
প্রকাশিত: Thu, Jan 19, 2023 3:53 PM আপডেট: Sat, Jun 28, 2025 5:57 PM
কোনো কিছু করতে না পারেন, অন্তত প্রশ্ন তো করতে পারেন?
মনজুরুল হক
বেশুমার টাকা পাচার, মেগা প্রজেক্ট থেকে শত কোটি হাপিস, নামে-বেনামে ব্যাংক থেকে হাজার কোটি খেয়ে দেওয়ার খবরও আপনাকে বিব্রত করছে না, কারণ আপনি মনে করছেন ওসব ওপরতলার ব্যাপার, আমি তো আদার ব্যাপারি। বিপজ্জনক মুদ্রাস্ফীতি, এনার্জি খাতের লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধি নিয়েও আপনার দুঃশ্চিন্তা নেই, কারণ আপনি এখনও হিসেব করে চলতে পারছেন। আপনার ক্ষোভ কোথায়? বাজারে গিয়ে। শীতের সব্জি কিনে রসনা বিলাস করতে গিয়ে আপনি ক্ষুব্ধ হচ্ছেন, মাছ-মাংস কিনতে গিয়ে খেঁকিয়ে উঠছেন। বেগুণ ৪০ টাকা কেজি শুনে দু’কথা শুনিয়ে দিচ্ছেন।
আচ্ছা, এবার ভাবুন: টানা দশ-বার দিনের পরিশ্রম শেষে বেগুণের চারা রোপন হলো। এরপর প্রায় তিন মাস ধরে কমপক্ষে আট বার কীটনাশক, তিন বার সার আর তিন মাসের প্রায় প্রত্যেক দিন পরিচর্যার পরে চার-পাঁচটা গাছ থেকে এক কেজি বেগুণ সংগ্রহ হয়। ভরা মওসুমে ওই চাষা পায় বড়জোর ১০ টাকা কেজি। ছয়-সাত হাত দালাল, ফড়িয়া, পুলিশ-মাস্তানের চাঁদাবাজি শেষে মোকামে আসে। সেখান থেকে খুচরো বিক্রেতা হয়ে আপনার থলিতে ৪০/৫০ টাকা। তা নিয়ে যখন আপনি বিক্ষুব্ধ, ঠিক সেই সময় একটা ১২০ গ্রামের গোসলের সাবান কিনছেন ৭৫ টাকা দিয়ে। একটা ছোট্ট আটা-ময়দার দলা এন্টিবায়োটিক কিনছেন ৬০/৭০ টাকা দিয়ে। এক কাপ কফি খাচ্ছেন ২৫০ টাকা দিয়ে।
৪৩০ টাকার গুড়ো দুধ কিনছেন ৮২০ টাকা দিয়ে। এসব নিয়ে আপনার কোনো অভিযোগ নেই। আশ্চর্য নয়?আপনি কি জানেন দুধ কারখানাগুলোর আশে-পাশের উৎপাদকরা কত করে দুধ বিক্রি করতে বাধ্য হয়? সর্বোচ্চ ৫০ টাকা। অথচ আপনি দিব্যি ১২০০ টাকা দরে ‘খাঁটি ঘি’ কিনে আনছেন। আপনার-আমার হাসি হাসি মুখচ্ছবির আড়ালে আমাদের ঘরে ঘরে নীরবে ইনফ্লাশন আঘাত হেনে চলেছেÑআমাদের বাজেট কার্টেল হচ্ছে। দরিদ্র মানুষদের আমিষ-প্রোটিন হাওয়া হয়ে গেছে। বস্তি ঘরের মানুষরা ৩৬৫ দিনেও এক টুকরো মাংস মুখে তুলতে পারে না। আমরা দেখি রাস্তার পাশের চিকেন গ্রিলের দোকানে বসার জায়গা নেই। কাচ্চি দোকানে লাইন। ঢাকার মোড়ে মাড়ে বিয়ে বাড়ির রোশনাই। প্রতিদিন ৪৫ থেকে ৫৫টা প্রাইভেটকার রাস্তায় নামছে।
আমাদের রাডারে ধরা পড়ে না প্রতিদিনই কয়েকশ পরিবার পরাজিত হয়ে গ্রামে ফিরছেÑওইসব পরাজিত মানুষের ধুসর মুখের চেয়ে অনেক বেশি উজ্জ্বল এই মেট্রোপলিটনের ব্রাইডাল অ্যারেঞ্জমেন্ট, লিটফেস্ট, বিপিএল, বিশ্বকাপ ফুটবল, চলচ্চিত্র উৎসব, ড্রামা ফেস্টিভ্যাল, কবিতা পাাঠের আসর এবং মাননীয়দের মহার্ঘ বক্তৃতার উপর ধন্যবাদজ্ঞাপন। কী করবেন? কিচ্ছু করণীয় নেই? অবশ্যই আছে। কোনো কিছু করতে না পারেন, অন্তত প্রশ্ন তো করতে পারেন? উত্তর কী পাবেন সেটা পরের ভাবনা, আপাতত প্রশ্ন করুন। কাউকে না কাউকে প্রশ্ন করতেই হবে। লেখক ও ফ্রিল্যান্স জার্নালিস্ট
আরও সংবাদ
চ্যাম্পিয়ন ভারত : একটা ছোট মুহূর্ত কতো বড় পার্থক্য গড়ে দিতে পারে
‘ওই ক্যাচ হয়নি, সুরিয়াকুমারকে আবার ক্যাচ ধরতে হবে’!
কতো দেশ, কতোবার কাপ জিতলো, আমাদের ঘরে আর কাপ এলো না!
সংগীতাচার্য বড়ে গোলাম আলি খান, পশ্চিমবঙ্গের গর্ব সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় ও আমি
ইন্ডিয়ান বুদ্ধিজীবী, ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্র ও দেশের বুদ্ধিজীবী-অ্যাক্টিভিস্ট
মতিউর প্রতিদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ৮৩ ব্যাচের বন্ধুদের গ্রুপে সৎ জীবন যাপনের উপদেশ দিতেন!

চ্যাম্পিয়ন ভারত : একটা ছোট মুহূর্ত কতো বড় পার্থক্য গড়ে দিতে পারে

‘ওই ক্যাচ হয়নি, সুরিয়াকুমারকে আবার ক্যাচ ধরতে হবে’!

কতো দেশ, কতোবার কাপ জিতলো, আমাদের ঘরে আর কাপ এলো না!

সংগীতাচার্য বড়ে গোলাম আলি খান, পশ্চিমবঙ্গের গর্ব সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় ও আমি

ইন্ডিয়ান বুদ্ধিজীবী, ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্র ও দেশের বুদ্ধিজীবী-অ্যাক্টিভিস্ট
