
প্রকাশিত: Tue, May 14, 2024 3:27 PM আপডেট: Sun, Jun 22, 2025 12:46 PM
খেয়ে বাঁচতে হবে, বাঁধ ছাড়ার আগে ধান তোলা দরকার
কাজী এম. মুর্শেদ
প্রায়ই একটা কথা শুনি, বাংলাদেশের এক ইঞ্চি জায়গা অনাবাদি রাখা যাবে না। কথার উদ্দেশ্য ভালো, বিশেষ করে পৃথিবীর আয়তনের ১০০০ ভাগের ২ ভাগ জমি নিয়ে যখন ২ শতাংশ মানুষের আবাস, তখন চিন্তা করার ব্যাপার আছে। কথার অর্থ নিঃসন্দেহে ভালো, মানুষের মুখে খাবার দিতে হবে। সেই সাথে বাস্তবতাও দেখতে হবে। কয়েকটা বিষয় বলি। [১] আশ্রায়ন প্রকল্প : প্রতি গরিব পরিবারকে সরকারের খাসজমি দুই কাঠা করে দিয়ে যতো জমি নষ্ট করা হয়েছে, সেটা কমানো যেতো। প্রকল্পের বাড়ির বড় অংশই খারাপভাবে তৈরি করায় এখন বাসযোগ্য নেই। এই বাড়ি নির্মাণ যদি ভার্টিকাল এক্সপ্যানশনে হতো, অনেক জমি বাঁচতো।
[২] চাল বা আলু বা পেঁয়াজে আমরা মোটামুটি স্বয়ংসম্পূর্ণ, তারপরও আমদানি করে কিছু পক্ষ সুবিধা নিচ্ছে। যখন জমিতে ধান কাটার সময় হয়, তখন লোক পাওয়া যায় না। নির্বাচন কমিশনারের ভাষায় মানুষ ধান কাটার কারণে ভোট দিতে আসেনি। মূল কথা হলো, জমির ব্যবহারের পরও যা ফসল উঠছে তা কৃষক পাচ্ছে না। তারা হতাশ হয়ে অন্য কোনো ফসল খুঁজছে। [৩] সরকার শিল্পে এশিয়ান টাইগার হওয়ার জন্য ১০০ ইকোনোমিক জোন করছে, বিশাল জায়গা নষ্ট হবে। কর্মসংস্থান কিছু হবে, তবে সেটাও দক্ষ শ্রমিকের জন্য ও টেকনোলজিকাল এডভান্সমেন্টের জন্য খুব এগোবে না। [৪] এই শিল্প চালাতে বিদ্যুৎ ও গ্যাস প্রয়োজন। বিদ্যুতের ক্যাপাসিটি চার্জ সম্মন্ধে আপনাদের ধারনা আছে। এজন্য ফসিল ফুয়েলের দাম মেটাতে কঠিন অবস্থায় পরতে হবে। সেই সাথে আদানি বা ক্যাপাসিটি চার্জ খরচের ব্যাপার। নিউক্লিয়ার আপাতত বললাম না। [৫] সোলার চালিয়ে যে বিদ্যুৎ হয়, তাতে যে জমি অধিগ্রহণ হয়, সেটাও মানার মতো না। যেসব দেশের জমি আছে, তারা খালি জায়গা, মরুভূমি ব্যবহার করে। আমাদের আইন অনুযায়ী চাষের জমিতে সোলার প্যানেল বসানো যায় না।
ভিয়েতনামে দেখেন, একই জমিতে চাষ ও সোলার চলছে। তিন একর জমির সোলার প্যানেল থেকে ১ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ, আপনাদের কি মনে হয় ইকোনোমিক জোনের জায়গায় চেয়ে প্যানেলের জায়গা বেশি হবে কি না? [৬] রিয়েল এস্টেটে ভূমি ব্যাবসায়ী দেখেন, ঢাকার একদিকে টাঙ্গাইল পর্যন্ত চলে গেছে, অন্যদিকে মাওয়া। আবার সাভার দেখেন বা কেরানীগঞ্জ বা বসিলা, চাষের জমি খাওয়া শেষ। পূর্বাচলে যে যজ্ঞ চলবে তার ব্যাপারে কিছু বললাম না। এতো বড় এলাকায় শতশত স্যাটেলাইট শহর বানিয়ে পুরো সবুজ আর জলাধার ধ্বংস হবার সাথে চাষের জমিও নষ্ট হচ্ছে। শ্লোগান হিসাবে অনেক কিছু শুনতে ভালো, কিন্তু যখন এরসাথে বৈদেশিক মুদ্রা, আমদানি, জমি নষ্ট করে বাসস্থান ব্যবসা, ভার্টিকাল এক্সপ্যানশন যখন হয় না, তখন আমাদের ভরসা ভারত। এই ভারত যে বাঁধ দিয়ে পানি বন্ধ করছে, তাতে যে নদী এখন জমি সেখানে চাষ করা ছাড়া রাস্তা নেই। খেয়ে বাঁচতে হবে, বাঁধ ছাড়ার আগে ধান তোলা দরকার। বাঁধের ব্যাপারটা সিরিয়াসলি বলিনি, তবে সরকারের মন্ত্রীরা সারাদিন বিএনপি জপ না করে, মামলাবাজি ছেড়ে যদি কাজ করতো, নিদেনপক্ষে চাষে নামতো, কিছু কাজ এগোতো। রাজনীতিবিদদের বাধ্যতামূলকভাবে ছয়মাস লুঙ্গি পরে ক্ষেতে কাজ করা উচিত। লেখক: অর্থনীতি বিশ্লেষক
আরও সংবাদ
চ্যাম্পিয়ন ভারত : একটা ছোট মুহূর্ত কতো বড় পার্থক্য গড়ে দিতে পারে
‘ওই ক্যাচ হয়নি, সুরিয়াকুমারকে আবার ক্যাচ ধরতে হবে’!
কতো দেশ, কতোবার কাপ জিতলো, আমাদের ঘরে আর কাপ এলো না!
সংগীতাচার্য বড়ে গোলাম আলি খান, পশ্চিমবঙ্গের গর্ব সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় ও আমি
ইন্ডিয়ান বুদ্ধিজীবী, ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্র ও দেশের বুদ্ধিজীবী-অ্যাক্টিভিস্ট
মতিউর প্রতিদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ৮৩ ব্যাচের বন্ধুদের গ্রুপে সৎ জীবন যাপনের উপদেশ দিতেন!

চ্যাম্পিয়ন ভারত : একটা ছোট মুহূর্ত কতো বড় পার্থক্য গড়ে দিতে পারে

‘ওই ক্যাচ হয়নি, সুরিয়াকুমারকে আবার ক্যাচ ধরতে হবে’!

কতো দেশ, কতোবার কাপ জিতলো, আমাদের ঘরে আর কাপ এলো না!

সংগীতাচার্য বড়ে গোলাম আলি খান, পশ্চিমবঙ্গের গর্ব সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় ও আমি

ইন্ডিয়ান বুদ্ধিজীবী, ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্র ও দেশের বুদ্ধিজীবী-অ্যাক্টিভিস্ট
