প্রকাশিত: Thu, Feb 23, 2023 4:06 PM
আপডেট: Fri, Jun 27, 2025 1:18 AM

অধিকাংশ নতুন লেখকই জনপ্রিয়তার পেছনে ছুটছেন!

হুমায়ুন কবির : বইমেলায় গিয়ে বেশকিছু নতুন লেখকের বই উল্টেপাল্টে দেখলাম। হালের জনপ্রিয় কিছু বই পড়তেও চেষ্টা করলাম। লাভ হলো না। অধিকাংশ নতুন লেখকই আমাকে তাঁদের লেখায় ধরে রাখতে পারছেন না। এখানে আমি শুধু আমার কথা বলছি। অন্য পাঠকদের কী অবস্থা তা আমার জানা নেই। আমার মনে হয়, অধিকাংশ নতুন লেখকই জনপ্রিয়তার পেছনে ছুটছেন। জনপ্রিয়তার নেশায় তাড়াহুড়ো করে কিছু একটা লিখে তাঁরা বই আকারে বের করার প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়েছেন। এখনকার নতুন লেখকদের বই পড়লে তাঁদের জানাশোনার ঘাটতি অত্যন্ত নগ্নভাবে তাঁদের লেখা প্রতিটি লাইনে, প্রতিটি শব্দে ছবির মত ভেসে উঠে। আজকালকের অধিকাংশ লেখকই ভালো পাঠক নন।

একজন ভালো লেখক হতে হলে সবার আগে যে একজন ভালো পাঠক হতে হয়- এই তথ্য হয় তাঁরা জানেন না, নয়তো জেনেও গোঁয়ার্তুমি করে তাঁদের মূর্খতা প্রকাশ করে যান বিরামহীনভাবে। অন্য এক শ্রেণির লেখক আছেন, যাঁরা ফেসবুকে পোস্ট প্রতি দেড়-দুশো লাইক পেলেই নিজেকে মহান লেখক ভাবা শুরু করে দেন। এরপর কোন এক শুভ লগ্নে বই লিখতে বসেন। বইমেলা এলে তা প্রকাশ করেন। সকাল থেকে সন্ধ্যা অব্দি স্টলের সামনে ক্লাউনের মত দাঁড়িয়ে থাকেন। পরিচিত কাউকে পেলেই অটোগ্রাফ লিখে দিয়ে বইটি কিনতে বাধ্য করান। আগের দিনগুলো ভালো ছিল। 

একজন মানুষকে লেখক হয়ে উঠতে হলে কত যে সংগ্রাম করতে হত। বারে বারে আগুনে জ্বলে-পুড়ে খাঁটি সোনা হয়ে একেকজন লেখক আত্মপ্রকাশ করতেন। সমাজের চোখ রাঙানি, খালিপেট, সংগ্রাম, ছোট কাগজে লেখা ছাপা, পাণ্ডুলিপি নিয়ে দ্বারেদ্বারে ঘোরা... আরও অসংখ্য কণ্টকাকীর্ণ শ্বাপদসংকুল পথ অতিক্রম করতে হত তাঁদের। এতকিছুর পর আমরা একজন লেখক পেতাম। ফলে তাঁর লেখায় জীবন থাকত। আমি বলছি না, লেখক হয়ে উঠতে সবাইকে এমন সংগ্রামের ভেতর দিয়ে যেতে হবে। 

কিন্তু একজন লেখক হতে যে ন্যূনতম জানাটুকুও জানতে হয়, তা আমাদের নতুন লেখকদের মাঝে দেখা যায় না। ফলে তাঁদের লেখা বই হাতে নিলে তা অত্যন্ত হালকা মনে হতে থাকে। উপরোল্লিখিত বক্তব্যটুকু একজন পাঠক হিসেবে নিতান্তই আমার ব্যক্তিগত অভিমত। উক্ত বক্তব্যটুকুকে সর্বজনীন না ভাবার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করছি। ফেসবুক থেকে