
প্রকাশিত: Mon, Jan 30, 2023 1:31 PM আপডেট: Sat, May 10, 2025 4:17 AM
সমাজ পরিবর্তন ও শিক্ষা প্রসারে থিয়েটার নগদ ফল আনতে পারে
জাহিদ হোসেন: বার আর বেঞ্চ দিয়ে যেমন আদালত, শিল্পী আর দর্শক দিয়ে তেমন থিয়েটার। আমি দর্শক, সেই হিসাবে আমিও থিয়েটারের একজন কুশীলব। তবে আমি নিয়মিত দর্শক এমন দাবি করি না। থিয়েটার আমার প্রায়োরিটি লিস্টে থাকে। আমার বাসা থেকে বেইলি রোড বা সেগুনবাগিচায় নাটক দেখতে যাওয়া কম ঝক্কি না। যাওয়া, আসা, নাটক মিলিয়ে চার ঘণ্টার ব্যাপার। সাথে নিদেন হাজার দুয়েক খরচ। তবু কেন যাই? কারণ দায়িত্ব। কেবল নাটক নয়, গান কবিতা, নাচ ইত্যাদি যেকোনো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়াটা একটা নাগরিক কর্তব্য বলে মনে হয়। যে সৌন্দর্য ও সহাবস্থানের সমাজ আমরা চাই, সেই সমাজ নির্মাণে শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কতির পরিচর্যায় অংশ নিতে হয়। ব্যালান্সড একটা জীবনে, টুকরো টুকরো আনন্দকে একসাথে গেঁথে একটা সদানন্দ বিশুদ্ধ জীবন কাটানোর জন্যে নাটক, গান, চিত্রকলা আমাদের প্রাত্যহিকতায় থাকা দরকার। তাই, দর্শকের সারিতে বসে থাকাও একটা দায়িত্ব বলে মনে করি।
আর্থিক অংশগ্রহণ: এই সব অনুষ্ঠান আয়োজনে একটা খরচের ব্যাপার আছে। মনে রাখতে হবে এটা আয়োজকদের ব্যবসা না, তাঁরা লাভ করার জন্যে এইসব করেন না। সবাই আমরা চাচ্ছি আমাদের চারপাশ ফুলে ফলে গানে প্রাণে ভরে যাক, অথচ আমি গেলাম না আপনি গেলেন না, তাহলে যাবে টা কে? ওদের খরচ না উঠলে কদিন আর তাঁরা টিকে থাকবে? তাই একটু অংশ নিতে যাই। সবচেয়ে দামি টিকিটটা কিনি। সাধারণত প্রিয় কাউকে সাথে নিয়ে যাই।
আনন্দ : ঢাকায় লাখ লাখ মানুষ এই সন্ধ্যাতেই হয়তো হাজার টাকার অখাদ্য খাচ্ছে আর দেশ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে বলে আফসোস করছে। আমি সেই দলে থাকতে চাই না। বরং আমার সময়টা আরেকটু আলোকিত ও উন্নত করতে মঞ্চ নাটক দেখতে যাই। আমি মনে করি আপনারও সপরিবার, সসন্তান, সবান্ধব আসা উচিত। কেন আসবেন? কারণ ক্লোজ আপ শট না থাকায় পুরো মঞ্চে চোখ রাখা যায়। তাই দর্শকরাও এক অর্থে কুশীলব হয়ে পড়েন। ঘটমান আনন্দ-বেদনার অংশ হয়ে পড়েন।
থিয়েটার আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে আমরা একা নই। দর্শকরা সামনে আছেন, জীবন্ত। কুশীলবরাও তাঁদের সামনে আছেন, জীবন্ত। এই দুইয়ে মিলে যে মিথষ্ক্রিয়া ঘটে তা এমন এক ঐক্যের বোধ জন্ম দেয় যা সমাজবদ্ধতার জন্যে খুব জরুরি। থিয়েটার বৈচিত্র্য আর উত্তেজনায় ভরপুর। সে কারণে একই নাটক (স্ক্রিপ্ট) বারবার মঞ্চস্থ হলেও একঘেয়ে লাগে না। আগের মঞ্চায়নের খামতিগুলো পরের শোতে মেরামত করা যায়।
