প্রকাশিত: Thu, Apr 27, 2023 3:53 PM আপডেট: Tue, Jun 24, 2025 6:54 PM
মধুমিতায় এক টিকিটে দুই ছবি এবং ‘অতি ভালো স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী’
হাসান শান্তনু : নায়িকা বুবলিকে সরাসরি ‘দর্শনের’ সুযোগ না ঘটলে অনেক দর্শকের সিনেমা দেখার টিকিটের খরচটা জলে ভেসে যেতো! রোববারের সান্ধ্য প্রদর্শনী, ঢাকার মধুমিতা ছবিঘর। সিনেমার নাম, ‘লিডারÑ আমিই বাংলাদেশ’। শাকিব খান, বুবলি, মিশা সওদাগর অভিনীত। মুক্তি পায় ঈদের দিনে। সরকার বা প্রশাসনের দায় জনগণের কাঁধে চাপানোর বুদ্ধিনীতি কিছু মানুষকে গেলানোর লক্ষ্যে নির্মিত সিনেমাটা। বছরের পর বছর ধরে একটা এলাকার (সিনেমায় শাকিব এর বাসিন্দা) রাস্তা ভাঙাচোরা। খানাখন্দে ভরা, চলাচলের অযোগ্য। স্থানীয় ‘জনপ্রতিনিধি’ সেটা সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন প্রতিবছর। তবে সংস্কার হয় না।
একপর্যায়ে শাকিব, তার সাঙ্গপাঙ্গরা রাস্তার সংস্কার করেন। শাকিবের বক্তব্য, ‘সরকার অনেক বড় কাজ নিয়ে ব্যস্ত। সরকার কোনো এলাকার রাস্তা নির্মাণ, সংস্কারের কাজ করবে কেন’? নায়ক শাকিবের যেমন স্থানীয় সরকারব্যবস্থা সম্পর্কে প্রাথমিক ‘জ্ঞান’ ঠনঠনে, তেমনই এ সিনেমার কাহিনি লেখকও ওই সরকারব্যবস্থার বিষয়ে ধারণা রাখেন না। দেশের রাজনৈতিক বাস্তবতা সিনেমাটায় তুলে ধরা হয়েছে সরকারের সঙ্গে সুর মিলিয়ে। পরিচালক কেন সেই পথে হাঁটলেন, তা তিনিই ভালো বলতে পারবেন। অবশ্য কেউ চাইলেই পাশের দেশের বলিউড, দক্ষিণ ভারতের সিনেমার মতো দেশের প্রকৃত রাজনৈতিক বাস্তবতা তুলে ধরতে পারবেন না।
যা শুধু বর্তমানের সরকার নয়, যেকোনো সরকারের আমলেই সত্য। পুলিশ কর্মকর্তা সম্পর্কে সামান্য সমালোচনা থাকায় কয়েক বছর আগেও শাকিব খানের এক সিনেমা সেন্সর বোর্ডের ছাড়পত্র পায়নি। বলিউড বা দক্ষিণ ভারত সিনেমা শিল্পের বেলায় এমন হাল্কা দিক নিয়ে ভেবে সময় নষ্ট করে না। দক্ষিণী সুপারস্টার থালাপতি বিজয়ের সাম্প্রতিক এক সিনেমায় তিনি প্রবাসী শিল্পপতি। দেশে আসেন এক নির্বাচনের আগে, ভোট দিতে। ভোটের দিন কেন্দ্রে গিয়ে জানতে পারেন, ‘আগের রাতেই’ তার ভোট দেওয়া হয়ে গেছে। এরপর জনগণের ভোটাধিকার ফিরে পেতে তিনি শুরু করেন আন্দোলন। এ আন্দোলন, ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা সিনেমার মূলগল্প। এমন গল্পের সিনেমা এ দেশে বানালে সরকারের ‘ছাড়পত্র’ কি আদৌ পাবে?
