প্রকাশিত: Sat, Apr 29, 2023 4:27 PM
আপডেট: Tue, Jun 24, 2025 3:58 PM

প্রিয় বাংলাদেশ, তোমাকেই বেশ মনে পড়ছে

আমিনুল ইসলাম : লাইসেন্স পাবার পর আমি মার্সিডিজ বেঞ্জ গাড়ি কিনেছি। তবে গাড়ি চালাতে আমার ভালো লাগে না। বেশির ভাগ সময় বাসে করেই ইউনিভার্সিটিতে যাওয়া-আসা করি। কেউ আবার ভাববেন না-মার্সিডিজ গাড়ি কিনেছি বলে আমি বড়লোক। এসব দেশে রাস্তায় ভায়োলিন বাজিয়ে যারা ভিক্ষা করে, তারাও মার্সিডিজ গাড়ি চালিয়ে ঘুরে বেড়ায়। পুরাতন গাড়ির দাম এখানে অনেক কম। 

গাড়ি চালানোর সময় মনে হলো, ঢাকা শহরে আমার নিজের কোনো গাড়ি নেই (পৈত্রিক সূত্রে প্রাপ্ত কোনো কিছুই শুধু আমার নয়। সেখানে ভাই-বোন সবার অধিকার আছে)। কোথাও যেতে হলে রিক্সা, সিএনজি কিংবা উবারে করেই বেশির ভাগ সময় যাওয়া হয়। এরপরও ঢাকা শহর এবং সেখানকার মানুষ গুলোকেই আমার বেশি ভালো লাগে। আহা, আর কিছু না। দেশটার সিস্টেমগুলো যদি ঠিক হয়ে যেত। তাহলেই চলত। কী চমৎকার দেশ আমাদের। মানুষগুলো দুই বেলা ভালো-মন্দ খেতে পারে না। এরপরও হাসি মুখে বলবে, ‘খেয়ে যান দুটো ভাত আমাদের সঙ্গে’। আমি ঢাকা শহরের বস্তিতেও গিয়েছি নিজের কাজের জন্য। এরাও কত আন্তরিক। হাসিমুখে বলবে, ‘এক গ্লাস পানি হলেও খেয়ে যান’। এমন দেশ জগতে আর কোথাও আছে কিনা আমার জানা নেই। 

এখানে সেদিন আমার পরিচিত সাদা চামড়া, নীল চোখের এক ভদ্রমহিলা বলছিল, এটা একটা জীবন হলো। বছরে যদি চার-পাঁচবার বিদেশ ভ্রমণে যেতে না পারি। তাহলে আর জীবন কীসের? তাকে দেখে মনে হচ্ছিল, তার জীবনে কোনো আনন্দ নেই। অথচ সে বছরে অন্তত এক-দুইবার নিশ্চিতভাবেই বিদেশ ভ্রমণে যায়। সারা বছর তো বার-পাব রেস্তরাঁ লেগেই আছে। এরপরও সে সুখি না। 

এত চমৎকার আমাদের পরিবেশ। যেকোনো সময় সাধারণ একটা টি-শার্ট গায়ে দিয়ে বের হয়ে যাওয়া যায়। অথচ এইসব দেশে বের হবার আগে ১০টা জিনিস গায়ে দিতে হয়। নইলে ঠান্ডায় টেকা মুশকিল। শুধু আমাদের সিস্টেমগুলো যদি ঠিক হয়ে যেত। তখন হয়তো সত্যিই আমরা বলতে পারতাম, ‘এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি’। প্রিয় বাংলাদেশ, উজবেকিস্তানের ঐতিহাসিক শহর তাশখন্দে এসেও তোমাকেই আমার মনে পড়ছে। ফেসবুক থেকে