
প্রকাশিত: Tue, Dec 27, 2022 4:25 PM আপডেট: Mon, Jun 30, 2025 2:01 AM
নতুন কারিকুলামের নির্যাসটুকু প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষকেরা ধরতে সক্ষম
মুনির হাসান
আমরা তো রাতারাতি আমাদের শিক্ষকদের মান ঠিক করে ফেলতে পারবো না। আমি দুইটা উদাহরণ দিই। ১৯৮৭ সালে জেনারেল এরশাদ এসএসসিতে ধর্ম শিক্ষাকে আবশ্যিক বিষয় করে। কিন্তু একইসঙ্গে নৈর্বাচনিক গণিতকে অপশনাল করে ফেলে। এতে ১৯৮৯ সালে একদল সায়েন্স থেকে এসএসসি করে যারা কিনা হায়ার ম্যাথটা করে নাই। যেহেতু ওই ম্যাথ ছাড়া ফিজিক্স পড়া যায় না তখন এইচএসসিতে একটা সায়েন্স খোলা হলো সেখানে ফিজিক্স বাদ দিয়ে কেমেস্ট্রি, বায়োলজি ও সাইকোলজি পড়লেই হতো। এরা যখন এইচএসসি করলো তখন বিএসসি (এসসি কিন্তু) পড়া গেলো কোনো ম্যাথ ছাড়াই। এরা ৯৫/৯৬ সালে বিএসসি পাশ করে বের হলো। এদের বড় অংশই গেল স্কুলে পড়াতে। এখনও গ্রামে গঞ্জে লোকে ভাবে বিএসসি মানেই ম্যাথ, আর এটা তো ২৫-২৭ বছর আগের কথা। কিন্তু এই বিএসসিরা তাদের স্কুলে ১০০ নম্বরের সাধারণ ম্যাথ ছাড়া জীবনে কোনো ম্যাথ করেন নাই। ওনারা দলে দলে (সবাই নন) ম্যাথের টিচার হয়ে নীলক্ষেত থেকে সমাধান বই কিনে পড়ানো শুরু করলেন।
প্রয়াত লুতফুজ্জামান স্যার জরিপে স্কুলের ৪৫০০ টিচারের মধ্যে ৩৬০৯ জন পেয়েছেন যারা মাত্র ১০০ নম্বরের ম্যাথ করেছেন। ২০০৪ সালে গণিত অলিম্পিয়াড থেকে আমরা বিষয়টা নিয়ে দেন দরবার শুরু করার পর তত্ত্বাবধায়ক আমলে ন্যূনতম অনার্স না হলে বিষয়ভিত্তিক টিচার হতে পারবেন না এই নিয়ম চালু হয়েছে। কিন্তু আগের নিয়মে যারা গণিতের শিক্ষক হয়েছেন তাদের শেষজন ২০৩০ সালে অবসরে যাবেন। ১৯৯১ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়ন আমাদের প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়নে সহায়তা নিয়ে আসে। কিন্তু তারা শর্ত দেয় প্রাথমিক শিক্ষকদের সবাইকে নারী হতে হবে। কারণ বাচ্চাদের পড়ানোর জন্য মেয়েরা ছেলেদের চেয়ে ভালো এবং তাদের দেশে সেরকমই আছে। নতুবা তারা টাকা দিবে না। কিন্তু দেশের আর্থ সামাজিক প্রেক্ষাপটে বিষয়টা কঠিন। শেষমেষ ঠিক হলো নারী ৬০ শতাংশ হবেন।
ঝামেলা হলো সেই সময়ে দেশের শিক্ষার হার এমনিতেই কম, আর মেয়েদের বেলায় আরও কম। কাজে মেয়েদের জন্য যোগ্যতা নামাতে নামাতে এসএসসি করা হলো। সেইভাবে আমাদের প্রাইমারির নিয়োগ হয়েছে। তারপর সেটা ২০০৭ সালে এইচএসসি আর শেষমেষ কয়েকবছর আগে গ্র্যাজুয়েট করা গেছে। ১৯৯১ সালের বাস্তবতায় শিক্ষক পাওয়ার জন্য এসএসসিতে নেমে আসার কোনো বিকল্প ছিলো না। