প্রকাশিত: Thu, Apr 20, 2023 4:27 AM আপডেট: Tue, Jun 24, 2025 11:11 PM
মানুষের বাক ও চিন্তার স্বাধীনতার পক্ষে অবস্থান নিন
ইমতিয়াজ মাহমুদ : সেলিনা শেলি তাঁর ফেসবুকে রোজার মাসের নয়া নাম ‘রামাদান’ নিয়ে ঠাট্টা করে একটা পোস্ট লিখেছিলেন। এ কারণে চট্টগ্রাম বন্দর মহিলা কলেজের অধ্যক্ষের পদ থেকে তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে এবং তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় মোকদ্দমা রুজু করা হয়েছে। শেলিকে যে পত্রের মাধ্যমে বরখাস্ত করা হয়েছে সেটার কপি ফেসবুকে ঘুরে বেড়াচ্ছে। সেই পত্রে ওরা লিখেছে, যেহেতু এই পোস্টের বিপরীতে অনেকে তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে এবং কিছু লোক মিছিল করেছে, সেজন্যে শেলিকে শেলির বিরুদ্ধে এই ব্যবস্থা। আমি ভেবে পেলাম না, কিছু লোক মিছিল করে এবং ফেসবুকে মন্তব্য ইত্যাদি করে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে, সেটা শেলির অপরাধ হয় কী করে? নাকি কিছুসংখ্যক লোক মিছিল করলেই একজন অধ্যক্ষকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করে ফেলতে হবে?
বন্দর কর্তৃপক্ষের অভিযোগের ভুলত্রুটি এইসবের কথা বাদ দেন। মূল নীতিগত প্রশ্নটা তোলেন। একজন অধ্যাপিকা, যিনি একজন লেখক ও কবিও বটে, তিনি ফেসবুকে নিতান্ত হালকা মেজাজের একটা পোস্ট লিখেছেন। সেই পোস্টের কন্টেন্ট যাইই হোক, এর জন্যে চাকরি থেকে বেড় করে দেওয়া কি অন্যায় নয়? অবশ্যই অন্যায়? একদম বেওকুফি ধরনের অন্যায়। এটা শুধু শেলির প্রতি অন্যায় না, এটা রাষ্ট্রের সকলের নাগরিকের প্রতি অন্যায়, নাগরিকদের বাক ও চিন্তার স্বাধীনতার লঙ্ঘন এবং চূড়ান্ত বিচারে মুক্তিযুদ্ধের চেতনারও লঙ্ঘন বটে। যেকোনো ঘটনা নিয়ে বা সামাজিক প্রবণতা বা প্রপঞ্চ নিয়ে একজন কবি বা একজন অধ্যাপক বা যেকোনো নাগরিক সাধারণভাবে যেকোনো মতামত প্রকাশ করতে পারে। প্রকাশের নানারকম ভঙ্গি হয় ধরন হয়। অনেক লোক সেইসব মতামত পছন্দ নাও করতে পারে। এমনকি দেশের সকল মানুষ মিলেও সেই মতামতের বিরোধ করতে পারে।
তথাপি কেবল মতামত প্রকাশের জন্যে একজন লেখক অধ্যাপককে শাস্তি দেওয়া যায় না। এটা শুধু অন্যায় নয়, অবৈধও বটে। আমি অবিলম্বে শেলির বিরুদ্ধে গৃহীত এই অন্যায় পদক্ষেপের প্রত্যাহার দাবি করি। দাবি করি যে এইরকম হয়রানির জন্যে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ যেন কবির কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে। যে সকল বন্ধুরা সরকারের প্রতি সমর্থনের কারণে স্পষ্ট করে নিঃশর্তভাবে বাক ও চিন্তার স্বাধীনতার পক্ষে অবস্থান নিতে দ্বিধা করেন বা মানুষের কণ্ঠ রুদ্ধ করাকে সমর্থন করেন, ওদেরকে বলিÑ আপনারা ভুল করছেন। মারাত্মক ভুল। কেননা মানুষের স্বাধীনতা হরণ করাকে যখন আপনি সমর্থন করবেন, এর বিষাক্ত ফল একদিন আপনাকেও ভক্ষণ করতে হবে। আপনি যদি আমার স্বাধীনতার পক্ষে কথা না বলেন তাইলে প্রকৃত প্রস্তাবে আপনি আপনার নিজের স্বাধীনতা হরণের অধিকার তুলে দিচ্ছেন কর্তৃপক্ষের হাতে। আপনি নিজে পরাধীনতা মেনে নিচ্ছেন, আত্মসমর্পণ করছেন। আপনি যদি স্বাধীনতার পক্ষের মানুষ হয়ে থাকেন, স্পষ্ট উচ্চারণে মানুষের বাক ও চিন্তার স্বাধীনতার পক্ষে অবস্থান নিন। অন্যায়ের প্রতিবাদ করুন। লেখক: আইনজীবী। ফেসবুক থেকে
আরও সংবাদ
চ্যাম্পিয়ন ভারত : একটা ছোট মুহূর্ত কতো বড় পার্থক্য গড়ে দিতে পারে
‘ওই ক্যাচ হয়নি, সুরিয়াকুমারকে আবার ক্যাচ ধরতে হবে’!
কতো দেশ, কতোবার কাপ জিতলো, আমাদের ঘরে আর কাপ এলো না!
সংগীতাচার্য বড়ে গোলাম আলি খান, পশ্চিমবঙ্গের গর্ব সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় ও আমি
ইন্ডিয়ান বুদ্ধিজীবী, ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্র ও দেশের বুদ্ধিজীবী-অ্যাক্টিভিস্ট
মতিউর প্রতিদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ৮৩ ব্যাচের বন্ধুদের গ্রুপে সৎ জীবন যাপনের উপদেশ দিতেন!

চ্যাম্পিয়ন ভারত : একটা ছোট মুহূর্ত কতো বড় পার্থক্য গড়ে দিতে পারে

‘ওই ক্যাচ হয়নি, সুরিয়াকুমারকে আবার ক্যাচ ধরতে হবে’!

কতো দেশ, কতোবার কাপ জিতলো, আমাদের ঘরে আর কাপ এলো না!

সংগীতাচার্য বড়ে গোলাম আলি খান, পশ্চিমবঙ্গের গর্ব সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় ও আমি

ইন্ডিয়ান বুদ্ধিজীবী, ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্র ও দেশের বুদ্ধিজীবী-অ্যাক্টিভিস্ট
