প্রকাশিত: Mon, Aug 5, 2024 12:31 AM
আপডেট: Tue, Sep 17, 2024 10:15 PM

[১]শেষ রক্তবিন্দু থাকা পর্যন্ত আমাদের লড়াই চলবে: নানক

এম এম লিংকন: [২] দলের নেতা-কর্মীদের প্রতি সাধারণ জনগণের জানমাল রক্ষায় নেতাকর্মীদের মাঠে থাকার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক আরও বলেন, কোটা আন্দোলনকে কেন্দ্র সন্ত্রাসীদের আস্ফালন আর সহ্য করা হবে না। 

[৩] চলমান সহিংসতার বর্ণনা করে নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, এখন আর ঘরে বসে থাকার সময় নেই ,বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসীরা মাঠে নেমে পড়েছে।  

[৪] রোববার রাজধানীর ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এই আহ্বান জানান তিনি। 

[৫]  দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র, সংবিধান ও জানমালের নিরাপত্তায় মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আজকে যারা সহিংসতা করছে তারা শিক্ষার্থী নয়, এরা বিএনপি-জামায়াত, ছাত্রদল শিবির ও জঙ্গিগোষ্ঠীর ক্যাডার বাহিনী। 

[৬] কেউ এই সন্ত্রাসীদের অপ্রপ্রচার ও গুজবে বিভ্রান্ত হবেন না বলেও নেতা-কর্মীদের সতর্ক করেন তিনি। 

[৭] সন্তানদের ঘরে রাখতে অভিভাবকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে পাটবস্ত্র মন্ত্রী নানক বলেন, আপনাদের সন্তানদের ঘরে রাখুন, আর যারা রাস্তায় অবস্থান নিয়েছেন তাদেরকে ঘরে ফিরে যেতে অনুরোধ করছি। 

[৮] আমরা ছাত্রসমাজকে আবারও বলতে চাই বর্তমান সরকার ছাত্রসমাজের যেকোনো দাবির প্রতি সহনশীল বলে জানান তিনি। 

[৯] তিনি আরও উল্লেখ করেন, ছাত্রদের সঙ্গে আলোচনার জন্য প্রধানমন্ত্রী গণভবনের দরজা উন্মুক্ত রেখেছেন।

[১০] বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা বিনষ্ট না করতে আন্দোলনকারীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে নানক বলেন রাষ্ট্রের যেকোনো সম্পদকে ধ্বংস করবেন না। 

[১১] আমরা সংঘাত নয়, শান্তি চাই বলে বলেন তিনি। সম্পাদনা: সমর চক্রবর্তী


[১]বিএসএমএমইউতে দুইশতাধিক গাড়িতে আগুন, লুট, চিকিৎসকদের ওপর হামলা

শাহীন খন্দকার: [২.১] রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে হামলা ও ভাঙচুর চালিয়েছে বিক্ষোভকারীরা। হাসপাতালের একাধিক সূত্রে জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছাত্ররা শাহবাগে ছাত্রলীগকে ধাওয়া করে, এসময়ে ধাওয়া খেয়ে ছাত্রলীগ হাসপাতালের ভেতরে  প্রবেশ করে।

[২.২] আন্দোলনকারীরা  এসময়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে থাকা রোগীসহ হাসপাতালের কর্মচারীদের আনা-নেওয়ার বাস, চিকিৎসক-কর্মকর্তাদের ব্যাক্তিগত প্রায় ১৫০ টি গাড়িসহ  ৫০টি হোন্ডা ভাঙচুরসহ আগুন দেয়।

[৩.১] হাসপাতাল সূত্র আরও জানিয়েছে, রোগীদের রেকর্ড সংরক্ষণশালাসহ ব্যাপক ভাঙচুর করেছে কোটা সংস্কার আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা। তারা হাসপাতালের টিকিট কাউন্টারের টাকা লুট করেছে! চিকিৎসকদের ওপর হামলা চালিয়েছে, এতে বেশ কয়েকজন চিকিৎসকসহ রোগীরা আহত হয়েছেন।

[৩.২] সেই সঙ্গে বিএসএমএমইউতে আগুন দেয়াসহ অবরুদ্ধ করে রাখা হয় চিকিৎসকসহ স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কমর্চারীদের। 

[৩.৩] হাসপাতালের একাধিক চিকিৎসক ও কর্মকর্তারা জানিয়েছে, পুরান ঢাকার দিক থেকে আসা মিছিল থেকে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ধাওয়া করে।এসময়ে ধাওয়া খেয়ে ছাত্রলীগ হাসপাতালের ভেতরে  প্রবেশ করে।

