আনিস আলমগীর: বিশ^কাপের সর্বকালের সেরা ম্যাচগুলোর একটি ছিলো আর্জেন্টিনা-ফ্রান্সের মধ্যকার ফাইনাল। আমরা অনেক সৌভাগ্যবান যে আমাদের এটি দেখার সুযোগ হয়েছে। বিশ্বকাপ আর প্রিয় দল নিয়ে তর্ক-বিতর্ক হাসিঠাট্টায় কাটিয়েছি আমরা গত একটি মাস, যদিও আমরা এমন দুর্ভাগা যে আমাদের দেশ কবে বিশ্বকাপ খেলবে কেউ জানি না। আমার এখনো মনে আছে জীবনে প্রথম বিশ্বকাপ ফাইনাল খেলা দেখেছিলাম কিছু নিকট আত্মীয়ের সঙ্গে, ১৯৮২ সালে ঢাকায় বোনের বাসায় বেড়াতে এসে, একটি মাঝারি সাইজের সাদা কালো টিভিতে, তাও প্রতিবেশীর বাসায়। ১৯৮৬ সালের বিশ্বকাপ এবং ম্যারাডোনা আমাদের প্রজন্মের মধ্যে ফুটবল নিয়ে ব্যাপক উত্তেজনা তৈরি করেছিলো। সেই একই উত্তেজনা গতকালও অনুভব করেছি, যখন আমি আমার ছেলেকে নিয়ে খেলা দেখছিলাম। আমাদের প্রজন্ম পেলের খেলা দেখেনি। 

আমরা ম্যারাডোনা যুগ দেখেছি। নতুন প্রজন্মের সঙ্গেও দেখছি লিওনেল মেসি, ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর যুগ। সেই ১৯৯০ সাল থেকে আর্জেন্টিনার ভক্তরা অপেক্ষা করছিলেন বিশ্বকাপ ফেরত পাওয়ার। মেসি শুধু তাঁদের স্বপ্ন পূরণ করেননি, আমাদের সবাইকে এই বিশ্বাস দিয়েছেনÑ প্রতিভার সঙ্গে কঠোর পরিশ্রম, অধ্যবসায় আর স্বপ্ন থাকলে বিজয় সম্ভব। আমি জার্মানি-ব্রাজিলের সাপোর্টার ছিলাম। ফাইনালে ফ্রান্সকে সাপোর্ট করেছি, কিন্তু অদ্ভুত যে মেসির হাতে বিশ্বকাপ দেখে আনন্দিত হয়েছি। ইতিহাসের সাক্ষী হতে পেরেছি মনে হয়েছে। নিঃসন্দেহে এই টুর্নামেন্টে মেসি এবং আর্জেন্টিনা সেরা হিসেবেই জয় পেয়েছে। এমবাপ্পেও অসাধারণ। পেলে, ম্যারাডোনা, মেসির পর পরবর্তী ফুটবল জাদুকর সে হবে নাকি অন্য কেউ, সময় বলে দেবে। হয়তোবা আমাদের কেউ কেউ তখন থাকবো না। লেখক: সিনিয়র সাংবাদিক। ফেসবুক থেকে