প্রকাশিত: Sun, Feb 11, 2024 1:23 AM
আপডেট: Tue, Sep 17, 2024 8:54 PM

পাকিস্তানের জনগণ ধর্মভিত্তিক রাজনীতির ধারা থেকে বেরিয়ে আসতে চাচ্ছে বলেই মনে হচ্ছে

সাঈদ ইফতেখার আহমেদ: পাকিস্তানের নির্বাচনের ফলাফল হচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর গালে এক বড় চপেটাঘাত। সেনা-সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মাধ্যমে, ইমরান খানের দল পিটিআই যাতে ক্ষমতায় আসতে না পারে, তার জন্য হেন কিছু নাই যে তারা করে নাই। ইমরান খানকে নানা মামলায় কারাদণ্ড দিয়েছে। এমনকি ইদ্দত পালনের সময় শেষ হবার আগেই তার তৃতীয় স্ত্রী বুশরা বিবিকে বিয়ে করার “অপরাধে” সাত বছরের জেল দেওয়া হয়েছে। পিটিআই যাতে নির্বাচনে অংশ নিতে না পারে তার ব্যবস্থা করেছে। অর্থের প্রলোভন এবং ভয় দেখিয়ে দল থেকে অনেক নেতাকর্মীকে বের করে নিয়ে আসা হয়েছে। কিন্তু ভোট গণনা অনেক বিলম্ব করেও পিটিআই সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থিদের বিজয় ঠেকিয়ে রাখা সম্ভব হয়নি। 

ইমরান খান সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থিদের বিজয় দক্ষিণ এশিয়ায় বাইডেন প্রশাসনের পররাষ্ট্রনীতির আরেকটি বড় ব্যর্থতা। রাশিয়ার সাথে ঘনিষ্ঠতা বাড়াবার প্রচেষ্টার ফলে বাইডেন প্রশাসনের পছন্দের তালিকায় ইমরান এবং তার দল ছিল না। মাত্র অল্প সময় আগেই মালদ্বীপে চীন সমর্থিত রাষ্ট্রপতি প্রার্থি মুহাম্মদ মুইজ্জুর কাছে ভারত-মার্কিন সমর্থিত ইব্রাহিম মোহাম্মদ সোলিহ পরাজিত হয়েছেন। তবে এখন পাকিস্তানী সেনাবাহিনী চেষ্টা করবে, ইমরান বিরোধী দলগুলিকে নিয়ে কোয়ালিশন সরকার গঠন করে পিটিআইকে ক্ষমতাসীন হতে না দেওয়ার। পিটিআই ক্ষমতাসীন হওয়া মানে হল, পাকিস্তানে চীন-রাশিয়ার প্রভাব আরো বৃদ্ধি পাওয়া। 

এ নির্বাচনের আরেকটি লক্ষ্যনীয় বিষয় হল যে, পাকিস্তানের জনগণের ইসলামপন্থী দলগুলিকে ছুড়ে ফেলে দেওয়া। পাকিস্তানের সবচেয়ে বড় ইসলামপন্থী দল জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম প্রধান মাওলানা ফজলুর রেহমান পিটিআই সমর্থিত প্রার্থির কাছে হেরে গেছেন। জামায়াতে ইসলামী প্রধান সিরাজুল হকও হেরেছেন পিটিআই সমর্থিত আরেক প্রার্থির কাছে। পুরো নির্বাচনে এখন পর্যন্ত জমিয়তের দু'টি আসন ছাড়া বাকী ইসলামপন্থীরা কোন আসন পায় নাই। ইসলামপন্থী দাবীদার রাজনৈতিক সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠী কর্তৃক পাকিস্তানে গত বছর নিহত হয়েছে এক হাজারের বেশি মানুষ। ইসলামপন্থী দলগুলোর ভোট না পাবার এটি একটি বড় কারণ হতে পারে। লক্ষ্যণীয় যে,  ভারতের জনগণ যেখানে ধর্মভিত্তিক রাজনীতির দিকে ঝুঁকছে, সেখানে পাকিস্তানের জনগণ এ ধারা থেকে বেরিয়ে আসতে চাচ্ছে বলেই প্রতীয়মান হচ্ছে। ফেসবুক থেকে