
প্রকাশিত: Tue, May 7, 2024 1:45 PM আপডেট: Sun, Jun 22, 2025 9:05 PM
‘স্পেস ও টাইম’
মহিউদ্দিন খালেদ : স্পেস এবং টাইম সম্পর্কে দুইজন ব্যক্তি কথা বললে কোনো সমস্যা নাই। প্রথম জন হলেন যিনি পদার্থবিজ্ঞানে অনার্স, মাস্টার্স, উসদা (পিএইচডির বাংলা করলাম- উচ্চ সম্মানিত দার্শনিক, সংক্ষেপে উসদা) করে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ান এবং যার রচিত প্রবন্ধ ফেসবুকে নয়, নেচার ইত্যাদি পত্রিকায় ছাপা হয়। দ্বিতীয় জন হলো পদার্থবিজ্ঞান তো পদার্থবিজ্ঞান, কোনো বিজ্ঞানেই যার বিশেষ কোন পড়াশোনা নাই অর্থাৎ ব্যক্তি হিসাবে যিনি মোটামুটি অপদার্থ। প্রথমজনের কথায় কেউ সহসা ভুল ধরার সাহসই পাবে না। আর দ্বিতীয় জনের কথাকে কেউ পাত্তাই দেবে না। এই দুইজনের মাঝামাঝি কারো পক্ষে এইসব বিষয় নিয়ে কথা বলা অনিরাপদ। এই ক্ষেত্রে আমি দ্বিতীয় জনের ক্যাটাগরিতে পড়ি। কাজেই আমার মনে হয় আমি নির্দ্বিধায় স্পেস এবং টাইম নিয়ে কথা বলতে পারি। শুরুতে স্পেস নিয়ে কথা বলা যাক।
স্পেস হলো শূন্যস্থান। শূন্যস্থান মানে কী? ফাঁকা জায়গা। আলোচনার সুবিধার্তে বাতাসের কথা আপাতত ভুলে যান। আমরা ধরে নিই যেখানে বাতাস আছে সেখানে আসলে কিছু নাই। এবার ধরেন একটা ফুঁ দিয়ে ফোলানো বেলুন। মুখবন্ধ বেলুনের ভেতর বাতাস ছাড়া আর কিছু নাই, মানে বেলুনের ভেতরটা পুরোটাই ফাঁপা। এবার বেলুনের ভেতরে যেকোন জায়গায় টর্চহাতে একটা বুদ্ধিমান প্রাণী কল্পনা করুন। টর্চসহ এই প্রাণীটার আকৃতি একটা করোনাভাইরাসের আকৃতির দশহাজার কোটিভাগের একভাগ এবং এই প্রাণীর টর্চ থেকে যে আলো বের হয় সেই আলোর এক মিলিমিটার পথ অতিক্রম করতে দেড়শ কোটি বছর লাগে। তাহলে কি হবে? হতভাগ্য প্রাণীটি যদি বেলুনের দেয়াল থেকে একমিলিমিটার দুরেও টর্চ নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে, তিনশ কোটি বছর পর সে জানতে পারবে সে যে জগতে বাস করছে সে জগতের একটা সীমানা আছে। তখন তার মাথায় একটা প্রশ্ন আসবে। সেই প্রশ্নটা হল, এই জগতটাই সমগ্র মহাবিশ্ব কী না? কারণ, এটাই যদি সমগ্র মহাবিশ্ব হয় তাহলে এর সীমানা থাকার দরকার কি? সীমানা তো তখুনি থাকতে হয় যখন একটা জগৎকে আরেকটা জগৎ থেকে আলাদা করতে হয়। সমগ্রজগতকে যেহেতু অন্যজগত থেকে আলাদা করার কিছু নাই সেহেতু সমগ্রজগতের সীমানা বলে কিছু নাই। এরপরে প্রাণীটার মনে হবে- সমগ্র মহাবিশ্ব যত বড়ই হোক, এর সীমানা বলে কিছু নাই থাকুক, কোথাও না কোথাও শেষ ত আছে। তারপরেই প্রশ্ন আসবে? তাহলে এই শেষের পরে কি আছে? জবাব আসবে- কিছু নাই। সমস্যাটা এখানেই। এই কিছু নাই মানেই ত স্পেস। অর্থাৎ কিছু নাই মানে স্পেস আছে। তারমানে ধারণাগতভাবেই স্পেস এমন জিনিষ যেটার কোন শেষ থাকা সম্ভব না। যদি শেষ থাকে তাহলে সেটা স্পেস না। অর্থাৎ মহাবিশ্ব বা মহাশূন্য তাত্ত্বিকভাবেই অসীম। তার সসীম হবার কোন সুযোগ নাই।