[৩.৪] এসময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ)ভেতর থেকে পিছনের গেট দিয়ে ছাত্রলীগকর্মীরা বাহির হয়ে  যাওয়া নিশ্চিত করেই আন্দোলনকারীরা  গাড়ি ভাঙচুর ও আগুন দেয় হাসপাতালের ভিতরে থাকা অ্যাম্বুলেন্স, প্রাইভেটকার, মোটরসাইকেল । 

 [৪] অবরুদ্ধ চিকিৎসকসহ স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্টরা হাসপাতালের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, রবিবার বেলা ১১টার দিকে রাজধানীর শাহবাগে এ ঘটনা ঘটে। সম্পাদনা: সমর চক্রবর্তী




[১]বিএনপি নেতাকর্মীদের শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান মির্জা ফখরুলের

রিয়াদ হাসান: [২] বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বিএনপি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তথা আপামর জনসাধারণের উত্থাপিত একদফা ঘোষণাপত্রের সাথে সম্পূর্ণ একাত্মতা ঘোষণা করছে। বিএনপি জাতির এই চরম ক্রান্তি লগ্নে দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থে গণতন্ত্র প্রিয় আপামর জনসাধারণ এবং বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের সর্বস্তরের নেতাকর্মী, সমর্থক, শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি রাজপথে নেমে এসে ছাত্র জনতার সাথে একাত্ম হয়ে গণহত্যাকারী স্বৈরাচারী সরকারের পতন ত্বরান্বিত করতে অসহযোগ আন্দোলন সফল করার আহ্বান জানাচ্ছে। শত শত শহীদের রক্ত বৃথা যেতে পারে না।

[৩] রোববার বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ আহ্বান জানান।

[৪] মির্জা ফখরুল বলেন, সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে ফ্যাসিস্ট সরকারের হত্যাযজ্ঞ ও ধ্বংসযজ্ঞ আড়াল করতেই তথাকথিত তৃতীয় পক্ষ আবিষ্কারের জন্য সরকারের বিরামহীন এই প্রচেষ্টা চলছে, যা জনসাধারণ ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে। সরকার প্রথম থেকেই ছাত্র-ছাত্রীদের যৌক্তিক দাবি অস্বীকার করে দমন করতে প্রচেষ্টা চালিয়ে দেশকে ধ্বংস ও নৈরাজ্যের দিকে নিয়ে গেছে ছাত্র আন্দোলন বলপূর্বক দমন করতে রাষ্ট্র যন্ত্রকে ব্যবহার করে চলছে নজিরবিহীন তৎপরতা। দেশে আজ অস্বাভাবিক পরিস্থিতি বিরাজ করছে। জনগণের ওপর যুদ্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। চারিদিকে শুধু অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতা। এর সম্পূর্ণ দায় রাষ্ট্র পরিচালনায় ব্যর্থ আওয়ামী লীগ সরকারের।

[৫] তিনি বলেন, শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত সকল জনপদ ছাত্র জনতার বিক্ষোভ বিদ্রোহে মুখরিত। সমগ্র দেশের গণতন্ত্রকামী মানুষ, সুশীল সমাজ, শিক্ষক, অভিভাবক, সাংবাদিক, আইনজীবী, লেখক, শিল্পী, সাহিত্যিক, শ্রমজীবী মানুষসহ ধর্ম-বর্ণ, দল-মত নির্বিশেষে সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে ছাত্র জনতার আন্দোলনে সমর্থন দিয়ে শামিল হয়ে গণজাগরণের সৃষ্টি করেছে। গড়ে উঠেছে অভাবনীয় জাতীয় ঐক্য, জনগণের ঐক্য। সমগ্র দেশ আজ গণহত্যাকারী সরকারের বিরুদ্ধে এক একাট্টা। গ্রাম ও শহরের ঘরে ঘরে আর্তনাদের সাথে উচ্চারিত হচ্ছে খুনি সরকারের পদত্যাগের দাবি।

[৬] বিএনপি মহাসচিব বলেন, শনিবার শহীদ মিনারে জনতার উত্তাল সমুদ্রে সামনে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়কারীরা এই অবৈধ সরকারের প্রধান শেখ হাসিনার পদত্যাগ দাবি করেছে এবং অবিলম্বে নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের দাবি জানিয়েছে। দেশের সকল মানুষ এই দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়েছে। আমরা ২০১২ সাল থেকে এই সরকারের পদত্যাগ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দাবি করে আসছি। অবৈধ সরকার ক্ষমতায় চিরস্থায়ী করার লক্ষ্যে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন ব্যবস্থা বাতিল করে চিরস্থায়ীভাবে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করে গণতন্ত্র ধ্বংস করেছে।

[৭] সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, সেলিমা রহমান, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক জেড রিয়াজ উদ্দিন খান নসু এবং সহদপ্তর সম্পাদক সাইফুল ইসলাম টিপু। সম্পাদনা: কামরুজ্জামান