প্রকাশিত: Sat, Mar 4, 2023 6:26 AM
আপডেট: Thu, Jun 26, 2025 3:19 PM

একবারও কি ১০ বছর বয়সী শিশুদের মনের কথা ভেবেছেন?

প্রভাষ আমিন : যারা ছোটদের ফলাফল নিয়ে এই তুঘলকি কাণ্ডটি ঘটালেন, তারা কি একবারও ১০ বছর বয়সী শিশুদের মনের কথা ভেবেছেন? মঙ্গলবারের বৃত্তি পাওয়া কেউ যদি বুধবার বাদ পড়ে, তার মনের অবস্থা কী হবে। ট্যালেন্টপুল থেকে কেউ যদি সাধারণ কোটায় নেমে আসে, তার আত্মবিশ্বাস কোথায় যাবে? আমি ধরে নিচ্ছি, পরীক্ষা না দিয়েও বৃত্তি পাওয়া ছাড়া আর কারও বৃত্তি বাতিল হবে না। কিন্তু এই শিশুদের প্রায় ২৬ ঘণ্টা অনিশ্চয়তায় রাখার দায়িত্ব কে নেবে? যারা এখন মন্ত্রী-সচিব বা মহাপরিচালক হয়ে ইচ্ছামতো ফলাফল ঘোষণা করছেন, স্থগিত করছেন; তারা কি কখনও ক্লাস ফাইভে পড়েননি, তারা কি নিজেদের সেই বয়সের মনের অবস্থাটা ভুলে গেছেন, তাদের কি সন্তান নেই? তাহলে তারা কীভাবে বাচ্চাদের একটা পরীক্ষার ফলাফল নিয়ে এমন ছেলেমানুষি করতে পারেন। শুধু ফলাফল নয়, এই বৃত্তি পরীক্ষা নিয়ে এর আগেও অনেক ছেলেখেলা হয়েছে। হুট করে পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নেওয়া, হুট করে তারিখ বদলে ফেলার মতো ছেলেমানুষিও হয়েছে।

পত্রিকায় দেখলাম, ফলাফল তৈরির সঙ্গে যুক্ত প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের কারিগরি দলের ভুলের কারণে মূলত এ ঘটনা ঘটেছে। এ নিয়ে তদন্ত কমিটি হয়েছে। নতুন করে ফলাফল ঘোষণার সময় ভুলের কারণে ক্ষমাও চেয়েছে সরকার। কিন্তু এটা নিছক ভুল নয়। নিছক ক্ষমা চাওয়ায় এর দায় চুকেবুকে যাবে না। শিশুদের মনের ওপর প্রবল চাপ তৈরির এই ঘটনা রীতিমতো অপরাধ। যারা অপরাধী তাদের শাস্তি পেতে হবে। দায়িত্ব নিতে হবে মন্ত্রী-সচিব-মহাপরিচালককেও। তদন্তের নামে যেন সময়ক্ষেপণ করা না হয়। দায়ীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। আর যারা পুরো প্রক্রিয়ার নেতৃত্বে ছিলেন, তারা যদি দায় স্বীকার করে পদত্যাগ করেন, তাহলেই সবচেয়ে ভালো হয়। কিন্তু বাংলাদেশে কেউ দায় স্বীকার করে না। সবাই দায় অন্য জনের ঘাড়ে চাপায়। তবে শিশুদের নিয়ে এই ছেলেখেলার দায় যেন কেউ এড়াতে না পারে। লেখক: হেড অব নিউজ, এটিএন নিউজ