প্রকাশিত: Sat, Jan 7, 2023 2:51 PM
আপডেট: Mon, Jun 23, 2025 4:50 AM

আর্থিক খাতে আস্থা ফিরিয়ে আনতে বাংলাদেশ ব্যাংকের কার্যকর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে হবে

রাশিদুল ইসলাম: ব্যাংকিং খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে অর্থনীতিবিদরা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ কার্যকর করে তোলার আহবান জানিয়েছেন। তারা বলেছেন, বিশেষ করে অভ্যন্তরীণ খাতে ঋণ বাড়ছে, সে তুলনায় কর আদায় সন্তোষজনক নয়। কর আদায়ের ক্ষেত্রে সক্ষমতা বাড়ছে না। ব্যাংকের অর্থ যোগসাজসে পাচার বন্ধ করতে না পারলে ঋণ নির্ভরতা আরো বাড়বে এবং সরকারের ক্ষমতা কমে যাবে। শনিবার একাত্তর টিভিতে এডিটরস গিল্ড আয়োজিত ‘নতুন বছরে অর্থনীতির চ্যালেঞ্জ;  শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় অর্থনীতিবিদরা একথা বলেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন এডিটরস গিল্ডের সহ-সভাপতি শ্যামল দত্ত।

কাজী খলীকুজ্জামান আহমদ বলেন, আমাদের ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি যা গত বছর ৭.২ শতাংশ ছিল। কিন্তু মূল্যস্ফীতি কিছুটা বিপাকে ফেলেছে। এতে যাদের আয় স্বল্প বা সীমিত তাদের ওপর অভিঘাত পড়ছে একটু বেশি। খাদ্যে খরচ করতে হচ্ছে বেশি। শিক্ষা বা অন্য খাতে তাদের খরচ করতে হচ্ছে কম। জ¦ালানি ও ভোজ্য তেল আমদানি খরচ বেড়েছে, টাকার অবমূল্যায়ন হয়েছে ডলারের তুলনায়। এজন্যে বাংলাদেশ ব্যাংক কিছু উদ্যোগ নিয়েছে। আরো নিতে হবে। যেমন বিদেশ ভ্রমণ আরো কমাতে হবে। এ বছর খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি ও আমদানির বিষয়টি আগেভাগে পরিকল্পনা করতে হবে। কর্মসংস্থানের জন্যে তরুণ প্রজন্মের দিকে নজর দিতে হবে বেশি। 

ফারুক মঈনউদ্দীন বলেন, ৮ শতাংশ সুদে টাকা ধার করে ৯ শতাংশ সুদে টাকা ঋণ দেওয়া খুবই কঠিন। এ থেকে সংকট কতটা গভীর তা বুঝা যাচ্ছে। এলসি খোলার ক্ষেত্রে এবছর আরো জটিল পরিস্থিতি তৈরি হবে। কারণ বিদেশি ঋণ পরিশোধ করতে সরকারকে বেশ কয়েকটি কিস্তি পরিশোধ করতে হবে। রফতানি বাড়লেও বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ এখনো বাড়ছে না। 

ড. জায়েদী সাত্তার বলেন, ইউক্রেন যুদ্ধ চলতে থাকলে বিশ^ অর্থনীতির জন্যে ক্ষতিকর হবে যার প্রভাব আমাদের অর্থনীতিতে পড়বে। উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে অবকাঠামোখাতে বিনিয়োগের জন্যে সম্পদের উৎস আছে কি না তা বিবেচনা করতে হবে। 

অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, আইন দ্বারা নিয়ন্ত্রককে যত ক্ষমতাই দেওয়া হোক বাংলাদেশ ব্যাংক যদি তা কাজে না লাগায় তাহলে কাজ হবে না। খেলাপিরাই ফের ঋণ নিতে পারছে। বাংলাদেশ ব্যাংক শক্ত না হলে আর্থিক খাতে শৃঙ্খলা ফিরে আসবে না। 

এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন বলেন, কাঁচামালের দাম বেড়ে যাওয়ায় উৎপাদিত পণ্যের দাম বেড়ে গেছে। তবে ব্যাংকিং খাতে আস্থা কমে যাওয়ার কারণে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। বিদেশ থেকে অনেকে দেশে টাকা পাঠাতে চাচ্ছেন না। তিনি বলেন, রোজার সময় খাদ্যপণ্য আমদানি করতে যেয়ে বাকিতে আনতে যেয়ে কিছু প্রতিষ্ঠান ব্যর্থ হয়েছে। তাই বাকিতে এলসি খোলা কঠিন হয়ে পড়েছে। সরকারকে এক্ষেত্রে নজর দিতে হবে। 

অর্থনীতি সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. জামালউদ্দিন আহমেদ বলেন, কোনো ব্যাংকের চেয়ারম্যান দীর্ঘদিন ধরে দায়িত্ব পালন করছেন। কয়েকটি পরিবারের হাতে কিছু ব্যাংক বন্দী হয়ে পড়েছে। এরা মিলেমিশে নিজেদের মধ্যে ঋণ আদান প্রদান করছে। এগুলো বন্ধ হচ্ছে না। কেন্দ্রীয় ব্যাংককে স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। সম্পাদনা: সালেহ্ বিপ্লব