
প্রকাশিত: Thu, Dec 8, 2022 6:51 PM আপডেট: Sun, Jun 22, 2025 11:25 AM
পুরুষকে বিচার করতে পুরুষের আদর্শ অবিকল কপি করতে হবে
সৈয়দা সাজিয়া আফরিন: ফেসবুকীয় লেখালেখির একটা পর্যায়ে এক তরুণ বয়সের (২৫-২৬) হবে খুব পজিটিভ এপ্রোচে উড়ে আসে ইনবক্সে। অনেক প্রশংসা দিয়ে যাচ্ছিল নিয়মিত। কতো ভক্তি পেন্নাম করে তাও জানাত। এরকম চার পাঁচজন ছিলেন যাদের আমি স্টাডি করেছি। অন্য নারী ও অন্য পুরুষদের মধ্যকার সম্পর্কের আচরণ ভিন্নতা থেকে আমি আরও কিছু কমন ব্যাপার নোট করেছি। যাকে আশপাশে পেয়েছি চেষ্টা করেছি ভালোভাবে অবজার্ভ করতে।
নিজের কিউরিসিটিকে ফিড করাতে এবং তাদের সাইকোলজি বুঝতে দুয়েকটি প্রশ্রয়মূলক উত্তর দিতে হয়। এতে তারা দ্রুত নিঃসংকোচ হয়ে যায়। পুরো মানসিকতাটা খুলে রাখে।
পুরুষ মূলত এতো সস্তা তাঁরা সবকিছু খুলতে রাজি থাকে। তাই কাজটা বেশ সহজ। যেকোনো নারী এটা করতে পারেন। আমি বারবার বুঝতে চাইতাম আমি যা বুঝেছি তাই ঠিক কি- না। কোনো ভুল হচ্ছে কি-না। কিন্তু নিজের কনফিডেন্স দ্বিগুণ তিনগুণ হয়ে যায় যখন বুঝি আমি যা ভাবি এবং যত সস্তা মনে করি পুরুষকে, তাঁরা আসলে তার চেয়েও সস্তা ও এভেইলেবল, ইজি গোয়িং। পুরুষের আচরণগত কিছু ছক আছে। খুব বেশি হলে চার পাঁচটি ছক। একটু আয়ত্ত করে নিলে দেখবেন এ থেকে জেড এরা মোটামোটি সবাই সেম আইটেম সেম মাল। আলাদা ‘ব্যক্তি’ আলাদা ইনডিভিজুয়াল ওরা নয়। ওরা সমষ্টি। ওদের ব্যক্তিত্ব সমষ্টির ব্যক্তিত্ব। ওরা একই এবং অভিন্ন। বয়সভেদে ও আর্থিক অবস্থা ভেদে তাদের আচরণ ভাগ করা যায়।
[১] যেমন মধ্যবয়সী ৪৫-৫৫ যৌন হতাশায় ভোগা পুরুষের আচরণ। এরা যেখানে সেখানে বাস ট্রেন ফেসবুক টুইটার সবখানেই সন্ধান করে। নারী সম্পর্কে সবচেয়ে বাজে ধারণা এই এজ গ্রুপের পুরুষেরাই পোষণ করে। এবং এরা সবচেয়ে ভয়ংকর নারীবিদ্বেষী। আমার ক্ষমতা থাকলে আমি ‘মাইনাস বুইড়া’ অভিযানে নামতাম। [২] বিবাহিত যুবক ৩০-৪০। সেক্সুয়ালি ফ্রাস্ট্রেটেড। অপরচুনিস্ট। যেখানে সেখানে নয় বরং এক্স গার্লফ্রেন্ড, ক্লাসমেট, ভার্সিটিমেট, অফিসমেটের মধ্যে সুবিধা আছে কিনা খোঁজে। এরা সবখানে ঝুঁকি নিতে চায় না। ইমোশনাল নিডও থাকে বলে এরা পরিচিতদের মধ্যেই সুযোগ খুঁজে।
[৩] অবিবাহিত তরুণ ও যুবক। ২৪-৩০। মূলত যৌন অবদমিত ও ফ্যান্টাসি আক্রান্ত। মা খালার বয়সী থেকে শুরু করে আপা ভাবিদের মধ্যে সুযোগ খোঁজে। সবচেয়ে বেশি সুযোগ খোঁজে বিবাহিত নারীদের মধ্যে। তাদের ধারণা বিবাহিত নারী সহজলভ্য এবং প্রেমিকার মতো ইমোশনাল আর ইকোনোমিক্যাল ইনভেস্টমেন্ট লাগে না। মোর সেক্স, নটি টক অ্যান্ড সেক্সটিং। তাদের বিশেষ রুচি নাই। যা-তা চলে। আর্থিক সামর্থ্য নির্ভর কিছু ছক দিই।
[ক] যে পুরুষের অনেক টাকা কিন্তু দেখতে কদাকার বা বয়সে বুইড়া। তাদের কপালে এক্সট্রা ম্যারিটাল প্রেম ভালবাসা জোটে না। তাঁরা অর্থের বিনিময়ে বা সুযোগ সুবিধার বিনিময়ে নারীর শরীর কিনে। [খ] যে পুরুষের অনেক টাকা প্লাস দেখতে ঠিকঠাক তাদের বিয়ের প্যারালাল কিছু দুয়েকটি বা অন্তত একটি সম্পর্কের প্রয়োজনীয়তা থাকে। এরা শরীরী সম্পর্কের জন্য কিছুটা আবেগ ও অর্থ দুইটাই ইনভেস্ট করতে রাজি থাকে। বউয়ের দুর্নাম গাওয়া পুরুষ এর একটি উদাহরণ হতে পারে। পুরুষকে অবজেক্ট না ভেবে মানুষ ট্রিট করলেই বিপদ। বিপদ আরও বেশি যখন পুরুষকে শুধু মানুষ না বিশেষ মানুষ ভাবে নারী।
