রিয়াদ হাসান: বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার রাজনীতি নিয়ে নাটক শুরু হয়েছে মন্তব্য করে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আরো বলেছেন, তিনি দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী। তার রাজনীতির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে দল। জাতীয়তাবাদী তাঁতীদলের ৪৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয় প্রেস ক্লাবে সোমবার আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

দুর্নীতির দুই মামলায় নির্বাহী আদেশে দণ্ড স্থগিত থাকায় জেলের বাইরে থাকা খালেদা জিয়া রাজনীতি করতে পারবেন কি না, তা নিয়ে দুই ধরনের বক্তব্য এসেছে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের মন্ত্রীদের কাছ থেকে। সে প্রসঙ্গ টেনে বিএনপির মহাসচিব বলেন, খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে আটক করে রাখা হয়েছে; তাকে গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে। এসব বক্তব্যের উদ্দেশ্য ভালো নয় বলে মনে করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, উদ্দেশ্যে একেবোরেই ভলো না। তাদের উদ্দেশ্যে খারাপ। তারা দেশের মানুষকে বিভ্রান্ত করতে চায়। খালেদা জিয়ার সাজা ছয় মাস মেয়াদে স্থগিত না করে তাকে নিঃশর্ত মুক্তি দেয়ার দাবি পুনর্ব্যক্ত করেন ফখরুল।

তিনি বলেন, সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে, এটিই একমাত্র লক্ষ্য। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে ১৭৩ দিনের হরতাল যখন করেছে তখন সংবিধানে ছিল না। সংকট সমাধানে খালেদা জিয়া তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা করেছিলেন। যতবার ভোট চুরি করেছে আওয়ামী লীগ, বিএনপি কখনও ভোট চুরি করেনি। আওয়ামী লীগের লজ্জা হওয়া উচিত বিএনপির ৪০ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে, তারপর মামলা নিয়ে বাণিজ্য করে।

মহাসচিব বলেন, আমাদের সবচেয়ে বড় দাবি এই সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। সংসদ ভেঙে দিতে হবে। নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে। সেই কমিশন নির্বাচনের ব্যবস্থা করবে। সে নির্বাচনে জনগণ তাদের ভোটের মাধ্যমে নতুন সরকার গঠন করবে।

আওয়ামী লীগের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে ভয় কেন? ভয় একটাই, সেটা আপনারা খুব ভালো করে জানেন, সেটা হলো নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হলে তাদের জামানত বাজেয়াপ্ত হবে।

দেশ খাদের কিনারায় চলে আসছে মন্তব্য করে ফখরুল বলেন, বিদ্যুৎ গ্যাস জ্বালানির দাম বেড়েছে, সেদিকে সরকারের খেয়াল নেই, তাদের দরকার শুধু টাকা। বিদ্যুৎ আমদানির নামে জনগণের কাছ থেকে টাকা নিয়ে বিদেশে পাচার করা হচ্ছে। মূল্যস্ফীতি, দুর্নীতি এমন পর্যায়ে চলে গেছে, কেউ বিনিয়োগ করছে না। এজন্য দায় সরকারের।

বিএনপির এই নেতা বলেন, জনগণের প্রতি এই সরকারের কোনো জবাবদিহিতা নেই। ২০১৪ সালে ১৫৪ জনকে বিনাভোটে সংসদ সদস্য বানিয়ে দিয়েছে। এরমধ্যে জাতীয় পার্টি বাম দলের লোক আছে। ভাগবাটোয়ারা নিয়ে বনিবনা না হওয়ায় এখন তাদের অনেকেই কথা বলছে, তারা আওয়ামী লীগের চেয়ে খারাপ।

সংগঠনের সভাপতি আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমানের সঞ্চালনায় এ সময় আরো বক্তব্য দেন বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, জিএম সিরাজ, ওলামা দলের সভাপতি অধ্যক্ষ মাওলানা শাহ মো. নেছারুল হক। সম্পাদনা: খালিদ আহমেদ