কবির য়াহমদ : আগেই বলেছিলাম, তুলনামূলক শক্ত প্রতিপক্ষের বিপক্ষে সিঙ্গেল লেগ ম্যাচে খেলা নিয়ে আসে রিয়াল মাদ্রিদ। সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে রোমাঞ্চকর লড়াইয়ের পর ইতিহাদে সে সিঙ্গেল ম্যাচটাই খেলেছে রিয়াল মাদ্রিদ। কৌশল এখানে প্রতিপক্ষকে খেলতে দেওয়া। প্রতিপক্ষ কেমন খেলে, কীভাবে খেলে, সেটাই কেবল দেখা আর সে অনুযায়ী নিজেদের ভূমিকা পালন। রিয়াল নিজেদের পায়ে বল রাখতে চায়নি। বারবার প্রতিপক্ষের কাছে বলে ঠেলেছে। চায়নি বল নিয়ে উপরে উঠতে। আক্রমণের ইচ্ছাই ছিল না তাদের। 

ঘড়ির কাঁটা দ্রুততায় ঠেলতে ম্যাচের গতিতে রাশ টেনেছে। 

বারবার স্লো করেছে ম্যাচ। কার পায়ে কতভাগ বল, কে কয়টা আক্রমণ করলো, এটা নিয়ে খেলায় নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যাবে না। উপরে যা দেখা যায় সেটা প্রকৃত চিত্র নয়। ফুটবল কৌশলের খেলা। আর এই কৌশলে কার্লো আনচেলত্তির কাছে মার খেয়ে গেছেন পেপ গুয়ার্দিওলা। গুয়ার্দিওলার সাধ্য ছিল না আনচেলত্তিকে রিড করার। আনচেলত্তি কাল রাতে একা দুই দলকে খেলিয়েছেন। গুয়ার্দিওলা ও ম্যানচেস্টার সিটিকে যে খেলিয়েছেন তিনি সেটা ম্যাচ চলাকালে একবারও বুঝতে পারেননি গুয়ার্দিওলা। বল ম্যানচেস্টার সিটির পায়ে ঠেলে দিয়ে নিজেদের ডিফেন্সে বাস পার্কিং, এটাই ছিল কৌশল। যে কৌশলে খেলেছে, ম্যানচেস্টার সিটিকে দিয়ে খেলিয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ; তাতে এক ম্যাচ কেবল ১২০ মিনিটের নয়, ১২০ দিনে চালিয়ে নিলেও ম্যানচেস্টার সিটির পক্ষে রিয়ালের রক্ষণ ভেদ করা কষ্টসাধ্য ছিল। রিয়াল যা চেয়েছে সেটাই হয়েছে। আসো গোল করি, মন্ত্র জপ করতে করতে গোল করে এসেছে। এরপর খেলতে দিয়েছে ম্যানচেস্টার সিটিকে।

পুরো ম্যাচে একবারই ভুল করেছে রিয়ালের ডিফেন্স, আর এই এক ভুলে ডিব্রুইনার পক্ষে সম্ভব হয়েছে গোল করার। এরবাইরে দশে-দশ কৌশল প্রয়োগে। 

ইতিহাদে ছিলো ইতিহাসের বিরুদ্ধে লড়াই। রবার্ট ব্রুসের চরিত্রে ছিলেন কার্লো আনচেলত্তি, আর ইতিহাদ ছিল স্টারলিং দূর্গ। 

এই দূর্গ জয়ে যুদ্ধের যে কৌশল সে কৌশলের সফল প্রয়োগ করেছেন প্রধান সেনাপতি আনচেলত্তি। এখানেই মুনশিয়ানা, এটাই সাফল্যের রহস্য রিয়াল মাদ্রিদের। রিয়াল মাদ্রিদ যতটা না ফুটবল ক্লাব, তারচেয়ে বেশি ফুটবল গবেষণাগার। গবেষণার সময়ে অন্যরা বুঝতে পারেনি কী গবেষণা হচ্ছে ওখানে, দিন শেষে তো পরিস্কার গবেষণার ফলাফল। লেখক: সাংবাদিক