
প্রকাশিত: Tue, Dec 20, 2022 4:24 AM আপডেট: Sun, Jun 22, 2025 4:35 PM
মেসি এমন একজন খেলোয়াড়, যাকে ভালোবাসতে আর্জেন্টিনার সমর্থক না হলেও চলে
গুলজার হোসেন উজ্জ্বল
আমার জীবনের অর্জনকে আমি ছোট করে দেখি না। আমার ব্যক্তিগত ধারণা আমি জীবনে যা যা চেয়েছি মোটামুটি পেয়েছি। যখন যে বিষয়ে আগ্রহ দেখিয়েছি সেখানেই কিছু না কিছু করতে পেরেছি। কিন্তু যেখানে আমি কিছুই করতে পারিনি সেটা হচ্ছে খেলা। আমি ছোটবেলা থেকেই নিয়মিত মাঠে খেলতে যেতাম। খেলতে আমার ভালো লাগতো। কিন্তু আমি খেলাধুলায় ছিলাম খুবই খারাপ। একেবারে যা-তা? ক্রিকেট সামান্য ভালো খেলতাম। কিন্তু সেটাও আসলে গণ্য করার মতো না। সবচেয়ে হতাশা ব্যঞ্জক পারফরম্যান্স ছিল ফুটবলে।
মেডিকেলে পড়ার সময় একবার টুর্নামেন্টে খেলতে নেমেছিলাম। বন্ধুরা আমার ফুটবল বিষয়ক আলাপ-সালাপ দেখে ভেবেছিলো আমি বোধহয় বিরাট খেলোয়াড়? তারা আমার কনফিডেন্স দেখে আমাকে স্ট্রাইকিং পজিশনে দিয়েছিল। আমিও পুরা ম্যাচে তক্কে তক্কে ছিলাম। একবার বল পেয়েও গেলাম কায়দা মতো। ঠেলে দিলেই গোল হয়। গোল কিপারও জায়গামতো নেই। কেবল আমি আর গোল পোস্ট। কিন্তু ফুটবলার হিসেবে গোলদাতা হওয়াটা অনেক গৌরবের? ঠেলে দিলেই আমি হয়ে উঠবো আজকের ম্যাচের হিরো। সবাই আমাকে নিয়ে মেতে উঠবে? মাঠের বাইরে আমার বান্ধবীরাও অপেক্ষা করছে উল্লাস করার জন্য। এতোসব খুশি, আনন্দ ও গৌরবের চাপ নিতে না পেরে আমার থট ব্লক হয়ে গেলো। নানান আকাশকুসুম ভাবনায় আমি বল নিয়ে পাঁচ সেকেন্ড হতবিহবল হয়ে দাঁড়িয়ে রইলাম।
সেই সুযোগে প্রতিপক্ষের ডিফেন্ডার এসে বলটা কেড়ে নিয়ে নিরাপদ জায়গায় পাঠিয়ে দিলো। এরকম কাণ্ড আরো অনেক হয়েছে। তবে ওই ঘটনার পর আর কখনো খেলোয়াড় হবার চেষ্টাও করিনি। খেলাধুলা নিয়ে আমার আগ্রহ খুব ছিল তাও বলা যাবে না? আমি খুব খেলা দেখি তাও না। তবে খেলা বিষয়ক লেখা পড়তাম। সেখান থেকে অনেক তত্ত্বীয় জ্ঞান পেতাম। তবে সময়টা অমনই ছিল। আমি তখন ছাপা অক্ষরে যা পেতাম তাই পড়তাম। বাসায় রান্নার বই ছিল একটা। আমি অনেকবার সেই বই পড়েছি। সোলেমানি খাবনামা, যোগ ব্যায়ামের বই সবই পড়েছি তখন। তাই সেটা ধর্তব্য না। যে কথা বলতে চাচ্ছিলাম, সেটা হলো খেলাধুলা বিষয়ে আমি যা’ই বলি আপনারা কেউ সিরিয়াসলি নেবেন না। ইদানীং সবাই দেখছি খেলা বিষয়ে প্রেডিকশন দেয়? দেখাদেখি আমিও দিয়েছি। কিন্তু একটাও ফলেনি। আমি বলেছি, ইউরোপে কাপ যাবে আবারো। লাতিনের দিন শেষ। কিন্তু এটা ফলেনি। ফাইনালে আর্জেন্টিনা হারবে বলেছিলাম। সেটাও ফলেনি।
