
প্রকাশিত: Wed, Apr 12, 2023 1:49 PM আপডেট: Wed, Jun 25, 2025 3:25 AM
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী মুক্তিযোদ্ধা। প্রতিষ্ঠাতা, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র হাসপাতাল
আমরা সর্বাত্মকভাবে চেষ্টা করলে মানুষে মানুষে বৈষম্য কমে আসবে
ভূঁইয়া আশিক রহমান: স্বাধীনতার পর দেশের ওষুধের বাজারে বিদেশি ও বহুজাতিক কোম্পানির একচেটিয়া আধিপত্য ছিলো। তখন বাজারে চার হাজার ধরনের ওষুধ ছিলো। এর প্রায় সবই বিদেশ থেকে আমদানি করা হতো। ওষুধ ছিলো সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সামরিক শাসনামলের ১৯৮২ সালের জাতীয় ওষুধনীতি পরিস্থিতি পাল্টে দেয়। জাতীয় ওষুধনীতি দেশি কোম্পানিগুলোকে ওষুধ উৎপাদনের সুযোগ তৈরি করে দেয়, পাশাপাশি দেশে তৈরি হওয়া ওষুধ বিদেশ থেকে আমদানি করা বন্ধ হয়। বর্তমানে বাংলাদেশ একটি ওষুধ রপ্তানিকারক দেশ। দেশের মানুষকে স্বল্প মূল্যে ওষুধ দেওয়ার জন্য গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র ওষুধ কোম্পানিও প্রতিষ্ঠা করে।
বৈশ্বিকভাবে বিকল্প স্বাস্থ্য আন্দোলন গড়ে তোলার ক্ষেত্রেও ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর ভূমিকা রয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রতিবছর ওয়ার্ল্ড হেলথ অ্যাসেম্বলি আয়োজন করে। এর বিকল্প হিসেবে কয়েক বছর পরপর আয়োজন করা হয় পাবলিক হেলথ অ্যাসেম্বলি বা জনগণের স্বাস্থ্য সম্মেলন। এটা আয়োজন করে পিপলস হেলথ মুভমেন্ট নামের একটি বৈশ্বিক সংগঠন। এই সংগঠনের নির্বাহী পরিষদের সদস্য ছিলেন।
কাজের স্বীকৃতি হিসেবে জীবনের নানা পর্বে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কার বা সম্মাননা পেয়েছেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। ১৯৭৭ সালে তাঁকে স্বাধীনতা পুরস্কার দেয় সরকার। ফিলিপাইনের র্যামন ম্যাগসাইসাই পুরস্কার পান ১৯৮৫ সালে। ১৯৯২ সালে সুইডেন থেকে তাঁকে দেওয়া হয় রাইট লাইভলিহুড অ্যাওয়ার্ড। কানাডার ওয়ার্ল্ড অর্গানাইজেশন অব ন্যাচারাল মেডিসিন ২০০৯ সালে দেয় ডক্টর অব হিউম্যানিটেরিয়ান উপাধি। যুক্তরাষ্ট্রের বার্কলে থেকে ২০১০ সালে দেওয়া হয় ইন্টারন্যাশনাল পাবলিক হেলথ হিরোজ অ্যাওয়ার্ড। যুক্তরাজ্যের প্রবাসী বাংলাদেশিদের সংগঠন ভয়েস ফর গ্লোবাল বাংলাদেশিজ ২০২২ সালে জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে ‘এনআরবি লিবারেশন ওয়ার হিরো ১৯৭১’ পুরস্কার দেয়।
জাফরুল্লাহ চৌধুরী ৫০টির বেশি দেশে বিভিন্ন সম্মেলন বা সেমিনারে মূল বক্তা হিসেবে অংশ নেন। একাধিক দেশকে জাতীয় ওষুধনীতি তৈরিতে পরামর্শ দিয়েছেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য প্রকাশনার মধ্যে একটির নাম ‘রিসার্চ : আ মেথড অব কলোনাইজেশন’। এটি ইংরেজিতে প্রকাশিত হয়েছিলো ১৯৭৭ সালে। এরপর এটি বাংলা ছাড়াও ফরাসি, জার্মান, ইতালি, ডাচ, স্প্যানিশ ও একাধিক ভারতীয় ভাষায় অনুবাদ হয়েছে।
জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে জীবনের শেষ বছরগুলোতে রোগব্যাধির সঙ্গে লড়তে হয়েছে। জটিল কিডনি রোগে ভুগছিলেন। মানুষ যেন সহজে প্রতিস্থাপনের জন্য কিডনি পেতে পারেন, সে জন্য তিনি আইনের পরিবর্তন চেয়েছিলেন। পাশাপাশি তাঁর হাতে গড়ে ওঠা গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে ১০০ শয্যার কিডনি ডায়ালাইসিস ইউনিট তৈরি করেছিলেন। ওই ইউনিটে নিজেই ডায়ালাইসিস করাতেন। ইউনিটটি তিনি করেছিলেন কম মূল্যে সাধারণ মানুষকে সেবার সুযোগ করে দিতে। একটি ক্যানসার হাসপাতাল করার ইচ্ছাও তাঁর ছিলো। সাহসী, গুণী ও বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী মারা গেছেন ১১ এপ্রিল ২০২৩ সালে। তাঁর প্রতি আমাদের শদ্ধা জানিয়ে আমাদেরসময় ডটকম ও আমাদের নতুন সময়কে দেওয়া এক্সক্লুসিভ ইন্টারভিউটা পুনঃপ্রকাশিত হলো।
[২] আমাদেরসময় ডটকম : দেশের রাজনৈতিক সংকট দূরীকরণে কী করা উচিত বলে আপনি মনে করেন?