সমাজ পরিবর্তন ও শিক্ষা প্রসারে থিয়েটার একটা নগদ ফল আনতে পারে। সবগুলো ইন্দ্রিয় নিযুক্ত থাকায় খুব দ্রুত মেসেজ পৌঁছে যায় দর্শকদের মধ্যে। থিয়েটার পরিবেশ বান্ধব। ভেবে দেখেন, প্লাস্টিক, কার্বন, কেমিকেলসের ব্যবহার এখানে সবচেয়ে কম। মানুষের সাথে মানুষের যূথবদ্ধতা তৈরির একটা উপায়। কেবল অভিনয় নয়; শো শুরু হওয়ার আগে ও পরে লাইকমাইন্ডেড মানুষের সাথে দেখা হয়। এই প্রি অ্যান্ড পোস্ট সোশিয়েলাইজেশন একটা সামাজিক সুস্থতার জন্য খুব দরকার।
নাট্যকার ও নাট্যপরিচালক মাসুম রেজা একবার বলেছিলেন, ‘থিয়েটার ছাড়া একটা শহর সংস্কৃতবান হতে পারে না’। আমিও তাই মনে করি। অসংস্কৃত কর্কশ সমাজে আমার বাস করতে ইচ্ছা করে না। থিয়েটার আমাকে সুগন্ধী সুরেলা সমাজের দিকে নিয়ে যায়। এখন একটা প্রশ্ন করে এই লেখা শেষ করি। এতো উপকার সত্ত্বেও থিয়েটার যথেষ্ট যত্ন পায় না কেন? ইংরেজরা দেড়শ বছর আগে দীনবন্ধু মিত্রদের ঠেকাতে ‘অভিনয় নিয়ন্ত্রণ আইন’ করেছিলো। আমাদের তো উচিত ছিলো এতদিনে ‘অভিনয় সহযোগিতা আইন’ তৈরি করা। করছি না কেন? এখনো কি অভিনয়কে ভয় পায় কেউ? ফেসবুক থেকে
আরও সংবাদ
চ্যাম্পিয়ন ভারত : একটা ছোট মুহূর্ত কতো বড় পার্থক্য গড়ে দিতে পারে
‘ওই ক্যাচ হয়নি, সুরিয়াকুমারকে আবার ক্যাচ ধরতে হবে’!
কতো দেশ, কতোবার কাপ জিতলো, আমাদের ঘরে আর কাপ এলো না!
সংগীতাচার্য বড়ে গোলাম আলি খান, পশ্চিমবঙ্গের গর্ব সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় ও আমি
ইন্ডিয়ান বুদ্ধিজীবী, ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্র ও দেশের বুদ্ধিজীবী-অ্যাক্টিভিস্ট
মতিউর প্রতিদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ৮৩ ব্যাচের বন্ধুদের গ্রুপে সৎ জীবন যাপনের উপদেশ দিতেন!

চ্যাম্পিয়ন ভারত : একটা ছোট মুহূর্ত কতো বড় পার্থক্য গড়ে দিতে পারে

‘ওই ক্যাচ হয়নি, সুরিয়াকুমারকে আবার ক্যাচ ধরতে হবে’!

কতো দেশ, কতোবার কাপ জিতলো, আমাদের ঘরে আর কাপ এলো না!

সংগীতাচার্য বড়ে গোলাম আলি খান, পশ্চিমবঙ্গের গর্ব সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় ও আমি

ইন্ডিয়ান বুদ্ধিজীবী, ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্র ও দেশের বুদ্ধিজীবী-অ্যাক্টিভিস্ট