এবার টাইম নিয়ে কথা বলা যাক। চলেন আদিম যুগে ফিরে যাই। হাতে ঘড়ি পরা দূরে থাক, মানুষ তখনো গাছের ছালও পরতে শিখে নাই। কল্পনা করি সেই যুগে একটা ঘটনা ঘটল। পৃথিবীর নিজ অক্ষে ঘুর্ণনগতি কেউ রিসেট করে দিল। পৃথিবীর নিজ অক্ষে একবার ঘোরার সময়কাল চব্বিশ ঘন্টার বদলে চব্বিশ বছর করে দিল। সাথে মানুষের দেহঘড়িও রিসেট করে দিল। তার ঘুম হয়ে গেল আট ঘন্টার পরিবর্তে আট বছর। ছয় ঘন্টা পর ক্ষুধা লাগার পরিবর্তে তার ছয় বছর পর ক্ষুধা লাগা শুরু হল। তার নিজের এবং চারপাশের সব জিনিষের গতিবেগ ঠিক সাড়ে আটহাজারগুন ধীর হয়ে গেল। সে কি তখন আদৌ বুঝতে পারবে, এখন চব্বিশ ঘন্টার পরিবর্তে চব্বিশ বছরে একদিন হচ্ছে? পারবে না। অথবা ধরা যাক পৃথিবীর নিজ অক্ষে একবার ঘোরার সময়কাল চব্বিশ ঘন্টার বদলে চব্বিশ সেকেন্ড করে দিল। সাথে মানুষের দেহঘড়িও রিসেট করে দিল। তার ঘুম হয়ে গেল আট ঘন্টার পরিবর্তে আট সেকেন্ড। ছয় ঘন্টা পর ক্ষুধা লাগার পরিবর্তে তার ছয় সেকেন্ড পর ক্ষুধা লাগা শুরু হল। তার নিজের এবং চারপাশের সব জিনিষের গতিবেগ ঠিক ছত্রিশশো গুন দ্রুত হয়ে গেল। সে কি তখন আদৌ বুঝতে পারবে, এখন চব্বিশ ঘন্টার পরিবর্তে চব্বিশ সেকেন্ডে একদিন হচ্ছে? পারবে না।অথবা ধরা যাক পৃথিবী স্থির করে দিল। সাথে মানুষের দেহঘড়িও রিসেট করে দিল। তার ঘুম, ক্ষুধা, তৃষ্ণা উধাও হল । তার নিজের এবং চারপাশের সব জিনিষের গতিবেগ শূন্য হয়ে গেল। সে কি তখন আদৌ বুঝতে পারবে, সময় নাই হয়ে গেছে? পারবে না।এবার স্পেস এবং টাইম নিয়ে কথা বলা যাক।স্পিড = দূরত্ব/ সময়। অর্থাৎ সময় = দূরত্ব/ স্পিড। অর্থাৎ যতক্ষণ স্পিড বলে কিছু ছিলো না, ততক্ষণ সময় বলে কিছু ছিল না।( মহাশূন্য মানে যেমন মহা অসীম, সেরকম শূন্য সময় মানেও আসলে অসীম সময়।) অর্থাৎ মহাশূন্য এবং বস্ত জন্মেছে সময়ের আগে। সময়ের জন্মের আগে যদি কোন কিছুর জন্ম হয় তাহলে বুঝতে হবে তার আসলে কখনোই জন্ম হয় নাই, কারণ সে কখন জন্মেছে এটা সংজ্ঞায়িত করা সম্ভব না। অর্থাৎ মহাশূন্য এবং বস্তুর শুরু বলে কিছু নেই। সময়ের যেহেতু জন্ম আছে সেহেতু সময়ের একসময় মৃত্যু হবে। মহাশূন্য আর বস্তুর কখনো মৃত্যু হবে না। অর্থাৎ মহাশূন্য এবং বস্তুর শেষ বলেও কিছু নেই। ২৯ এপ্রিল, দু'হাজার চব্বিশ। ফেসবুক থেকে
আরও সংবাদ
চ্যাম্পিয়ন ভারত : একটা ছোট মুহূর্ত কতো বড় পার্থক্য গড়ে দিতে পারে
‘ওই ক্যাচ হয়নি, সুরিয়াকুমারকে আবার ক্যাচ ধরতে হবে’!
কতো দেশ, কতোবার কাপ জিতলো, আমাদের ঘরে আর কাপ এলো না!
সংগীতাচার্য বড়ে গোলাম আলি খান, পশ্চিমবঙ্গের গর্ব সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় ও আমি
ইন্ডিয়ান বুদ্ধিজীবী, ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্র ও দেশের বুদ্ধিজীবী-অ্যাক্টিভিস্ট
মতিউর প্রতিদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ৮৩ ব্যাচের বন্ধুদের গ্রুপে সৎ জীবন যাপনের উপদেশ দিতেন!

চ্যাম্পিয়ন ভারত : একটা ছোট মুহূর্ত কতো বড় পার্থক্য গড়ে দিতে পারে

‘ওই ক্যাচ হয়নি, সুরিয়াকুমারকে আবার ক্যাচ ধরতে হবে’!

কতো দেশ, কতোবার কাপ জিতলো, আমাদের ঘরে আর কাপ এলো না!

সংগীতাচার্য বড়ে গোলাম আলি খান, পশ্চিমবঙ্গের গর্ব সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় ও আমি

ইন্ডিয়ান বুদ্ধিজীবী, ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্র ও দেশের বুদ্ধিজীবী-অ্যাক্টিভিস্ট
