আতিকুজ্জামান ফিলিপ

শুধু মেসি খেলেননি, পুরো টিম আর্জেন্টিনাই খেলেছে। যেমন আক্রমণভাগে, তেমনি রক্ষণভাগে। প্রথমার্ধের পুরোটা জুড়ে এবং দ্বিতীয়ার্ধে এমবাপ্পের পেনাল্টিতে করা গোলের আগ পর্যন্ত আর্জেন্টিনার সবাই একহয়ে মাঠ সামলেছে, একেই বলে টিমস্পিড। ‘মেসি একা কী করবেন?’ আর্জেন্টিনা সমর্থকদের এই আপ্তবাক্য যেন সত্য প্রমাণিত হয়েতে প্রতি মুহূর্তে। মেসি একা কিছু করতে না পারলেও টিমস্পিড হিসেবে আর্জেন্টিনার সবাই যখন এক হয়ে খেলে তখন সত্যিই আর্জেন্টিনা অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠতে পারে। ফাইনালে অন্তত তাই-ই মনে হয়েছে। এই আর্জেন্টিনার সামনে ফ্রান্সকে যেন খুঁজেই পাওয়া যাচ্ছিলো না, যদিও দ্বিতীয়ার্ধের শেষদিকে এমবাপ্পের গোলের পর তাঁরা খেলায় ফিরে আসে, ফিরে আসে মানে একেবারে দোর্দণ্ড দাপটেই ফিরে আসে। বলা যায় প্রথম নব্বই মিনিটের মধ্যে আর্জেন্টিনা খেলেছে আশি মিনিট আর বাকি দশ মিনিট খেলেছে ফ্রান্স। আর তাতেই আর্জেন্টিনা প্রায় ভেঙে পড়েছিলো। তবুও ফ্রান্স ভাগ্যের শিকে ছিড়তে পারেনি। দুর্ভাগ্য তাদের, দুর্ভাগ্য কিলিয়ান এমবাপ্পের। শেষ হাসিটা তাঁরা হাসতে পারেনি। শেষ হাসিটা আর্জেন্টিনাই হেসেছে। বিধাতা এবার আর মেসিকে নিরাশ করেননি। 

ট্র্যাজিক হিরোর তকমা থেকে বিধাতা তাকে রক্ষা করেছেন, শেষরক্ষা হয়েছে মেসির। তাকে অভিনন্দন। তাঁর অবসরটা বেদনাদায়ক হয়নি বরং আনন্দময় হলো। বলতে বাঁধা নেই পেনাল্টি যেন আর্জেন্টিনার সৌভাগ্যের সাথে মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে, এই বিশ্বকাপে অন্তত তেমনটিই দেখেছি আমরা। আমাদের কাছে বা আর্জেন্টিনা বিরোধী শিবিরে আর্জেন্টিনার এই পেনাল্টি ভাগ্য নিয়ে যতো বিতর্কই থাকুক, আর্জেন্টিনার বিশ^কাপ জয়ের সবচেয়ে বড় নিয়ামক তাঁদের পেনাল্টি ভাগ্য নয়, বরং তাঁদের জয়ের নিয়ামক হলো তাঁদের টিমস্পিড। আর ফ্রান্স তীরে এসেও তরী ডুবিয়েছে টাইব্রেকারে পেনাল্টি মিসের কারণে, ফান্সের হারের সবচেয়ে বড় নিয়ামক হলো টাইব্রেকারে তাঁদের একের পর এক পেনাল্টি মিস। এমবাপ্পে তাঁর সর্বোচ্চটা দিয়ে ফ্রান্সকে কবর থেকে তুলে এনেছিলেন, ডুবন্ত ফ্রান্সকে জাগিয়ে তুলেছিলেন, কিন্তু এমবাপ্পের দুর্ভাগ্য- তাঁর টিমমেটরা তাকে শেষ সাপোর্টটা দিতে পারেনি। এতোদিন আর্জেন্টিনা সাপোর্টাররা বলতো, মেসি একা কী করবেন? এই ফাইনালের খেলা দেখে মনে হয়েছে, ‘এমবাপ্পে একা আর কতো করবেন?’ ফেসবুক থেকে