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী : দেশের রাজনৈতিক সংকট থেকে উত্তরণে দুই বছরের জন্য জাতীয় সরকার গঠন করা উচিত। এতে সরকারবিরোধী দলগুলোর মধ্যে জমে থাকা রাগ-ক্ষোভ অনেকটা কমে যাবে। কিন্তু সরকারের ভয় যদি নির্বাচনে হারে, যেভাবে তারা এখন বিরোধী দলগুলোকে হয়রানি করছে, একইভাবে হয়রানির শিকার হওয়ার শঙ্কা তারাও করছেন। মামলা-মোকদ্দমাও হতে পারে। সেই ভয়ে আছে সরকারের লোকজন।
[৩] জাতীয় সরকার গঠিত হবে আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ সবগুলো রাজনৈতিক দলের সদস্যদের দ্বারা। আলাপ-আলোচনা করে ঠিক করতে হবে কে বা কারা থাকবেন জাতীয় সরকারের সদস্য হিসেবে। জাতীয় সরকারে বিএনপি থেকে খন্দকার মোশাররফ অথবা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সদস্য হিসেবে থাকতে পারেন। বিএনপি জোটের অপর ১৯ দল থেকেও কেউ একজন আসতে পারেন। সিপিবি, বাসদ, জাসদ থেকেও একজন করে থাকতে পারেন। আওয়ামী লীগ-বিএনপি থেকে দু’জন করে সদস্য রাখা যায় জাতীয় সরকারে। নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে এখনো কেন আলাপ-আলোচনা শুরু হয়নি আমি জানি না।
[৪] নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সম্মিলিত বিরোধীদল ঐক্যবদ্ধ হতে না পারার কোনো কারণ নেই। তবে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে কেমন নির্বাচনী ইশতেহার দেয় সম্মিলিত বিরোধী দল। অন্ন, বস্ত্র, শিক্ষা, চিকিৎসা জনগণের দাবি। এই জনপ্রত্যাশা মেটানো খুব কঠিন কোনো কাজ নয়। জনগণ আশ^স্ত হলে বিরোধী দলগুলোকেই তারা ভোট দেবে। তবে জনগণকে আত্মবিশ^াসের সঙ্গে বলতে হবে, আমরা কোনো দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেবো না। কার কী সম্পদ আছে আগেই জানিয়ে দেবো, যাতে আপনারা প্রতিবছরই লক্ষ্য রাখতে পারেন, আমরা চুরি করছি, কী করছি না!
[৫] তারেককন্যা জাইমা রহমান রাজনীতিতে এলে রাজপথে নামার সুযোগ সৃষ্টি হবে বিএনপির। দলটির নেতারা এখন রাস্তায় না নামার যে অজুহাত দিয়ে বেড়াচ্ছেন, আন্দোলনের ব্যাপারে বিভিন্ন সময়ে ‘ঈদের পর আন্দোলন’, ‘রমজানের পর হবে আন্দোলন’ এমন কথাবার্তা বললেও কাজের কাজ কিছুই করছেন না। ...কম সময় আছে নির্বাচনের। এ নিয়ে তো বিএনপি নেতাদের মধ্যে কোনো রকমের উদ্বেগ নেই!
[৬] বিশে^র সব ফ্যাসিস্ট সরকারই সরকারবিরোধীদের রাজপথে নামতে বাধা দেয়। এটা নতুন কোনো ঘটনা নয়। বাধার দেয়াল ভেঙেই জনগণ রাজপথে নামে। দেশে আজকে নিত্যপণ্যসহ সবকিছুর দাম বেড়েই চলছে, মানুষ অসহায়। অনিয়ম-দুর্নীতি হচ্ছে চারদিকে। ১০ হাজার কোটি টাকার পদ্মা সেতু নির্মাণে ৫০ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হচ্ছে। অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে কিংবা জনগণের পক্ষে কি শক্তভাবে দাঁড়াচ্ছেন সরকারবিরোধী নেতারা?