স্পেন, নেদারল্যান্ড অনেক ভালো করবে বলেছিলাম তারা সেমিফাইনালেও খেলেনি। মানে আমি যা যা বলেছি, তার কোনোটাই ফলেনি। তাই বলছি খেলাধুলা নিয়ে আমার কথা কেউ সিরিয়াসলি নেবেন না। এই বিষয়ে আমি অতিশয় মূর্খ। বিশ্বকাপ ফুটবলে এবার যেটুকুই আনন্দ পেয়েছি তা ওই ফেসবুকেরই কল্যাণে। অন্য সবার আনন্দ আমাকেও ছুঁয়ে গেছে? আমি আসলে মনোযোগ দিয়ে খেলা দেখিওনি। ভবিষ্যতে চেষ্টা করবো খেলাধুলা নিয়ে এইসব ফাইজলামি না করার। ফাইনাল খেলার উত্তাপ নিয়েছি মোবাইলের লাইভ স্কোর দেখে। টফিতে বাফারিং হচ্ছিল। আর কাজেও ব্যস্ত ছিলাম। সব মিলিয়ে এই অবস্থা। একপর্যায়ে আর্জেন্টিনার জন্য খুব চাপও অনুভব করেছি। ভাবছিলাম, কী হচ্ছে এগুলো! খেলা চাক্ষুষ না দেখেও খুব বুঝা যাচ্ছিল কী একটা উত্তেজনার খেলা হচ্ছে। আর্জেন্টিনা না জিতলে কষ্ট পেতাম। মেসি এমন একজন খেলোয়াড় যাকে ভালোবাসতে হলে আর্জেন্টিনার সাপোর্টার না হলেও চলে। শেষ মন্তব্যটাও কোনো বিশেষজ্ঞ মতামত না। স্রেফ একান্ত ভালোলাগার অনুভূতি। লেখক ও চিকিৎসক
আরও সংবাদ
চ্যাম্পিয়ন ভারত : একটা ছোট মুহূর্ত কতো বড় পার্থক্য গড়ে দিতে পারে
‘ওই ক্যাচ হয়নি, সুরিয়াকুমারকে আবার ক্যাচ ধরতে হবে’!
কতো দেশ, কতোবার কাপ জিতলো, আমাদের ঘরে আর কাপ এলো না!
সংগীতাচার্য বড়ে গোলাম আলি খান, পশ্চিমবঙ্গের গর্ব সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় ও আমি
ইন্ডিয়ান বুদ্ধিজীবী, ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্র ও দেশের বুদ্ধিজীবী-অ্যাক্টিভিস্ট
মতিউর প্রতিদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ৮৩ ব্যাচের বন্ধুদের গ্রুপে সৎ জীবন যাপনের উপদেশ দিতেন!

চ্যাম্পিয়ন ভারত : একটা ছোট মুহূর্ত কতো বড় পার্থক্য গড়ে দিতে পারে

‘ওই ক্যাচ হয়নি, সুরিয়াকুমারকে আবার ক্যাচ ধরতে হবে’!

কতো দেশ, কতোবার কাপ জিতলো, আমাদের ঘরে আর কাপ এলো না!

সংগীতাচার্য বড়ে গোলাম আলি খান, পশ্চিমবঙ্গের গর্ব সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় ও আমি

ইন্ডিয়ান বুদ্ধিজীবী, ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্র ও দেশের বুদ্ধিজীবী-অ্যাক্টিভিস্ট
