প্রকাশিত: Tue, Dec 26, 2023 10:07 PM
আপডেট: Mon, Jun 23, 2025 7:02 PM

পাঠ্যবই সুন্দর ও টেকসই হোক

শিশির ভট্টাচার্য্য : কানাডার স্কুলে বই চাইলে কেনা যায়, কিন্তু না কিনলেও হয়। আমার ছেলে যখন স্কুলে পড়তো, কখনও আমাদের কোনো বই কিনতে হয়েছে বলে মনে পড়ে না। বই স্কুল থেকেই দেওয়া হতো। সেই বইয়ে কোনো দাগ দেওয়া যেতো না এবং শিক্ষাবর্ষের শেষে পাঠ্যবই স্কুলের কাছে ফেরৎ দিতে হতো। বই শিক্ষার্থীরা খুব একটা ঘরেও আনতো না, বাড়ির কাজ স্কুলেই সেরে আসতে হতো। বাড়িতে সে কারিকুলামের বাইরের বই পড়তো, বাংলা লিখতে-পড়তে শিখতো। প্রতি পৃষ্ঠা বাংলা লিখবার জন্য আমরা তাকে এক ডলার দিতাম, যাতে তার মাসের পকেট খরচ চলে যেতো। এখন ত্রিশ বছর বয়সে এসে পুত্র এই ভাষাবিনিয়োগের জন্য তার পিতামাতাকে ধন্যবাদ দেয়। অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রীকে জিজ্ঞেস করে জানলাম, কানাডার স্কুলে বই নাকি এখন কিনতে হয়, যার মানে এখানেও এখন ‘ফেলো কড়ি মাখো তেল’। ছোটবেলায় আমাদেরও বই কিনতে হতো। তবে সব বই নয়, ১৯৭১ সালেও পাকিস্তান সরকার ৪র্থ শ্রেণিতে আমাকে কয়েকটা বই ফ্রিতে দিয়েছিল বলে মনে পড়ছে। কিন্তু বর্তমান সরকার যে শিক্ষাবর্ষের প্রথমেই সব শিক্ষার্থীর হাতে নতুন বই তুলে দিতে পারছেÑ এটা সারা পৃথিবীর নিরিখে খুব বড় একটা অর্জন। পাশ্চাত্যের পাঠ্য বইগুলো ভালো কাগজে, মোটা কভার দিয়ে সুন্দর করে ছাপা হয়। বাংলাদেশের বইগুলো খারাপ কাগজে, পাতলা কভার দিয়ে বিশ্রীভাবে ছাপা হয়। আমাদের দেশের সব ক্ষেত্রে কেমন যেন একটা ‘ফকিন্নি ডট কম’ ভাব। 

বিদ্যাশিক্ষার উপর সুন্দর বইয়ের একটা প্রভাব আছে। এটা স্বীকার করতেই হবে। সুন্দর বই দেখবার-শুঁকবার একটা ব্যাপার আছে। রুচিটাতো অন্যকে দেখে দেখে হয়। বই এমনভাবে ছাপা হোক যাতে একাধিক বছর ব্যবহার করা যায়। প্রতি বছর বই ছেপে নতুন বই দেবার চাইতে কিছু বই নতুন, কিছু পুরাতন দেওয়া যেতে পারে। এর ফলে আমি মনে করি, সরকারের অর্থ সাশ্রয় হবে এবং প্রকাশনার সার্বিক মানও উন্নততর হবে। তবে বই ছাপার দায়িত্ব পেয়ে টু-পাইস যারা কামান, তারা কী ভাবেন, কীভাবে তারা সরকারকে প্রভাবিত করবেন, সেটাই বিবেচ্য। ফেসবুকে ২৬-১২-২৩ প্রকাশিত হয়েছে।