মাহমুদুল হাসান : মহানগর-১ ও মহানগর-২ এর চেয়ে বেশি জমে উঠছে মহানগর এর পরিচালক নিপুন আশফাকের ব্যাক্তিগত গল্প। একেকটা স্কিনশট বের হচ্ছে আর সৃষ্টি হচ্ছে সাসúেন্স। মহানগর-২ রিলিজ হওয়ার পর বিএনপি-জামায়াত, বাম, সুশীল ও সাধারণ জনগণের কাছে পরিচালক নিপুন হয়ে উঠেন অসাধ্যকে সাধ্য করা হিরো। যেই কথা দর্শক ফেসবুকে লিখতে সাহস পায় না, কমেন্টে বলতে পারে না এমন অসংখ্য গল্প নিয়ে বানিয়ে ফেলছে ১৪ পর্বের বিশাল দুই ওয়েব সিরিজ। চারিদিকে বাহবা আর বাহবা। 

বিরোধীদলগুলো খুশি হলে স্বাভাবিকভাবেই সরকার ও প্রসাশন শিবিরে তখন অসন্তোষ। বিশেষ করে পুলিশ প্রসাশনে। অনেক বড় বড় অফিসার সুকৌশলে এর সমালোচনাও করেন। যেহেতু সিরিজটি ইতোমধ্যে দর্শক জনপ্রিয়তা পেয়েছে সেহেতু বেশি কড়া ভাষায় কিছু বলা সম্ভব না। এরপর আশফাক নিপুনের ১০ বছর আগের একটা স্ট্যাটাস ভাইরাল হয়। সেখানে ডক্টর ইউনূসের পক্ষে দাঁড়িয়ে শেখ হাসিনার সামালোচনা করতে দেখা যায়। ফলে দর্শক মনে করে নিপুন বিএনপিপন্থী। ফলে ঘটনায় উত্তেজনা বৃদ্ধি পায়। তখন সরকার দলের এক্টিভিস্টরা এক্টিভ হয়। ঝাপিয়ে পড়েন নিপুনের বিরুদ্ধে। তেলে ঘি ঢেলে দেন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সিদ্দিকি নাজমুলের একটা পোস্ট। তিনি নিপুনকে উদ্দেশ্য করে বিএনপির আমলের নানান ঘটনা নিয়ে ওয়েব সিরিজ বানাতে বলেন। এরপর একের পর এক নিপুনের সরকারবিরোধী স্ট্যাটাস ভাইরাল হতে থাকে। পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছিলো, নিপুন আশফাক গ্রেফতার হয়ে যেতে পারেন যেকোনো সময়। 

ঘটনা আবার অন্যদিকে মোর নিতে থাকে। জামায়াত-শিবিরপন্থীরা খুঁজে খুঁজে আশফাক নিপুনের আরও আমলনামা বের করে। তাতে দেখা যায় আশফাক নিপুন ২০১৩ সালের শাহবাগ আন্দোলনের সময় জামায়াত-শিবিরের বিরোদ্ধে খুবই সোচ্চার ছিলেন। রাজাকারদের ফাঁসির দাবিতে মাঠে নেমেছিলেন, অনলাইনেও বেশ সোচ্চার ছিলেন। একে একে সেই সব স্ট্যাটাস ছড়িয়ে দিতে থাকে জামায়াতপন্থিরা এবং এটাই এখন চলছে। এসব দেখে সরকারপন্থি এক্টিভিস্টরা এখন চুপ মেরে আছে। জামায়াতপন্থিরা এখন আশফাক নিপুনকে শাহাবাগ শাহবাগী বলে বয়কট করছে। 

সব ঘটনা দেখে মনে হচ্ছে সরকার ও প্রসাশনের হাত থেকে জামায়াতপন্থিরাই এবারের মতো আশফাক নিপুনকে বাঁচিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। সব দেখে আমি আশফাক নিপুন সাহেবকে একটা আইডিয়া দিতে পারি। মহানগর-৩ বানানোর আগে শাহবাগ আন্দোলন নিয়ে ৭ পর্বের একটা সিরিজ বানান। বিশ্বাস করেন, ইতিহাস রচনা হবে ইতিহাস। এটা আপনাকেই বানাতে হবে, অন্য কেউ বানালে চলবে না। ফেসবুক থেকে