প্রকাশিত: Tue, May 28, 2024 3:41 PM
আপডেট: Fri, May 2, 2025 2:35 PM

আগে মধ্যবিত্ত শ্রেণিই বাংলাদেশের সংস্কৃতি অঙ্গনে নেতৃত্ব দিয়েছিলো

শারফিন শাহ

ওয়ারফেজের ‘অবাক ভালোবাসা’ গানটি শোনার পর মধ্যবিত্ত শ্রেণির একটি অংশ বেশ অবাক হয়ে গেছেন। তারা গানের সঙ্গে শিল্পীদের প্রোফাইল ঘেঁটে বের করে ফেলেছেন কীভাবে বুয়েটের মতো এতো ভালো প্রতিষ্ঠান থেকে পড়ালেখা এবং দুর্দান্ত ফলাফল করার পরও এতো চমৎকার মিউজিশিয়ান হওয়া যায়। বিস্ময়ের কিছু নেই আসলে এই চিত্র দেখে। আগে মধ্যবিত্ত শ্রেণিই বাংলাদেশের সংস্কৃতি অঙ্গনে নেতৃত্ব দিয়েছে। জেমস, নকিব খান, আইয়ুব বাচ্চু, মাকসুদ, পার্থ বড়ুয়া সবাই মোটামুটি ভালো পারিবারিক অবস্থান থেকেই এসেছেন। সবাই হয়ত পড়াশোনা করেননি সেভাবে কিন্তু পড়া থেকে বিচ্যুত হননি। বাংলাদেশের পপ মিউজিক বিশ্বের যেকোনো পপ মিউজিকের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করার ক্ষমতা রাখে। শিক্ষা, রুচি আর সময়ের সঙ্গে লেগে থাকার ফলেই বাংলাদেশের পপ মিউজিক ইন্ডাস্ট্রিতে আজ অবধি কালো ছায়া পড়েনি। আর চলচ্চিত্র? একসময় জহির রায়হান, আলমগীর কবির, খান আতাউর রহমান, নারায়ণ ঘোষ মিতা চলচ্চিত্রের কাণ্ডারী ছিলেন। 

রাজ্জাক, কবরী, রহমান, শবনম, বুলবুল আহমেদ, আলমগীর, ববিতার মতো তারকাদের হাত ধরে বাংলাদেশের চলচ্চিত্র অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে যায়। এঁরাও কম শিক্ষিত ছিলেন না। অধিকাংশই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা করা। বুলবুল আহমেদ বিদেশি ব্যাংকের মোটা অঙ্কের চাকরি ছেড়েছিলেন চলচ্চিত্রের জন্য। আবুল হায়াতও ঢাকা ওয়াসার চাকরি ছেড়ে অভিনয়ে এসেছেন। কিন্তু এখন? চলচ্চিত্র কোমায় চলে গেছে। কারণ ৯০ দশক থেকেই চলচ্চিত্র মাস্তানদের আখড়া হয়ে গেছে। এখানে গুণী মানুষ নেই। চলচ্চিত্র এখন শিক্ষিত মধ্যবিত্তদের হাতে নেই। এজন্যই দুর্দশা। বিপোরীতে পপ মিউজিক তার আপন কক্ষপথ থেকে বিচ্যুত হয়নি। যদিও নতুন গান এখন আর খুব একটা হয় না। পুরাতন গানগুলোই মানুষের হৃদয়ে বাজে। তবু মনে হয় নগর বাউল, এলআরবি, ঢাকা, রেনেসাঁ, ফিডব্যাক, ব্ল্যাক, সোলস, আর্টসেল, ওয়ারফেজ, জলের গান যেসব গান উপহার দিয়েছে তা দিয়েই বাংলাদেশের পপ মিউজিক ইন্ডাস্ট্রি শত বছর রাজত্ব করতে পারবে। লেখক: গবেষক ও প্রাবন্ধিক