‘লিডারÑ আমিই বাংলাদেশ’ সিনেমায় শহীদুজ্জামান সেলিম অভিনয় করেছেন ‘অতি ভালো স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী’র চরিত্রে। সিনেমার আদর্শিক চরিত্রের এমন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দেশের মানুষ কোনো সরকারের আমলে পাননি, এটা প্রায় নিশ্চিত করে বলা যায়। ব্যক্তিগত জীবনে কোনো মানুষই এতো ‘ভালো’ হতে পারেন না। সিনেমার সব দৃশ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর গায়ে মুজিব কোট ছিলো। এর মধ্য দিয়ে নিশ্চয়ই এমন বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে যে, তিনি আওয়ামী লীগের নেতৃত্বের কোনো সরকারের আমলের মন্ত্রী। সিনেমায় ছোট গল্পকে অযথা টেনে লম্বা করা হয়েছে। স্পষ্ট কাহিনি বা পরিণতির দিকে যতো সহজে চরিত্রগুলোকে নিলে গল্পটা আরো উপভোগ্য হতো, পরিচালক তা করতে যথারীতি ব্যর্থ হয়েছেন।
সিনেমা শেষ হওয়ার চল্লিশ মিনিট আগে মধুমিতায় দলবল, কতিপয় ইউটিউবার, রিপোর্টার নিয়ে হাজির হন বুবলি। একেবারে পর্দার সামনে গিয়ে দাঁড়ান। আসন ছেড়ে অনেক দর্শক চলে আসেন পর্দার কাছে। শুরু হয় হট্টগোল, চিৎকার, চেঁচামেচি। বুবলি প্রায় পনেরো মিনিট অবস্থান করেন মধুমিতায়। এ সময়ে সিনেমার প্রদর্শন বন্ধ থাকেনি। যারা বুবলিকে দেখে, মানে এক টিকিটে দুই ছবির মধ্য দিয়ে টিকিটের খরচ উশুল করেন, তাদের কথা ভিন্ন। যারা শুধু সিনেমার গল্পটা উপভোগ করতে ছবিঘরে ছিলেন, তাদের উপভোগে ছেদ ঘটে বুবলির উপস্থিতিতে। ছবিঘরে অভিনেতা, অভিনেত্রীদের উপস্থিতি তাদের সিনেমার প্রচারণার অংশ। তবে তা আরো গোছানো, পরিকল্পিত হোক। তা যেন কোনো দর্শকের সিনেমা উপভোগে বাধা না হয়। লেখক: সাংবাদিক। ফেসবুক থেকে
আরও সংবাদ
চ্যাম্পিয়ন ভারত : একটা ছোট মুহূর্ত কতো বড় পার্থক্য গড়ে দিতে পারে
‘ওই ক্যাচ হয়নি, সুরিয়াকুমারকে আবার ক্যাচ ধরতে হবে’!
কতো দেশ, কতোবার কাপ জিতলো, আমাদের ঘরে আর কাপ এলো না!
সংগীতাচার্য বড়ে গোলাম আলি খান, পশ্চিমবঙ্গের গর্ব সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় ও আমি
ইন্ডিয়ান বুদ্ধিজীবী, ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্র ও দেশের বুদ্ধিজীবী-অ্যাক্টিভিস্ট
মতিউর প্রতিদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ৮৩ ব্যাচের বন্ধুদের গ্রুপে সৎ জীবন যাপনের উপদেশ দিতেন!

চ্যাম্পিয়ন ভারত : একটা ছোট মুহূর্ত কতো বড় পার্থক্য গড়ে দিতে পারে

‘ওই ক্যাচ হয়নি, সুরিয়াকুমারকে আবার ক্যাচ ধরতে হবে’!

কতো দেশ, কতোবার কাপ জিতলো, আমাদের ঘরে আর কাপ এলো না!

সংগীতাচার্য বড়ে গোলাম আলি খান, পশ্চিমবঙ্গের গর্ব সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় ও আমি

ইন্ডিয়ান বুদ্ধিজীবী, ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্র ও দেশের বুদ্ধিজীবী-অ্যাক্টিভিস্ট