[৭] বিএনপিতে অনেক জ্ঞানী-গুণী মানুষ আছেন, কিন্তু তাদের কোমরে জোর নেই! তারা একজন ফেরেশতার (তারেক রহমান) ওহীর নির্দেশে চলাফেরা করেন। তারেক রহমান এ দেশের আইনে দণ্ডিত, দেশে পা দিতে পারবেন না। যদিও তাঁর বিরুদ্ধে অনেক অন্যায় করা হয়েছে। তিনি দেশে এলে বেধে নিয়ে জেলখানায় ফেলে রাখবে।
[৮] তারেককন্যা জাইমা রহমান রাজনীতিতে এলে বিএনপিকে জাগিয়ে তুলতে পারবেন। কারণ তিনি বয়সে তরুণ। উদ্যোম আছে। জীবনের বড় একটা সময় কেটেছে বিলেতের মতো গণতান্ত্রিক দেশে। জনগণের সঙ্গে তিনি মিশতে পারবেন। জনগণের সঙ্গে তার সম্পর্ক খুব সহজেই তৈরি হবে। বিএনপিকে জাগিয়ে তুলতে জাইমা রহমান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবেন। তারেকপত্নী ডা. জোবাইদা রাজনীতিতে আসার কোনো মানে হয় না। জোবাইদা রাজনীতিতে এলে তারেক রহমানকে খাওয়াবে-পরাবে কে? জোবাইদা তো চাকরি করেন যুক্তরাজ্যে।
[৯] জাইমা বিএনপির রাজনীতিতে সক্রিয় হওয়ার মানে কিন্তু মূল নেতৃত্ব নয়। সহকারী সাংগঠনিক সম্পদক জাতীয় কোনো একটা পদ দিয়ে রাজনীতিতে তাঁকে সক্রিয় করা উচিত। ধীরে ধীরে রাজনীতি শিখবেন। তাঁর প্রতি দেশবাসীর আকর্ষণ ও আগ্রহ রয়েছে। জাইমা রাজনীতিতে সক্রিয় হলে বিএনপি মাথা তুলে দাঁড়াতে পারবে।
[১০] জনগণ এখন তাদের নেতাদের কাছে পান না। বাজারে গেলে লোকজন এসে বলেন, ‘স্যার কিছু একটা করেন’। বলি, আমি তো কোনো রাজনৈতিক দলের নেতা নই। আমি পরামর্শ দিতে পারি, কিন্তু আমার পরামর্শ কেউ নেয় না। বিএনপির ধারণা গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় যাবে তারা। কয়েকজন কর্মকর্তার নিষেধাজ্ঞায় কিছু একটা হয়ে যাবে। এসব বিচ্ছিন্ন ঘটনা দিয়ে কিছু হবে না। দেশ ও জনগণের জন্য আন্দোলন নিজেদেরই করতে হবে। আন্দোলন-সংগ্রাম করলে জনগণ পাশে এসে দাঁড়াবে। গণঅভ্যুত্থানের বাস্তবতা এখন আর বাংলাদেশে নেই। বাইরের কেউ ক্ষমতায় বসাতে পারবেন না, একমাত্র জনগণই বিএনপিকে ক্ষমতায় নিয়ে আসতে পারে। জনগণের সমর্থন চাইলে তাদের পাশে থাকতে হবে বিএনপিকে।
[১১] বিএনপির নতুন নেতৃত্বে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আসতে পারেন। খন্দকার মোশাররফও হতে পারেন। এর বাইরেও অনেকেই আছেন, যাদের বিএনপির নেতৃত্বে নিয়ে আসা যায়।
[১২] বিএনপির জোট থেকে জামায়াতকে বের করে দিতে হবে। জাতির কাছে কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা চাইলেই কেবল সঙ্গে রাখা যায়। ক্ষমা না চাইলে তাদের বলে দেওয়া উচিত, তোমরা তোমাদের মতো করে চলো। ২০ দল থেকে আমরা তোমাদের বের করে দিয়েছি। জামায়াত থাকলে কোনো বাম রাজনৈতিক দল বিএনপির সঙ্গে আসবে না। ড. কামাল হোসেন, বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী কিংবা এরকম আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ নেতা বা দল আসবে না। ইসলামী দলগুলোর সঙ্গেও সম্পর্ক তৈরি করতে হবে বিএনপিকে। ইসলামী দলগুলোকে বুঝিয়ে বলতে হবে, ‘ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করবেন না’।
[১৩] বেগম খালেদা জিয়া শারীরিকভাবে কেমন আছেন আমি জানি না। কারণ এর মধ্যে তাঁর সঙ্গে আমার দেখা-সাক্ষাৎ হয়নি। আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিরোধী রাজনৈতিক মোর্চাগুলোকে কীভাবে নেতৃত্ব দেবেন তিনি?