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য হলো তাদের ইন-সার্ভিস ট্রেইনিং-এর মাধ্যমে অধিকতর গড়ে দক্ষ গড়ে তোলাটা আমরা পারি নাই। কয়েক দিন আগে যে নিয়োগ হয়েছে সেটার পরিসংখ্যান এখনও জানি না কিন্তু তার আগেরবার যখন ১৮০০০+ নিয়োগ হয়েছে তাদের বড় অংশই কিন্তু ভালো মানের শিক্ষক হওয়ার যোগ্যতা রাখে। তাদের শেখার আগ্রহ আছে, নিজেরাই অনেক কিছু শেখে এবং সেটা কাজে লাগাতে চেষ্টা করে।
তিন বছর ধরে সরকারি প্রাথমিক স্কুলের গণিতের শিক্ষকদের সঙ্গে কাজ করে আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি, আমাদের নতুন কারিকুলামের নির্যাসটুকু তারা ধরতে সক্ষম। আমাদের সরকারি প্রাথমিক স্কুল ৬৫ হাজার+। ঠিক সমসংখ্যক বেসরকারি প্রাথমিক স্কুল আছে। সরকারি পরিকল্পনাগুলোতে প্রথম ৬৫ হাজারকেই প্রাধান্য দেওয়া হয়। ফলে কিছু ঝামেলা এখনও আছে। প্রাইমারিতে সমান সমান হলেও মাধ্যমিকের ৩০ হাজার মোট বিদ্যালয়ের মধ্যে সরকারি স্কুল মনে হয় হাজারেরও কম। এখানে তাই এমপিওভুক্তি ধরে হিসাবটা হয়। নতুন কারিকুলামের সুফল পাওয়ার জন্য আমার কাছে তাই মনে হয় সরকারি বেসরকারি উদ্যোগের কোনো বিকল্প নেই। আমরা ২২টি প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষকদের জন্য কোডিংয়ের একটি কর্মশালা করেছি। সেখানে দেখেছি আমাদের শিক্ষকেরা আগ্রহ নিয়েই অংশ নিয়েছেন। আমি শেষ আশাবাদী লোকটা। ফেসবুক থেকে
আরও সংবাদ
চ্যাম্পিয়ন ভারত : একটা ছোট মুহূর্ত কতো বড় পার্থক্য গড়ে দিতে পারে
‘ওই ক্যাচ হয়নি, সুরিয়াকুমারকে আবার ক্যাচ ধরতে হবে’!
কতো দেশ, কতোবার কাপ জিতলো, আমাদের ঘরে আর কাপ এলো না!
সংগীতাচার্য বড়ে গোলাম আলি খান, পশ্চিমবঙ্গের গর্ব সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় ও আমি
ইন্ডিয়ান বুদ্ধিজীবী, ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্র ও দেশের বুদ্ধিজীবী-অ্যাক্টিভিস্ট
মতিউর প্রতিদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ৮৩ ব্যাচের বন্ধুদের গ্রুপে সৎ জীবন যাপনের উপদেশ দিতেন!

চ্যাম্পিয়ন ভারত : একটা ছোট মুহূর্ত কতো বড় পার্থক্য গড়ে দিতে পারে

‘ওই ক্যাচ হয়নি, সুরিয়াকুমারকে আবার ক্যাচ ধরতে হবে’!

কতো দেশ, কতোবার কাপ জিতলো, আমাদের ঘরে আর কাপ এলো না!

সংগীতাচার্য বড়ে গোলাম আলি খান, পশ্চিমবঙ্গের গর্ব সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় ও আমি

ইন্ডিয়ান বুদ্ধিজীবী, ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্র ও দেশের বুদ্ধিজীবী-অ্যাক্টিভিস্ট
