব্যাপারে। পরে রহিম রাইস এজেন্সি নামের একটি দোকানে পাইজাম চাল ৫৩ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে দেখেন। অথচ ভাউচার যাচাই করে দেখা যায় এই চালের ক্রয় মূল্য ৪৯ টাকা। পরে নতুন করে ৫২ টাকা কেজি দরে পাইজাম চাল বিক্রির নির্দেশনা দেন। 

[৪] উপ-সচিব মো. কামরুজ্জামান বলেন, আমরা খুচরা দোকানিদের বলছি, যে দামে চাল কিনবে তার থেকে সর্বোচ্চ ২ টাকা লাভ করার জন্য। এর বেশি যেন কেউ লাভ না করেন।   এখানে একজনকে আমরা পেয়েছি যিনি ৪-৫ টাকা লাভে চাল বিক্রি করছিলেন। পরে সেটি সঙ্গে সঙ্গে কমানো হয়েছে।

[৫] সকালে মহাখালী কাঁচাবাজারে যান খাদ্য মন্ত্রণালয়ের ভ্রাম্যমান আদালত। এ সময় পুরাতন কাঁচা বাজার রোডের আড়তে গেলে দেখা যায়, আড়তের প্রতিটি দোকান বন্ধ করে রাখা হয়েছে। কারণ খুঁজতে গিয়ে জানা যায়, সকালেও আড়ৎ খোলা ছিল। কাঁচা বাজারে চালের দাম মনিটরিং করতে আসার খবর পেয়ে এই আড়ৎ বন্ধ করেছেন আড়ৎদাররা।

[৬] খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব আব্দল্লাহ আল মামুন বলেন, হঠাৎ করে বেড়ে যাওয়া চালের দাম কিছুটা কমছে। আমরা আশা করছি এই দাম কয়েক দিনের মধ্যে আরও কমে আসবে।

[৭] ভাটারা নুরেরচালা ভাই ভাই স্টোরের মালিক মো. জসিম বলেন, পাইকারিভাবেই বাড়তি দাম দিয়ে চাল আনতে হ"েছ। মিনিকেট বিক্রি করা হ"েছ ৭৩ থেকে ৭৪ টাকা। যা এক সপ্তাহ আগে ছিলো ৬৮ থেকে ৭০ টাকা। বিআর-২৮ ৫৭ থেকে ৫৮ টাকা। যা এক সপ্তাহ আগে ছিলো ৫৪ থেকে ৫৫ টাকা। সব ধরনের চাল কেজিতে ২ থেকে ৫ টাকা বেড়েছে। 

[৮] একই এলাকার মতিন স্টোরের মালিক মতিন বলেন, সবচেয়ে বেশি দাম বেড়ছে মিনিকেটের। অন্য চাল গুলোর দাম কেজিতে ২ থেকে ৩ টাকা বেড়েছে। এছাড়া পরিবহন খরচ, দোকান ভাড়া, কর্মচারির বেতন আছে। কেনা দামের চেয়ে কেজিতে ৩ থেকে ৪ টাকা লাভ না করলে আমরা কিভাবে চলবো। 

[৯] খিলক্ষেত বিসমিল্লাহ জেনারেল স্টোরের মালিক বশির উদ্দিন বলেন, পাইকারি বাজারে কম দামে কমলে খুচরা বাজারে আমরা কমে বিক্রি করবো। সম্পাদনা: সালেহ্ বিপ্লব

এম এম লিংকন: [২] জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) এ. এইচ. এম. সফিকুজ্জামান বলেন, ধানের দাম বাড়ার অজুহাতে চাল মজুদ করে কৃত্রিম দাম কারা বাড়ায় এটা পরিষ্কার। এবার সরকারের নির্দেশ মোতাবেক যারাই বাজার অস্থিতিশীল করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। 

[৩] তিনি বলেন, সম্পূর্ণ অযৌক্তিকভাবে এই সময়ে চালের দাম বাড়ানো হয়েছে। হয়ত ধানের দাম কেজিতে দুই টাকা বেড়েছে। অথচ সেই আগে কেনা ধানের চালও বাড়তি দামে বিক্রি করছে ব্যবসায়ীরা। আর ধানের দুই টাকার বিপরীতে চালের দাম বাড়ানো হয়েছে ৮-১০ টাকা। চালের গুদামে গেলে দেখা যায়, বস্তা বস্তা চাল মজুত করে রাখা হয়েছে।

[৪] চালের দাম বাড়ার সঙ্গে ব্যবসায়ীরা কি মিলের শ্রমিকের বেতন বাড়িয়েছেন, এমন প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, পরিবহন খরচ কি বেড়েছে? বাড়েনি। তাহলে চালের দাম কেন রাতারাতি বাড়াতে হলো?

[৫] আইন মেনে ব্যবসা না করলে ব্যবস্থা  নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন তিনি।  ডিজি জানান, রমজানের পণ্যের কোনো রকম ঘাটতি নেই। এসময় সবাইকে পরিমাণ মতো পণ্য কেনার আহ্বান জানান তিনি। 

[৬] বুধবার রাজধানীর কাওরান বাজারে জাতীয় ভোক্তা-অধিদপ্তর সংরণ অধিদপ্তরের কার্যালয়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেন মহাপরিচালক। রমজান সামনে রেখে এ বৈঠক ডাকা হয়। সম্পাদনা: সালেহ্ বিপ্লব