[১৪] বাইরে থেকে আমরা যা দেখছি, বিএনপির চিন্তাচেতনায় অনেক ভুল আছে। ভুলপথে হাঁটছেন দলের নেতারা। আরাম-আয়েশে আছেন তারা। আন্দোলনের পথে হাঁটছেন না। শুধু কথা বলছেন। এ রকমভাবে চলতে থাকলে বিএনপি মুসলিম লীগের পর্যায়ে চলে যাবে। সারাদেশে দলটির অনেক সমর্থক আছেন। সেই শক্তি যদি ব্যবহার করতে না পারেন, তাহলে যা হওয়ার তাই হবে।
[১৫] রাজনীতিতে অবিশ^াস বাড়িয়ে দিয়েছে সরকার। এটা ইচ্ছাকৃত নাকি অনিচ্ছাকৃত জানি না। কারণ ২০১৪ ও ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচন ছিলো ভাঁওতাবাজির। এটা কেউ অস্বীকার করতে পারবেন না।
[১৬] দেশে ২০১৪ ও ২০১৮ সালের মতো নির্বাচন করতে গেলে দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি হবে। মানুষ ভোট দিতে কেন্দ্রে যাবে না। বিএনপিকে পরিষ্কার করে বলতে হবে, নির্বাচন করলে সবাই মিলে করবো, না হলে কেউ করবো না। সবাই মিলে নির্বাচনকে প্রতিহত করবো। দেড়শ আসন দিয়ে দিতে হবে সম্মিলিত বিরোধীদলগুলোকে। তাহলে বিএনপির প্রতি একটা আস্থা আসবে বিরোধী দলগুলোর নেতাদের।
[১৭] দেশ ভালো নেই। মানুষ স্বস্তিতে নেই। নিত্যপণ্যসহ সবকিছুর দাম বাড়ছে। শিক্ষার্থীদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা বেড়েছে। কোনো কিছুই নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না সরকার। টিসিবির পণ্য এখন শুধু সাধারণ মানুষই কেনে না, মধ্যবিত্ত শ্রেণির লোকদেরও কিনতে দেখা যায়। মধ্যবিত্তও এখন টিসিবির লাইনে দাঁড়ায়। দেশ এখন একটা মাফিয়া স্টেটের দিকে যাচ্ছে, ভালো পরামর্শও শুনছে না সরকার।
[১৮] আমি কী করে বিরোধী রাজনৈতিক নেতা বা দলগুলোর নেতৃত্ব দিতে পারবো? প্রত্যেকটি দলেরই তো নেতৃত্ব আছে। নেতা আছেন। আমি সরকারবিরোধীদের নেতা নই, তাদের সহায়ক শক্তি। আমি তাদের একজন সহযোগী। ড. রেজা কিবরিয়া, নুরুল হক নূর, ভাসানী পরিষদ, গণসংহতি আন্দোলন, রাষ্ট্রচিন্তা তো অত্যন্ত সক্রিয় রাজনীতিতে। তারা চেষ্টা করছে আন্দোলন-সংগ্রামের মাধ্যমে সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে। একলা কোনো নেতা বা রাজনৈতিক দলের ভবিষ্যৎ নেই। ড. রেজা কিবরিয়া এর বাইরে নন। একলা রাজনীতিতে না বিএনপির ভবিষ্যৎ আছে, না আছে রেজা কিবরিয়া, গণসংহতি আন্দোলনের মতো দলগুলোর। সকলের সম্মিলিত উদ্যোগ ছাড়া আওয়ামী লীগের চাণক্য ব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে লেগে তারা পারবেন না।
[১৯] সম্মিলিত বাম রাজনৈতিক দলগুলো ১০ শতাংশ ভোটও জোগাড় করতে পারবে না। তারা কি রাজপথে আছে? কতোটুকু আছে? কোনো চেষ্টাও করছে না। রাজনীতি করবো, জেলে যেতে ভয় পাবোÑএটা তো হয় না। রাজনীতি করতে হলে জেলে যেতে হবে। জেলের ভয় করলে চলবে না। জেলে যেতে হবে, জেলের তালাও ভাঙতে হবে।
[২০] আগামী নির্বাচন নিয়ে বিদেশিদের হস্তক্ষেপের সম্ভাবনা নেই। তবে ভারত এখনই নাক গলাতে শুরু করেছে। সরকারকে বলছে, চীনের কাছ থেকে টাকা নিও না। এটা করো না, ওটা করো না ইত্যাদি। ভারতের আধিপত্যবাদ ও নাক গলানো এ দেশের জনগণ পছন্দ করে না। কিন্তু ভারতের জুজুর ভয় দেখিয়ে আওয়ামী লীগ পুনরায় ক্ষমতায় থাকার চেষ্টা করছে। ইতোমধ্যে তো শেখ হাসিনা বলেছেন, ২০৪১ সাল পর্যন্ত উন্নয়নের জন্য তাঁকে রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকতে হবে।
