আশিক নূরী : [১] কল্পনা দত্ত ছিলেন ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব। তিনি চট্টগ্রাম বিপ্লবের একজন অন্যতম বিপ্লবী নেত্রী। পূর্ণেন্দু দস্তিদারের মাধ্যমে তিনি মাস্টার দা সূর্য সেনের সঙ্গে পরিচিত হন এবং মাস্টার দা প্রতিষ্ঠিত ইন্ডিয়ান রিপাবলিকান আর্মি, চট্টগ্রাম শাখায় যোগদান করেন। তাঁর বিপ্লবী মনভাবের জন্য রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাকে ‘অগ্নিকন্যা’ বলেছেন। [২] কল্পনা দত্ত ২৭ জুলাই ১৯১৩ সালে তৎকালীন চট্টগাম জেলার শ্রীপুরে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা বিনোদবিহারী দত্তগুপ্ত ছিলেন সরকারি কর্মী। কল্পনা দত্ত চট্টগ্রাম থেকে ১৯২৯ সালে ম্যাট্রিকুলেশন পাশ করার পর, কলকাতার বেথুন কলেজে বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হন। বেথুন কলেজে পড়তে পড়তে তিনি নানা ধরনের বিপ্লবী কর্মকান্ডের সঙ্গে জরিয়ে পরেন। শহীদ ক্ষুদিরাম এবং বিপ্লবী কানাই লাল দত্তের আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে তিনি বেথুন কলেজে গড়ে ওঠা ছাত্রী সংঘ-এ যোগদান করেন। 

[৩] কল্পনা দত্ত কলকাতা থেকে ফেরার সময় গোপনে কিছু বিষ্ফোরক নিয়ে আসেন, এছাড়াও গোপনে গান কটনও তৈরি করেছিলেন। এই সময় বিপ্লবী নেতৃবৃন্দের বিচার ও সাজা রুখতে তিনি বেশ কিছু সাহসী পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। তিনি কোর্ট এবং জেলে ডিনামাইট দ্বারা বিষ্ফোরনের পরিকল্পনা করেছিলেন, যাতে বিপ্লবী নেতৃবৃন্দ পালাতে সক্ষম হন। [৪] কল্পনা দত্ত ১৯৩৯ সালে কারাগার হতে মুক্তি লাভের পর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অঙ্কে সাম্মানিকসহ স্নাতক ডিগ্রী লাভ করেন। তারপর তিনি ভারতের কমিউনিস্ট পার্টিতে যোগদান করে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন চালিয়ে যান। ১৯৪৩ সালে ঈ.চ.ও নেতা পূরণচাঁদ যোশীর সঙ্গে তাঁর বিবাহ হয়। এর পর তিনি চট্টগ্রামে ফিরে যান এবং দলের মহিলা ও কৃষক সংগঠনকে চাঙ্গা করেন। [৫] বলিউডে, চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুন্ঠন নিয়ে খেলে হাম জি জান সে শীর্ষক একটি চলচ্চিত্র মুক্তি পেয়েছে, যার অন্যতম প্রধান চরিত্রে ছিল কল্পনা দত্ত। এই ছবিতে তাঁর চরিত্রে অভিনয় করেছেন বিখ্যাত বলিউড অভিনেত্রী দীপিকা পাড়ুকোন। কল্পনা দত্ত ৮ ফেব্রুয়ারি ১৯৯৫ সালে মারা যান।