প্রকাশিত: Thu, Feb 23, 2023 12:27 PM
আপডেট: Thu, Jun 26, 2025 11:52 PM

আমাদের গণমাধ্যমের সামগ্রিক অবক্ষয় ও দীনতার বাইপ্রোডাক্ট

আমীন আল রশীদ: ইংরেজি না জানা দোষের না। কিন্তু না জেনে ইংরেজিতে প্রশ্ন করাটা দোষের। একজন বিদেশিকে আপনি আপনার নিজের ভাষায় প্রশ্ন করলে যদি তিনি না বোঝেন, তাহলে তাকে প্রশ্ন না করাটাই শ্রেয়। বরং ভাষা না জেনে প্রশ্ন করে আপনি শুধু নিজের অজ্ঞতাই প্রকাশ করেননি, বরং আপনার প্রতিষ্ঠান এবং পুরো গণমাধ্যমকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছেন। ‘অশিক্ষিত লোকেরা সাংবাদিকতা করে’- এরকম একটি কথা অনেকেই সুযোগ পেলে বলেন। তাদের সেই কথা বলার সুযোগটা আরও বাড়িয়ে দেয়ার কোনো মানে নেই। আমার নিজের একটা অভিজ্ঞতা বলি। 

২০১০ সালে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর প্রক্রিয়া চলাকালীন একদিন সংসদের মিডিয়া সেন্টারে ব্রিফ করে কাঠের সিঁড়ি দিয়ে নামার সময় তোফায়েল আহমেদকে একটি নামকরা টেলিভিশন চ্যানেলের রিপোর্টার জিজ্ঞেস করলেন, ‘স্যার আপনার ডেজিগনেশন কী লিখবো?’ তোফায়েল আহমেদ রেগে গিয়ে বললেন, ‘তোমার হেড অব নিউজকে জিজ্ঞেস করো, হু ইজ তোফায়েল আহমেদ’। 

তোফায়েল আহমেদ কে, এটা না জানা লোককে সংবিধান সংশোধন কমিটির মিটিং কাভার করতে পাঠিয়েছেন যে সিএনই বা অ্যাসাইনমেন্ট এডিটর, আগে তো তার শাস্তি হওয়া দরকার। আর একজন রিপোর্টার কনফার্ম হওয়ার জন্য কাউকে তার পদবি জিজ্ঞেস করতেই পারেন। কিন্তু সেটার স্থান, কাল, পাত্র আছে। এটার খুব সহজ তরিকা হলো, অন্য কোনো সাংবাদিককে জিজ্ঞেস করা যে, তোফায়েল আহমেদের পদ কী লিখবো? কিন্তু সাংবাদিক সাহেব সেটি না করে নিজের জ্ঞান জাহির করতে গিয়ে ধরা খেয়েছেন। বাকিদেরও প্রশ্নের মুখে ফেলেছেন। সুতরাং একজন সাংবাদিক ইংরেজি না জেনে কয়েকজন বিদেশি খেলোয়াড়কে ইংরেজিতে প্রশ্ন করে যে ট্রলের শিকার হচ্ছেন, সেটি নতুন কোনো ঘটনা নয়। আমাদের গণমাধ্যমের সামগ্রিক অবক্ষয় ও দীনতারই বাইপ্রোডাক্ট।

 লেখক: সাংবাদিক। ফেসবুক থেকে