[২১] কয়েকজন র্যাব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞায় দেশে কোনো পরিবর্তন আসবে না। নিজেরা কাজ করি না, অন্যের ভরসা থেকে কিছু হবে না। জনগণের কাছে বিএনপিকে সোজা বলতে হবেÑ সম্মিলিত বিরোধী দলকে যদি রাষ্ট্রক্ষমতায় আনেন, তাহলে আমরা র্যাব নিষিদ্ধ করে দেবো। গুম, খুন থাকবে না। ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে। সম্মিলিতবিরোধী দল যদি ঘোষণা দেয়, আমরা দুই কোটি পরিবারকে খাদ্য রেশন দেবো, দুই কোটি পরিবারকে বিনে পয়সায় বিদ্যুৎ দেবো, আশ^স্ত হলে মানুষ সাড়া দেবে।
[২২] র্যাবের কোনো ভালো কাজ নেই, ভাঁওতাবাজি আছে! পুলিশের দায়িত্ব পালন কেন র্যাব করবে? পুলিশের কাজও এখন র্যাব করে, কেবল থানার দারোগাগিরি করা ছাড়া। এভাবে হয় না। যদি র্যাবকে রাখতেই চান, তাহলে সব পুলিশ প্রত্যাহার করে নিন। পুলিশের দায়িত্ব পুলিশকেই পালন করতে দিন। এক্সট্রা জুডিশিয়াল কিলিং কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। র্যাবের কর্মকর্তাদের নিষেধাজ্ঞায় বেকুবের নর্তন কীর্তন করে। উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে থাকলে বেকুবের কাজ করেছেন।
[২৩] আগামী দিনের বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জ নিয়ন্ত্রক হচ্ছে বিএনপি ও সম্মিলিত বিরোধী দল। তারা যদি সঠিক চিন্তা করতে পারেন, জনগণের পছন্দ হয় এমন নির্বাচনী ইশতেহার তৈরি করে সঠিক প্রতিশ্রুতি দিতে পারেন, তাহলে বাংলাদেশের অনেক উন্নতি হবে। দুর্যোগ কেটে যাবে। শান্তির দেশ হবে। এখন তো অনেকেই বাংলাদেশ থেকে চলে যাওয়ার চেষ্টা করে, তখন বাইরের দেশ থেকেও এখানে আসতে চাইবে মানুষ। বাংলাদেশের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ আছে, যদি সঠিক রাজনীতি ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়।
[২৪] প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নির্বাচনকালীন সরকারের প্রধান করে আওয়ামী লীগ বা সরকার যদি ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগের প্রস্তাবটি আবারও দেয় তাহলে তা গ্রহণ করা উচিত বিএনপির। আমার ধারণা তারা তা গ্রহণ করবে। প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাব মেনেই আগামী নির্বাচনে যাবে বিএনপি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনেই আগামী জাতীয় নির্বাচনে যাবে বিএনপি।
[২৫] আগামী নির্বাচনে খালি মাঠে গোল দিতে পারবে না আওয়ামী লীগ। নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে। তবে মারধর করার চেষ্টা করলে আওয়ামী লীগেরই ক্ষতি হবে। এমন কিছু না করে সুষ্ঠু নির্বাচন করাটাই হবে আওয়ামী লীগের জন্য বুদ্ধিমানের কাজ। আমার মনে হচ্ছে, আগামী জাতীয় নির্বাচন ভালো হবে। জালভোট অনেকাংশেই কমে যাবে। তবে নির্বাচন কমিশনকে কিছু কাজ করতে হবে। তাদের প্রত্যেক প্রার্থীর হলফনামা প্রকাশ করে দিতে হবে। টাকার খেলাটাও বন্ধ করতে হবে।
[২৬] দেশের অর্ধেকের মতো লোক বিএনপির সমর্থক। আওয়ামী লীগ, ওয়ার্কাস পার্টি ও ইনু সাহেবের দল নিয়ে নির্বাচন হলে তো কেউ মানবে না। বিগত নির্বাচনে সিপিবি, গণফোরাম, বিকল্পধারা, কাদের সিদ্দিকী ও আ স ম রব-এর দলসহ অনেক দলই সেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেনি। আগামী নির্বাচনে যদি এসব দলকে বাইরে রেখে হয়, তাহলে তা কেউ মানবে বলে মনে হয় না।
