আনিস আলমগীর

বাংলাদেশের নিজস্ব স্যাটেলাইট, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট, আমাদের গর্বের প্রতীক। কিন্তু দুঃখজনক সত্য হলো, দুর্যোগের সময় যোগাযোগের ক্ষেত্রে আমরা এখনও মোবাইল নেটওয়ার্কের ওপর নির্ভরশীল। দুর্যোগের সময় যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়লে তথ্যপ্রবাহ বন্ধ হয়ে যায়, যা উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটায়। স্যাটেলাইট ফোন ব্যবহার করলে এই সমস্যা সমাধান করা সম্ভব। দুর্যোগ বিষয়ে রিপোর্ট তৈরি করার জন্য মাঠে থাকা রিপোর্টারদের হাতে স্যাটেলাইট ফোন থাকা অত্যন্ত জরুরি। সরকারের উচিত দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে দুর্যোগ মোকাবেলায় স্যাটেলাইট ফোন ব্যবহারের ব্যবস্থা করা। 

এই সমস্যা সমাধানের জন্য কিছু পদক্ষেপ: সরকারি ও বেসরকারি সংস্থাগুলোর জন্য স্যাটেলাইট ফোন ক্রয়: দুর্যোগ মোকাবেলায় জড়িত বিভিন্ন সংস্থার কর্মীদের জন্য স্যাটেলাইট ফোন সরবরাহ করা। মাঠ পর্যায়ের রিপোর্টারদের জন্য স্যাটেলাইট ফোন প্রদান: দুর্যোগের সময় তথ্য প্রবাহ নিশ্চিত করার জন্য রিপোর্টারদের হাতে স্যাটেলাইট ফোন দেওয়া। স্যাটেলাইট ফোন ব্যবহারের প্রশিক্ষণ: দুর্যোগ মোকাবেলায় জড়িত কর্মীদের স্যাটেলাইট ফোন ব্যবহারের প্রশিক্ষণ দেওয়া। এই পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করলে দুর্যোগের সময় যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও মজবুত হবে এবং উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রম আরও দ্রুত ও কার্যকরভাবে পরিচালনা করা সম্ভব হবে। 

পুনশ্চ: আমি আজ থেকে ২০ বছর আগেই স্যাটেলাইট ফোন ব্যবহার করে বাগদাদের রণাঙ্গন থেকে সংবাদ পাঠিয়েছি, যখন যোগাযোগের আর কোনো মাধ্যম অবশিষ্ট ছিল না। লন্ডনভিত্তিক ওই স্যাটেলাইট ফোন থেকে সংবাদ পাঠানো অনেক কষ্টলি ছিল। এখন আমাদের যেহেতু নিজস্ব স্যাটেলাইট আছে, এই ফোনের দামও কমে আসবে আমার বিশ্বাস। কোটি কোটি টাকা খরচ করে স্যাটেলাইট পাঠানোর দরকার কী আর আমরা যদি এর বহুমুখী ব্যবহার না করি। এক স্যাটেলাইট টিভিগুলো থেকে তো আয়ের টাকা উঠে আসবে না। আর তথাকথিত নিরাপত্তার ইস্যুতে স্যাটেলাইট ফোন ব্যবহার নিষিদ্ধ রাখাও ঠিক নয়। লেখক: সিনিয়র সাংবাদিক