প্রকাশিত: Fri, Jan 6, 2023 4:21 PM
আপডেট: Sun, Jun 29, 2025 3:35 PM

আসুন, একটা বিষয় শিখি

ফড়িং ক্যামেলিয়া

আসুন আজকে একটা বিষয় শিখি। ধরুন আপনার খুব মন খারাপ, তাই একজনকে নক করে তার সময় চাইলেন। ২০ মিনিট আলাপ করলেন। ভেবে দেখুন, উনি আপনাকে তার জীবনের ২০ মিনিট দিয়েছেন। উনি হয়তো ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ২৩ ঘণ্টা ৪০ মিনিট কোনো কাজ করেন না, হয়তো উনার অঢেল সময়, তবুও উনি যে আপনাকে তার জীবনের ২০ মিনিট দিয়েছেন, এটা দেওয়া উনার কর্তব্য না। আপনি এই জন্য মোটেও ভাবতে পারবেন না যে, উনি তো ফ্রি-ই থাকেন, আমাকে সময় দিয়ে কী এমন মহান কাজ করেছেন। আপনি মোটেও ওই সময় পাওয়াটাকে আপনার অধিকার ভাবতে পারেন না।

ধরুন আপনার অনেক টাকার দরকার। একজন বিলিয়নিয়ার আপনাকে ১০০ টাকা দিয়েছেন। এই  টাকা দেওয়া কিন্তু ওনার দায়িত্ব না। উনি যে দিয়েছেন এটাই  চমৎকার বিষয়। উনি যদি আপনাকে জীবনে আর কখনো কোনো টাকা না দেয়, সেটাও অন্যায় হবে না। এতো টাকা  থাকার পরেও মাত্র ১০০ দিয়েছে বলে আপনি ক্ষোভ ঝাড়তে পারেন না। কারণ ওই ১০০ টাকা পাওয়া আপনার অধিকার না।  উনি যে আপনাকে আপনার বিপদে একটু সাহায্য করেছেন কিংবা চেষ্টা করেছেন, এই কারণটাই ওনার প্রতি আপনার আজীবন কৃতজ্ঞ হওয়ার জন্য যথেষ্ট। আমাদের একটা মাইন্ড সেট হলো, কারো যেহেতু অঢেল আছে,  সেহেতু সে আমাকে দিতে বাধ্য কিংবা দেবে এটাই স্বাভাবিক এবং আজীবন ওনাকে দিয়েই যেতে হবে। ওনার কাছ থেকে পাওয়াটা আমরা অধিকার হিসেবে দেখি! বিষয়টা কি আসলেই তাই? প্রশ্ন হলো, উনি আপনাকে কেন দেবেন? আপনি তার কী হন যে দেবে,  কিংবা তিনি কি আপনার জন্য কিছু করবেন বলে কোনো চুক্তি সাইন করেছেন? আপনি কি তার পরিবার, আত্মীয়? যদি না হন, তাহলে  তার সময়, তার টাকা, তার সম্পদ, কিংবা ইমোশন তিনি আপনাকে যদি এক তিল পরিমাণ দেন, সেটা তার চমৎকার আচরণের পরিচয় হবে, তিনি একজন হিরো।  কিন্তু না দিলে এটা তার কুৎসিত আচরণ না। তিনি ভিলেন নন।

কাউকে ‘টেকেন ফর গ্রান্টেড’ হিসেবে নেবেন না। এই দুনিয়াতে আপনার দায়িত্ব শুধু আপনার আর আপনার পরিবারের। যদি কেউ আপনার সাথে কোনো ধরনের চুক্তি না করে থাকে,  তাহলে তার কোনো দায় নেই আপনাকে সহায়তা করার। যদি সহায়তা করে থাকে, তবে এটা তার অনেক অনেক বড় মনের পরিচয়। আপনাকে তিনি যদি তার জীবনের ১ সেকেন্ড দিয়ে থাকে, তার পরিশ্রমের ১ পয়সা দিয়ে থাকে,  তার হাসি, তার আনন্দের এক ছটাক পরিমাণ ভাগ দেয়, তাহলে আপনি যতোক্ষণ পর্যন্ত তার ঋণশোধ করতে না পারছেন, ততোক্ষণ পর্যন্ত আপনি তার কাছে ঋণী হয়ে থাকবেন। তাকে আপনার ধন্যবাদে রাখবেন। আর ঋণ শোধ করতে পারলেও কখনো তার প্রতি অকৃতজ্ঞ হবেন না। কারণ মাথায় রাখুন, আপনার খারাপ সময়ে যে মানুষ আপনার জন্য একটুখানি করেছে, সেটার জন্য উনি আজীবন আপনার ধন্যবাদ পাওয়ার দাবিদার। আপনি কখনো তার কোনো অনিষ্ট চাইতে কিংবা করতে পারেন না। ভুলেও না । ফেসবুক থেকে