[২৭] রাজনীতি এখন সরকারের হাতে। সরকার যদি মনে করে খালি মাঠে গোল দিবে তাহলে অত্যন্ত ভুল কাজ হবে। সরকারের এক নম্বর কাজ হবে দেশে সুষ্ঠু একটা নির্বাচন দেওয়া। দুটি দল ছাড়া প্রায় প্রতিটি দলই বলেছে, সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে সেনাবাহিনীকে নিয়োগ করতে হবে। তবে তাদের ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার দেওয়ার দরকার নেই। তাহলে সুষ্ঠু নির্বাচনের সম্ভাবনা বাড়বে। এবং সেটি করাও উচিত।
[২৯] সুশাসনের জন্য দরকার সুষ্ঠু নির্বাচন। এখন যে শাসন চলছে, কথায় কথায় মামলা দেওয়া হচ্ছে। ধরে নিয়ে যাওয়া হয়। গুম করে দেওয়া হয়। এসব কোনোমতেই ভালো লক্ষণ নয়। সকল দলকে নিয়ে আগামী জাতীয় নির্বাচন করতে হবে। বিএনপি একটা মিটিং করতে চায়, সেটারও অনুমতি দেওয়া হয় না। এটা কেমন কথা। এসব ক্ষমতার অপব্যবহার ছাড়া কিছু নয়।
[৩০] ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করেনি। সেটা নিয়ে এখন বলার আর কিছু নেই। তবে ওই সময় প্রধানমন্ত্রী একটা ভালো প্রস্তাব দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, নির্বাচনকালীন সরকারের নেতৃত্বে উনি থাকবেন, বিএনপি যেকোনো মন্ত্রণালয় নিতে পারে। প্রধানমন্ত্রী মান্যগণ্য মানুষ, তার কথার তো হেরফের হতে পারে না। যেটা তিনি ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে বলেছিলেন, সেই প্রস্তাব এখনো থাকতে পারে। সেই ভিত্তিতেই নির্বাচনকালীন সরকার হবে, তাতে অসুবিধা কোথায়।
[৩১] এ দেশ এখন অসুস্থ। এই দেশ এখন ‘মাফিয়া রাষ্ট্রে’র দ্বারপ্রান্তে! এখানে এখন নানান অপকর্ম হচ্ছে। ক্ষমতার অপব্যবহার করে অনিয়ম-দুর্নীতি হচ্ছে দেদারছে। এখানে মানুষের সামাজিক মর্যাদা দেখে বিচার-আচার করা হয়। নেভির একজন সদস্যকে মারধরের ঘটনায় হাজী সেলিমপুত্র জেলখানায় আছে। এটা ভালো খবর। কিন্তু নেভির সদস্য না হয়ে সাধারণ কেউ হলে কি বিচার পেতো? একজন রিকশা চালককে যখন চড়-থাপ্পর মারা হয় পথেঘাটে, সে কি তখন প্রতিকার পায়? একজন পুলিশ চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে গেছেন, তাকে পিটিয়ে মেরে ফেলা হলো। ধর্ম অবমাননার অভিযোগে একজন মানুষ পিটিয়ে হত্যা করে পুড়িয়ে দেওয়া হলো। এ কোন রাষ্ট্রে আমরা বসবাস করছি? রাষ্ট্রের অসুস্থতার সব লক্ষণই এখন দেশে বিদ্যমান।
[৩২] অনেকেই বলেন, সরকার সিদ্ধান্ত গ্রহণে অনেক ভুল করছে। সরকার আসলে ভুল করছে না, ইচ্ছেকৃতভাবে একেক সময় একেকটি ইস্যু তৈরি করছে মানুষের মনোযোগ ভিন্ন দিকে প্রবাহিত করার জন্য। সরকারের পায়ের নীচে আসলে মাটি নেই, তাই বিরোধী দলগুলোর শ^াস বন্ধ করে রেখেছে তারা। কথা বলতে দিচ্ছে না। ভয়-ভীতি দেখিয়ে হাজার হাজার বিরোধী নেতাকর্মীকে জেলে ঢুকিয়ে রাখা হয়েছে। তারপরও বিরোধী দলগুলোকে আরও অনেক বেশি সোচ্চার হওয়া দরকার ছিলো। আমার কাছে অনেকেই পরামর্শ চায়, পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে করণীয় কী? আমি বলেছি, রাস্তায় নামতে হবে। ঘরে বসে থাকলে হবে না।