[গ] যে পুরুষের উপহার দেওয়া বা প্রেমে ইনভেস্ট করার পর্যাপ্ত টাকা নেই। দেখতেও সুবিধার না। এরা সুবিধা খোঁজে। নারীর অসুবিধায় ও বিপদে তারা নিজেদের সুবিধা খোঁজে। এরা বিয়ে টিয়ে করার কথা দিয়ে থাকেন। যথেচ্ছ প্রতারণা করে। কারণ তাদের চাতুরিই তাদের একমাত্র ইনভেস্টমেন্ট। এরা কারা বা কে আগেভাগে বলা যায় না। যে কেউ হতে পারে। যে কোন বয়সের হতে পারে।
আরও ছক আছে। ক্ষমতাভিত্তিক ইন্টেলেকচুয়াল কোয়ালিটিভিত্তিক, ইনফ্লুয়েন্স ক্যপাবিলিটি ভিত্তিক। এই গ্রুপ ছোট হওয়ায় উল্লেখ করলাম না।
নারীকে বুঝতে হবে পুরুষ কোনো প্রেমে পড়ে না। প্রেমে ফেলে।
জান দেয় না, নেয়। এজন্যই বলে ‘মামা পটাইতে কষ্ট হইছে’। প্রেম তাদের ভাষায় পটানো এবং পটানোর পর খেয়ে দেওয়া। তারা এসব ইনভেস্ট করে নিজেদের আবেগিক, শারীরিক ও সামাজিক সুখ লাভের জন্য। এই ছকের বাইরে খুব কম সংখ্যক পুরুষ রয়েছেন। এবং আমরা প্রায় সব নারী ওই কম সংখ্যক পুরুষদের গণনা করতে চাই নিজেদের আপনজন ও পরিবারের পুরুষদের। এটা ভালো। পুরুষকে অবজেক্টিফাই করতে পিতাবন্দনা করতে হবে, ভাইবন্দনা করতে হবে, নানা রুপক প্রশংসায় ভাসাতে হবে প্রেমিককে। নারীর শিখতে হবে নিজেকে ভালবাসার পুরুষীয় কৌশল। প্রেমে পড়ার আগে নিজেকে অটোসাজেশন দিন যে আমি আমাকে ভালো রাখতে প্রেমে জড়াচ্ছি। অর্থাৎ আমার ভাল থাকার পারপাস সার্ভ হতে হবে। হতেই হবে। পুরুষের ক্ষমতাকে ছুতে হলে পুরুষকে বুঝতে হবে। পুরুষকে বিচার করতে পুরুষের আদর্শকে অবিকল কপি করতে হবে এবং সেগুলোকে ব্যবহার করতে হবে তাদের বিরুদ্ধে। দাসত্ব যখন শরীর ছাপিয়ে আত্মাকেও কাবু করে ফেলে তখন শাকিবের দুই ভিক্টিম পরস্পরকে দোষী করে। যদিও শাকিব তার আয় অনুসারে জীবনযাত্রার মান অনুসারে তার সন্তানের খরচ দিতে বাধ্য। তবুও এই দুই নারী শাকিব বন্দনা করেন ও পরস্পরকে দুষেন।
আরও সংবাদ
চ্যাম্পিয়ন ভারত : একটা ছোট মুহূর্ত কতো বড় পার্থক্য গড়ে দিতে পারে
‘ওই ক্যাচ হয়নি, সুরিয়াকুমারকে আবার ক্যাচ ধরতে হবে’!
কতো দেশ, কতোবার কাপ জিতলো, আমাদের ঘরে আর কাপ এলো না!
সংগীতাচার্য বড়ে গোলাম আলি খান, পশ্চিমবঙ্গের গর্ব সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় ও আমি
ইন্ডিয়ান বুদ্ধিজীবী, ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্র ও দেশের বুদ্ধিজীবী-অ্যাক্টিভিস্ট
মতিউর প্রতিদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ৮৩ ব্যাচের বন্ধুদের গ্রুপে সৎ জীবন যাপনের উপদেশ দিতেন!

চ্যাম্পিয়ন ভারত : একটা ছোট মুহূর্ত কতো বড় পার্থক্য গড়ে দিতে পারে

‘ওই ক্যাচ হয়নি, সুরিয়াকুমারকে আবার ক্যাচ ধরতে হবে’!

কতো দেশ, কতোবার কাপ জিতলো, আমাদের ঘরে আর কাপ এলো না!

সংগীতাচার্য বড়ে গোলাম আলি খান, পশ্চিমবঙ্গের গর্ব সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় ও আমি

ইন্ডিয়ান বুদ্ধিজীবী, ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্র ও দেশের বুদ্ধিজীবী-অ্যাক্টিভিস্ট