[৩৩] বিএনপি-চারদলীয় জোট আর আওয়ামী লীগ সরকারের কৌশল ভিন্ন ছিলো এবং আছে। বিএনপি সরকার আওয়ামী জোটের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার, নানাভাবে হয়রানি করেছে, কিন্তু বিরোধী দলকে রাস্তায় নামতে দিয়েছিলো। এটা তারা বন্ধ করেনি। গুলি করে মারেনি, তবে গ্রেপ্তার করেছে। আওয়ামী লীগ সরকার পুলিশকে অনেক বেশি ব্যবহার করছে বিএনপির তুলনায়। আজকের নিপীড়নের মাত্রাছাড়া পরিস্থিতি কেন? কারণ দেশে আইনের শাসন নেই।
[৩৪] পুলিশ দেখছে, চোর-ডাকাতদের পেছনে ছুটে লাভ কম, কিন্তু একজন রাজনৈতিক নেতাকর্মীর পকেটে ইয়াবা ঢুকিয়ে মামলা ঠুকে দিলে লাভ বেশি! ডিজিটাল আইনে ফেললে তার জামিন হয় না। লুটপাট এই সরকারের সময় অনেক বেশি হচ্ছে। সরকারের কাছে অনেক ফান্ড আছে। অর্থের অভাব নেই। সরকারের টাকা চুরি করেছে ব্যাংকগুলো। বিএনপি এতোটা বোঝেনি আগে।
[৩৫] বিএনপির বড় ব্যর্থতা হচ্ছে তাদের ভালো কোনো নেতা নেই। দলটির একজন নেতা থাকেন বিলেতে, ঠাণ্ডার দেশে। সর্দি-কাশি হয় কিনা কে জানে! অপর দিকে বেগম খালেদা জিয়া জেলের ঘানি টানছেন। জেল খেটে এখন জামিনে আছেন। অনেক দিন জেলে থেকে মনোবল হারিয়েছেন। অথচ বেগম খালেদা জিয়া খুব জনপ্রিয় একজন রাজনৈতিক নেত্রী।
[৩৬] অনুমতি নিয়ে কখনো রাজনীতি হয় না। রাজনীতি মানে হচ্ছে স্বাধীনতা। মুক্ত আবহাওয়া দরকার। তারেক রহমান একজন রাজনৈতিক নেতা, হয়তো ভালো প্রধানমন্ত্রীও হতে পারবেন, কিন্তু এতো দূরে বসে, স্কাইপের মাধ্যমে নেতাকর্মী কিংবা প্রায় ১৭ কোটি মানুষকে উজ্জীবিত করতে পারবেন না। আমার মতে, নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তার বলা উচিত, আপনাদের যা ভালো মনে হয়, তার প্রতি আমার পূর্ণ সমর্থন থাকবে। ভুল করলে আমি আমার অভিমত দেবো। কিন্তু তার কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে রাজনীতির মাঠে নামতে হচ্ছে দলটির নেতাকর্মীদের!
[৩৭] তারেক রহমানের বিরুদ্ধে সরকারদলীয় জোটের নেতাকর্মীরা নানান অপবাদ দিচ্ছে। বলা হয়, লন্ডনে বসে তারেক রহমান মনোনয়ন বাণিজ্য করেছেন। কিন্তু আমি তা বিশ^াস করি না। তবে অনেকেই তা বিশ^াস করেন। ফলে দূরে বসে তার রাজনীতি করা অত্যন্ত কঠিন হবে।
[৩৮] জনসম্মুখে না আসা পর্যন্ত বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান বিএনপির কোনো দায়িত্বে থাকা উচিত নয়। কারণ বেগম খালেদা জিয়া অসুস্থ, তিনি এখনো কারামুক্ত নন। জামিনে আছেন। আর তারেক রহমান লন্ডনে। তার বিরুদ্ধে অনেক মামলা আছে। তিনি দেশেও আসছেন না। ওখানে বসেও কিছু করতে পারছেন না। তাহলে তাকে দলে রেখে কী লাভ?
[৩৯] নেতাকর্মীরা আশা করেছিলেন, বেগম জিয়া প্রতিদিন কারও না কারও সঙ্গে দেখা করবেন। কিন্তু সেটা হচ্ছে না। ফলে তিনি মানসিকভাবে আরও দুর্বল হয়ে যাচ্ছেন। ৬ মাস পর বেগম খালেদা জিয়ার কথা কেউ মনে রাখবে না।
[৪০] পথে-ঘাটে দৌড়াতে পারে বিএনপির এমন একজন সক্রিয় নেতা প্রয়োজন, যার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই। কথা বলতে পারে। নেতাকর্মীদের সুখ-দুঃখের কথা শোনার মতো মন-মানসিকতা আছে। বিএনপিকে জাগিয়ে তুলতে হলে তারেক রহমান কন্যা জাইমা রহমানকে নেতৃত্বে নিয়ে আসতে হবে। জাইমা অনেক তরুণ, ২৫ বছরের কম তার বয়স। অনেক বেশি দৌড়াদৌড়ি করতে পারবে। শেখ হাসিনার যোগ্য প্রতিদ্বন্দ্বী হওয়ার সুযোগ রয়েছে তার। তাকে নেতৃত্বে নিয়ে এলে আগামী ২ বছরের মধ্যে রাষ্ট্রক্ষমতায় চলে আসবে বিএনপি। তাতে মানুষের লাভ হবে কিনা জানি না, তবে ক্ষমতায় আসবে দলটি। জাইমা এসে পথেঘাটে নামলে পরিবর্তন আসবে। কিন্তু রাজপথে আন্দোলন-সংগ্রাম করতেই হবে, আন্দোলন না করলে বিএনপি রাষ্ট্রক্ষমতায় আসতে পারবে না।
[৪১] বিএনপির মহাসচিব ভালো কাজ করছেন। তবে তার হাতপা বাঁধা! দলটির এখন এক নম্বর কাজ হচ্ছে, জাইমাকে নেতৃত্ব দিয়ে দেশে আনা। কাউন্সিল দ্বারা তাকে নেতৃত্বে আনতে হবে।
[৪২] বাংলাদেশের গণতন্ত্র এখন কবরে, মাটিচাপা দেওয়ার বাকি কেবল। এর জন্য মূলত সরকার দায়ী, অন্যদেরও কিছুটা দায় আছে। আমরা খুব খারাপ পথে পা বাড়িয়েছি। উন্নয়নের নামে ধাপ্পাবাজি করছি। আমাদের যাতনা বেড়েছে, এ যাতনা কমানো সম্ভব। এজন্য সকল রাজনৈতিক দলকে রাজপথে নামতেই হবে। সংলাপে বসতে হবে। কথাবার্তা, আলাপ-আলোচনা কিংবা সংলাপ করলে অনেক সংকট সহজে সমাধান করা সম্ভব। অথবা সমাধানের পথ খুলে যায়। সুস্থ ধারার রাজনৈতিক চর্চা দলগুলো করতেই হবে। এর কোনো বিকল্প নেই।
[৪৩] বাম রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে গণতন্ত্র নেই। বিএনপি, আওয়ামী লীগ আর বাম দলগুলোর মধ্যে কি এখন কোনো তফাৎ আছে? সিপিবির মনজুরুল আহসান খানের পর মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম দীর্ঘদিন দলটির সভাপতি ছিলেন। এটা কি গণতন্ত্র? বাম পার্টিগুলোর মধ্যেও গণতন্ত্র নেই। তাদের আর্থিক সংগতিও নেই। ফলে তারা তাদের বক্তব্য প্রচার করতে পারে না। যেটা বিএনপি-আওয়ামী লীগের আছে। গণমাধ্যমগুলোতে বামদলগুলোর খবর কতোটুকু থাকে?
[৪৪] মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম টাই পরেন না, আওয়ামী লীগ-বিএনপির নেতারা টাই পরেনÑ পার্থক্য এতোটুকুই। বাম দলের নেতারা কঠিন করে লেখালেখি করেন। মানুষের কল্যাণের কথা বললেও তাদের কথা সাধারণ মানুষ বুঝতেই পারে না। এটা তাদের অনেক বড় দুর্বলতা। দুর্বলতার সমাধান তাদেরই বের করতে হবে।
[৪৫] দুনিয়ার ধর্ম পরিবর্তন। আমরা যদি সকলে সর্বাত্মকভাবে চেষ্টা করি, তাহলে ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে। মানুষে মানুষে বৈষম্য কমে আসবে। হানাহানি-মারামারির পরিবেশও থাকবে না। কিন্তু পরিস্থিতি ইতিবাচক ধারায় ফেরাতে না পারলে অনেক বেশি মূল্য দিতে হবে। এই মূল্য কতো বেশি তা সময়েই বলে দেবে।
আরও সংবাদ
চ্যাম্পিয়ন ভারত : একটা ছোট মুহূর্ত কতো বড় পার্থক্য গড়ে দিতে পারে
‘ওই ক্যাচ হয়নি, সুরিয়াকুমারকে আবার ক্যাচ ধরতে হবে’!
কতো দেশ, কতোবার কাপ জিতলো, আমাদের ঘরে আর কাপ এলো না!
সংগীতাচার্য বড়ে গোলাম আলি খান, পশ্চিমবঙ্গের গর্ব সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় ও আমি
ইন্ডিয়ান বুদ্ধিজীবী, ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্র ও দেশের বুদ্ধিজীবী-অ্যাক্টিভিস্ট
মতিউর প্রতিদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ৮৩ ব্যাচের বন্ধুদের গ্রুপে সৎ জীবন যাপনের উপদেশ দিতেন!

চ্যাম্পিয়ন ভারত : একটা ছোট মুহূর্ত কতো বড় পার্থক্য গড়ে দিতে পারে

‘ওই ক্যাচ হয়নি, সুরিয়াকুমারকে আবার ক্যাচ ধরতে হবে’!

কতো দেশ, কতোবার কাপ জিতলো, আমাদের ঘরে আর কাপ এলো না!

সংগীতাচার্য বড়ে গোলাম আলি খান, পশ্চিমবঙ্গের গর্ব সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় ও আমি

ইন্ডিয়ান বুদ্ধিজীবী, ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্র ও দেশের বুদ্ধিজীবী-অ্যাক্টিভিস্ট
